"আমায় দিয়ে কারুর ক্ষতি হয়না যেন দূনিয়ায়
জামায়াতে ইসলামীর মুখপত্র দৈনিক সংগ্রামের প্রকাশক ও সম্পাদক আবুল আসাদ এবং পত্রিকাটির ফেনী প্রতিনিধি এ বি এম আবদুর রহীমকে আদালত অবমাননার দায়ে কারাদণ্ড ও জরিমানা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের এই ট্রাইব্যুনাল ‘মামলার কার্যক্রম চলাকালীন পর্যন্ত’ তাঁদের কারাদণ্ড দেন। যা ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শেষ হয়। এ ছাড়া তাঁদের প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
জরিমানার এ অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিয়ে সেই রসিদ ১৩ মে ট্রাইব্যুনালে জমা দিতে বলা হয়েছে।
২ এপ্রিল দৈনিক সংগ্রামের তৃতীয় পাতায় ‘পুলিশকে দেয়া জবানবন্দি সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ফেনীর আইনজীবীগণ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ প্রতিবেদনটির কিছু অংশ ট্রাইব্যুনালের জন্য অবমাননাজনক এবং এই অংশ আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩-এর ১১(৪) ধারা লঙ্ঘন করে বলে ট্রাইব্যুনালের মনে হয়েছে।
প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ‘জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ মামলায় পুলিশের কাছে দেয়া মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্যকে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ফেনী জেলার বিশিষ্ট আইনজীবীগণ। ...এই ধরনের বক্তব্য সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণের মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল একটি দলীয় ট্রাইব্যুনাল।
এই ট্রাইব্যুনালে কোনো মানুষ ন্যায় বিচার পাবে না। তাই অবিলম্বে ১৫ সাক্ষীর দেয়া বক্তব্য সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ না করে তা প্রত্যাখ্যান এবং দলীয় ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে নিরপরাধ জামায়াত নেতৃবৃন্দকে অবিলম্বে মুক্তিদানের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান তারা। ’
এর পরিপ্রেক্ষিতে পত্রিকাটির সম্পাদক ও ফেনী সংবাদদাতা এবং ফেনীর ১২ আইনজীবী সফিউল আলম, নুরুল ইসলাম বাচ্চু, আশ্রাফুল হক ভূঞা, মাঈনউদ্দিন, মোতাছাম বিল্লাহ, গোলাম সরোয়ার, বেলায়েত হোসেন, কামাল উদ্দিন, আমিনুল হক ভুট্টো, এমদাদুল হক, আবদুল কাইয়ুম, মো. হাসানকে ১৬ এপ্রিল ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে বলেন এবং কেন তাঁদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না—তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন।
সংগ্রামের সম্পাদক, পত্রিকাটির ফেনী সংবাদদাতা এবং ফেনী আইনজীবী সমিতির ১০ আইনজীবী ১৬ এপ্রিল ট্রাইব্যুনালে হাজির হেয় নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
তাঁদের আইনজীবী সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন দাবি করেন, ফেনী আইনজীবী সমিতির কোনো সদস্য ওই ধরনের বিবৃতি দেননি।
সংগ্রামের ফেনী প্রতিনিধিও ওই ধরনের কোনো প্রতিবেদন কার্যালয়ে পাঠাননি। তবে তাঁর ই-মেইল ঠিকানা থেকে ওই প্রতিবেদনটি সংগ্রাম কার্যালয়ে যাওয়ায় সেটি ছাপা হয়েছে। ভুলক্রমে ওই প্রতিবেদনটি ছাপা হয়েছে। এ জন্য তিনি সংগ্রাম ও আইনজীবীদের পক্ষে ট্রাইব্যুনালের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চান। তিনি বলেন, প্রতিবেদনে দুই আইনজীবীর নাম ছাপা হয়েছে যারা ফেনী আইনজীবী সমিতির সদস্য নন।
একপর্যায়ে প্রতিবেদনের বক্তব্যের দিকে ইঙ্গিত করে ট্রাইব্যুনাল সংগ্রাম সম্পাদকের উদ্দেশে বলেন—ভুলক্রমে ওই রকম একটি প্রতিবেদন প্রকাশ তিনি কীভাবে অনুমোদন করলেন। জয়নুল আবেদীন বলেন, আমরা আত্মপক্ষ সমর্থন করতে আসিনি। এই ভুলের জন্য আমরা নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করছি। ভবিষ্যতে এ ধরনের ভুল আর হবে না। শুনানি শেষে আদেশের জন্য ট্রাইব্যুনাল ২৬ এপ্রিল আদেশের দিন ধার্য করেন।
শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল ওই ১২ আইনজীবীকে খালাস করে দেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।