অবৈধ অনুপ্রবেশকারী নিষেধ। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। আমার খুব সম্মানিত রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মধ্যে একজন,পাশাপাশি মন্ত্রীসভার সব বলদ মন্ত্রীদের মাঝে কেন যেন তার সবকিছু একটু ভিন্ন। কারন এই সরকারের আমলে তিনি তার বিভিন্ন বক্তব্যগুলোতে বেশিরভাগ সময় সাধারনত রাজনৈতিক কথাবার্তা প্রাধান্য দেওয়ার চেয়ে তার মন্ত্রনালয় ও অন্যান্য শিক্ষা সম্পর্কিত কথাবার্তা বলেছেন, যেটা একজন 'মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী'র সত্যিকারের যোগ্যতা বহন করে। পাশাপাশি 'যুদ্ধাপরাধী' ট্যাগ, যেটা না বললে যেন অন্যান্য 'মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী' দের যেন মন্ত্রিত্বই থাকবেনা , তিনি তার কথাবার্তায় এইটা মোটামুটি সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে মিলিয়ে বলার চেষ্টা করেন, যা আসলেই ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য।
এবার আসি মূল কথায়। সরকার এস.এস.সি ও সমমানের পরীক্ষার জন্য ফেব্রুয়ারী মাস এবং এইচ.এস.সি ও সমমানের পরীক্ষার জন্য এপ্রিল মাসকে স্থায়ীভাবে নির্ধারিত করে দিয়েছে, যেটা আসলেই প্রশংসার দাবি রাখে। এতে ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য একটা নির্দিষ্ট রুটিন মেনে লক্ষ্যর দিকে আগাতে পারে। যা তাদের ফলাফলের উপর একটা বিশাল প্রভাব রাখে।
আবার একটু ভিন্নভাবে হিসেব করলে দেখা যায় ফেব্রুয়ারী হল বাংলা ফাল্গুনের শুরুর মাস, আর এপ্রিল হল বৈশাখের শুরুর মাস।
ফলে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এপ্রিল মাস পুরোদমে বোরো মৌসুমের মাস। আর বোরো ফসল আমাদের জাতীয় খাদ্যভাণ্ডারের একটা বিশাল উৎপাদক। বোরো ফসল থেকে প্রাপ্ত ধানের চাল আমাদের অর্থনীতিতেও বিশাল চালিকাশক্তি। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বোরো আমাদের জাতীয় জীবনে প্রভাব বিস্তর। আবার একটা সমস্যা হল এই সময় নদী নালা, খাল-বিলে পানির পরিমান কম থাকে, তাই এই সময় চাষের প্রয়োজনীয় পানি বিদ্যুৎচালিত ইঞ্জিনের মাধ্যমে বিভিন্ন উৎস থেকে এনে জমিনে চাষাবাদের জন্য ব্যবহৃত হয়।
তাই বোরো মৌসুমে চাষের পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য প্রচুর লোডশেডিং করতে হয়।
আবার প্রতিবছর যারা এস.এস.সি ও এইচ.এস.সি. পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীরাও আমাদের জাতীয় জীবনের একটি বিশাল সম্পদ। এদের মাঝেই লুকিয়ে আছে আগামীর সব সম্ভাবনা। তাই তাদের দিকটা আমরা বিবেচনা না করলে হবে না।
এবার আমার মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর কাছে কয়েকটা প্রশ্নঃ
১) যেহেতু বোরো উৎপাদন মৌসুম আর এস.এস.সি ও এইচ.এস.সি. পরীক্ষা একই সময়ে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হচ্ছে , তাই কৃষক ও ছাত্রছাত্রী সকলের অধিকার বিবেচনা করে দুটি বিষয়ের মাঝে কি আপনি কোন সমন্বয় করতে পাচ্ছেননা?
২) বোরো চাষ মৌসুমের মাস ব্যতীত সম্ভব নয়।
আবার বোরো ছাড়া আমাদের অর্থনীতিও পঙ্গু। কিন্তু এস.এস.সি ও এইচ.এস.সি. পরীক্ষা বছরের যেকোনো সুবিধাজনক মাসে নেওয়া সম্ভব। এতে কৃষক ও ছাত্রছাত্রী উভয়পক্ষের উপর লোডশেডিংএর চাপটা একই সময়ে পড়বে না।
৩) এস.এস.সি ও এইচ.এস.সি.র প্রতিটি পরীক্ষা একজন ছাত্র বা ছাত্রীর জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ মর্ম বহন করে,কারন এই পরীক্ষাগুলো স্কুলের মিড টার্ম পরীক্ষা নয় যে ফলাফল খারাপ তারা মনকে সান্ত্বনা দিবে ' পরের বার ভালো করবো'। তাই তাদের যেকোনো পরিস্থিতিকে মেনে নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে হয়।
গ্রীষ্মকালে এমনিতেই যখন মানুষের গরম, লোডশেডিং,মশার উপদ্রপ, পানি সঙ্কট সবকিছু মিলিয়ে একটা দুর্বিষহ জীবনযাপন করে তখন পরীক্ষা তাদের জীবনে একটা বিশাল পাহাড় হয়ে দাড়ায়। তার উপর গরমের ভিতর অনেক সময় একটানা তিনঘণ্টা পরীক্ষাকেন্দ্রে বিদ্যুৎবিহীনভাবে পরীক্ষা দিতে হয়,যা পরোক্ষভাবে তাদের পরীক্ষার ফলাফলে বিরূপ প্রভাব ফেলে। এই ফলাফল খারাপের দায়ভার কি আপনি নিবেন?
অতএব মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর কাছে একটাই অনুরোধ প্লিজ আগামী এস.এস.সি ও এইচ.এস.সি. পরীক্ষার সময়গুলো জাতীয় জীবনের সব পরিস্থিতির সাথে মিলিয়ে নির্ধারণ করবেন। এতে কোমলমতি ছাত্রছাত্রীর পাশাপাশি দেশ ও জাতির উপকার হবে , অপকার নয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।