হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির, উপমহাদেশের অন্যতম ইসলামি শিক্ষাকেন্দ্র দারুল উলুম হাটহাজারীর মহাপরিচালক, বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড (বেফাক) এবং বাংলাদেশ সর্বোচ্চ ওলামা পরিষদের সভাপতি শায়খুল হাদিস আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেছেন, ব্লাসফেমি আইন প্রণয়নের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে সরকার এ দেশের কোটি কোটি মুসলমানের মনের ভাষা বুঝতে ব্যর্থ হচ্ছে। সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মনের ভাষা বুঝতে না পারলে চরম মূল্য দিতে হবে। তা ছাড়া হেফাজতে ইসলাম ঘোষিত ১৩ দফা দাবিকে মধ্যযুগীয় বলার মানে পুরো ইসলামকে অস্বীকার করার মতো। তিনি বলেন, ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থই হলো ধর্মহীনতা। ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে জাতিকে নাস্তিক বানানোর ষড়যন্ত্র চলছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
নিজেদের নিরাপত্তা এবং শান্তির জন্য পর্দাসহকারে নারীদের কর্মক্ষেত্রে বা ঘর থেকে বের হতে কোনো বাধা নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে আলোচিত নাম হেফাজতে ইসলাম ও আল্লামা শাহ আহমদ শফী। গত ৬ এপ্রিল ১৩ দফা দাবিতে ঢাকা অভিমুখে লংমার্চ এবং শাপলা চত্বরে দেশের ইতিহাসে এযাবৎকালের রেকর্ডসংখ্যক লোক সমাগমে মহাসমাবেশ করে নতুন এক শক্তির রাহবার হিসেবে তিনি আবির্ভূত হন। ২৭ বছর ধরে হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করে আসা বর্ষীয়ান আলেমে দ্বীন আল্লামা শাহ আহমদ শফীর সাথে মঙ্গলবার সকালে তার দফতরে কথা হয়। এ সময় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী এবং হাটহাজারী মাদরাসার মুখপত্র মাসিক মুঈনুল ইসলাম-এর নির্বাহী সম্পাদক মুনীর আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
দেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক নয়া দিগন্তকে দেয়া সাক্ষাৎকারটি তাজাখবর ডটকমের পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো। নারী-পুরুষের দৃষ্টিকটূ অবাধ মেলামেশা বন্ধ করার দাবির অর্থ এই নয় যে, নারীরা কর্মক্ষেত্রে যেতে বা ঘর থেকে বের হতে পারবে না। আমাদের উদ্দেশ্য হলো নগ্নতা ও বেহায়াপনা বন্ধ করা। আমরা তো নারীর পক্ষেই বলছি। ইসলাম নারীর নিরাপত্তা এবং শান্তির জন্য হিজাব প্রথা বাধ্যতামূলক করেছে।
কাজেই পর্দা সহকারে নারীরা কর্মক্ষেত্রে বা ঘর থেকে বের হতে তো কোনো বাধা নেই। ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো ধর্মে তো নারীর ন্যায্য অধিকারই নেই। শাহবাগে যেভাবে নারী-পুরুষের এক সাথে রাত্রিযাপন, অবস্থান এবং বেহায়াপনা হয়েছে, তা একটি জাতির জন্য ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনবে। কাজেই আমাদের কথা পরিষ্কার যে, হিজাব বা শালীনতার সাথে নারীদের কর্মক্ষেত্রে যেতে কোনো বাধা নেই। নারী নীতির কুরআন-সুন্নাহবিরোধী ধারাগুলোই আমরা সংশোধনের কথা বলেছি।
তা ছাড়া দেশে ভাস্কর্যের নামে আবক্ষ মানব বা জীবজন্তুর মূর্তি তৈরি এবং ফুল দিয়ে সেসবকে সম্মান প্রদর্শনের রেওয়াজ যে হারে শুরু হয়েছে, তা ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে কখনও কাম্য হতে পারে না। ইসলামে মূর্তি তৈরি ও সম্মান প্রদর্শনকে স্পষ্টভাবে শিরক ঘোষণা করা হয়েছে। তবে আমরা কখনও প্রাণহীন শিল্পকর্মের বিরোধী নই। মোমবাতি প্রজ্বলন অগ্নিপূজক ও পশ্চিমাদের সংস্কৃতি। এটা এদেশে নতুন করে প্রচলনের জোর চেষ্টা চলছে।
কাজেই আমাদের দাবি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো বা বিরোধিতার সুযোগ নেই। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।