আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইলিয়াস আলি বিষয়ক অগুরুত্বপূর্ণ ব্লগ

আমি একজন অতিসাধারণ মানুষ, স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি। স্বপ্ন আছে বলেই এখনও বেঁচে আছি এমন একটি বিষয় নিয়ে লেখবার কোন ইচ্ছেই ছিল না। মেনেই নিয়ে ছিলাম এই দায়িত্ব তাঁরা পালন করবেন যারা এতদিন ধরে বিভিন্ন মতে বিভক্ত হয়ে কখনওবা বিভক্ত করে নিষ্ঠার সাথে করে গেছেন। কিন্তু সময় অনেক কিছুই বদলে দেয়, এমনই এক পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আজকের লেখাটি লিখছি: মূল ঘটনা: বিএনপি'র সাবেক সংসদ সদস্য ও বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক এম. ইলিয়াস আলি তার ব্যক্তিগত ড্রাইভার সহ গত ১৭ এপ্রিল থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিরোধিদল সরকারি দলকে দায়ী করেছে এবং সরকারি দল যথারীতি অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা অভিযোগ করেছে।

সরকার উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন তদন্ত কমিশন গঠন করেছে আর বিরোধিদল ইতোমধ্যে ৫দিন হরতাল দিয়েছে। এসবই আমাদের জানা, আসুন জানা বিষয়গুলোকে আর একবার যাচাই করা যাক; আপাতত ধেরে নিলাম ইলিয়াস আলিকে সরকার গুম করেছে, গত দু'সপ্তাহ ধরে আমি বারবার যে প্রশ্নটি সর্বত্র তুলে ধরবার চেষ্টা করেছি তা হলো- সরকারের নিপীড়ন মূলক আচরনের শিকার এমন একজন নেতা কেন হবেন যিনি ছাত্রাবস্থায় জোড়া খুনের আসামি। সারা বাংলাদেশে তো দূরের কথা খোদ সিলেটেই তার নিজের দলে তার অবস্থান প্রশ্নাতীত নয়। তাহলে এমন একজন নেতাকে গুম করে সরকার বিরোধিদলকে কেমন ভয় দেখাতে চাইছে আর জনগনকেই বা কি বার্তা দিচ্ছে? ঘটনার শুরু থেকে এ পর্যন্ত সরকারের উপরের মহল থেকে সমন্বয়হীন বক্তব্য দিয়ে এবং উদ্ধার প্রক্রিয়া তরান্বিত না করায় জনগনের একটা বড় অংশ বিশ্বাস করতে শুরু করেছে যে এই ঘটনায় সরকার হয়তো সত্যিই জড়িত। সরকারের পাল্টা অভিযোগ অনুযায়ী যদি বিরোধিদল ইলিয়াস আলিকে গুম করে থাকে তাহলে সরকারের কি এতটুকু ক্ষমতা নেই যে তারা বিরোধিদলের চক্রান্ত ফাঁস করে দেবে।

ইলিয়াস আলি না হয়ে এটি যদি কোন মারাত্মক বোমা হত এবং বিএনপি বা কোন চরমপন্থি দল তাদের গোপন আস্তানায় সেটিকে লুকিয়ে রাখত কোন একটি জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিষ্ফোরন ঘটিয়ে সরকারকে বিপাকে ফেলে দেবার জন্য তাহলে এমনটি ভাবা কি খুব অন্যায় হবে যে আমাদের সরকার যথাসময়ে সেই বোমাটি বা সেই চরমপন্থি দলকে ধরতে ব্যর্থই হবে? ২. আবার কিছুক্ষণের জন্য হলেও ধরে নেই ইলিয়াস আলিকে বিএনপিই গুম করেছে। তাহলেও আমার আগের প্রশ্নটি বলবৎ থাকছে। সন্ত্রাসের মদদপুষ্ট, বিতর্কিত এবং সবচেয়ে বড় কথা সংস্কারপন্থি এমন একজন নেতাকে ব্যবহার করে সরকারকে বিপাকে ফেলার মত ধারনা বিএনপি কোথায় পেল? ইলিয়াস আলির যে ইমেজ তাতে করে তার গুম হওয়ার পরে আনন্দ মিছিল হলেও অবাক হতাম না, তেমন একজন নেতাকে ব্যবহার করে বিএনপি সরকারের দের বছর মেয়াদ থাকতেই সরকার পতনের স্বপ্ন দেখবে এমনটি কোন ভাবেই মানা যায় না। আবার শুরু থেকেই বিএনিপি অভিযোগ করে আসছে সরকারই তাকে গুম করেছে। আমার সেই একই প্রশ্ন সরকারকে কেন ইলিয়াস আলিকেই গুম করতে হবে? তারা তৃতীয় কোন পক্ষের কাজ মনে না করে এত দৃঢ়তার সাথে কিভাবে দাবি করছে যে সরকারই এ কাজ করেছে, তাহলে কি ধরে নেব যে বিএনপি জানে ইলিয়াস আলিকে কে বা কারা গুম করেছে? তাহলে তারা তা প্রকাশ করছেনা কেন? বিএনপিই এমনটি ভাববার সুযোগ করে দিচ্ছে যে এ ঘটনায় তারা জড়িত রয়েছে।

৩. এবার ঘটনা দুটি সূত্র পরস্পর মেলাই: প্রথমত- কাজটি সরকার বা সরকারের কোন একটি অংশ করেছে; এমতাবস্থায় ইলিয়াস আলি মুক্ত হলে সরকার সমূহ বিপদে পরবে তাই একটাই সমাধান, যে কোন মূল্যেই ইলিয়াস আলিকে আর ফিরতে দেয়া যাবে না! দ্বিতীয়ত- বিরোধিদল বা তার কোন একটি অংশ কাজটি করেছে; এখন ইলিয়াস আলি ফিরে এলে তাদের ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়ে যাবে এবং সরকারকে বিপদে ফেলার এমন মোক্ষম সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাবে। অতএব এইসব সুবিধা ধরে রাখা আর অসুবিধা দূরে রাখার একটাই উপায়, ইলিয়াস আলি'র না ফেরা!! ঘটনাচক্রে আমার কেন জানি মনে হচ্ছে কাজটি যারাই করুক না কেন ফলাফল একই- ইলিয়াস আলি আর ফিরবেন না বা তাকে আর ফিরতে দেয়া হবে না। শেষ ইলিয়াস আলি সত্যিই আর ফিরলেন না। ক্যালেন্ডারে পাতার পর পাতা চলে যেতে থাকলো তবু ইলিয়াস আলি আর ফিরে এলো না। বিরোধিদল নতুন কোন ইস্যুতে হরতাল ডাকছে, সরকার নতুনভাবে বিরোধিদলকে শায়েস্তা করার পথ খুঁজছে।

কোথায় কি হয়েছে, সবকিছু ঠিক আগের মতোই আছে শুধু বদলে গেছে ইলিয়াস আলির স্ত্রী ও সন্তানদের জীবন। আমি রাজনীতিবিদ ইলিয়াস আলির কথা বলছি না। আমি সেই ইলিয়াস আলির কথা বলছি যিনি একজন স্বামী এবং একজন বাবা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাবা হারানো সন্তানের কষ্ট আপনার চেয়ে ভালো কেউ বুঝবে না, মাননীয় বিরোধিদলীয় নেতা স্বামী হারানো স্ত্রীর দু্ঃখ আপনার চেয়ে ভালো কেউ বুঝবে না। আপনাদের হত্যা আর গুমের রাজনীতি থেকে আজ না হয় একজন বাবাকে ছেড়েই দিলেন।

আপনাদের দায়িত্বহীন যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা থেকে একজন স্বামীকে এবারের জন্য মুক্তি দিন। আপনারাও ভালো থাকেন আমরাও ভালো থাকি। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.