আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার বন্ধু শাহ মোহাম্মদ ফজলে এলাহী

ভাতের মজা কিছুতেই পাই না। নামটা শুনতে খান্দানী খান্দানী একটা ভাব চলে আসে। শাহ বংশ ত আসলে খান্দানী বংশ ই। যেমন নামে খান্দানী তেমন দেখতেও মাশাল্লাহ। নাদুস নুদুস শরীর গতর আর মায়াবী চেহারা! শিক্ষিত লোকের ছেলে।

ক্লাস সিক্সে এলাহীর সাথে আমার প্রথম দেখা। প্রথম দেখায় যাকে আমার ভাল লেগে যায় পরে কিভাবে কিভাবে জানি তার সাথে খাতির জমে উঠে। আর যাকে প্রথম দেখায় ই মনে ধরে না তাদের সাথে কোন দিনও বনিবনা হয় না। আজব না? বড়ই আজব ব্যাপার সেপার। যতটুকু মনে পড়ে এলাহী বিরাটাকার হলেও ভয় পেত প্রচুর।

ক্লাসের প্রায় ছেলেকেই ও ভয় পেত। ভয় করত কি অভিনয় করত কে জানে!!! ওর সঙ্গে দুই প্রহরী ছিল কৌশিক আর... এই যা নামটা মনে পড়ছে না আসলে ওরা প্রহরী ছিল না। ওরাও আমাদের সাথেই পড়ত। এলাহী ছিল চা বাগানের ম্যানেজার সাহেবের ছেলে আর কৌশিকরা ছিল চা শ্রমিকদের ছেলে পুলে। তাই ওরা শাহীকে একটু সমীহ করত আর চোখে চোখে রাখত।

এই বিষয়টা আমি তখন বুঝিনি আর জানিও নি। এলাহী ওদের সাথে ঠিক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর মতই চলাফেরা করত। কোন দিনও সেটা বুঝতে দেয়নি। এলাহীর মনটা ছিল ওর শরীরের মতই হাহাহাহাহা... দয়া মায়ায় ভরপুর। আমি এলাহী কে ফজলি আম বলে অনেক খেপাতাম।

হেহেহেহে...... ও মনে হয় মনে মনে অনেক দুঃখ পেত। ও আমাকে একটা অভিশাপ দিয়েছিল সেদিন। আমার এখনো মনে আছে। আশা করি ওর অভিশাপটা আমার উপর লাগবে না। হেহেহেহেহে... এলাহী, তোমাকে দুষ্টুমির ছলে কষ্ঠ দেয়ায় আজ আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।

আশা করি ছেলেবেলার সহজ সরল নির্মল আনন্দের কথা বিবেচনা করে তুমি আমাকে মাফ করে দিবে। তোমার বিশাল মনের খবর আমি রাখি বন্ধু! তুমি নিশ্চয়ই সেই সব কথা ভুলে বসে আছ। আমি আজ আবার মনে করিয়ে দিলাম। হেহেহেহেহে বন্ধু আমার নিজের পছন্দে বিয়ে করে সুখে শান্তিতেই আছে। কিছুদিন আগে ভাবির সাথে পরিচয় হল, ভার্চুয়ালি।

গেল ঈদে ফোনে আলাপও হয়েছে। ভাবিকে একটা কথা সেদিন বলা হয়নি। আজ বলছি। মজার ঘটনা। আমাদের স্কুল জীবনের ঘটনা।

আমরা তখন ক্লাস সেভেনে পড়ি মনে হয়। দ্বিতীয় সাময়িকী পরীক্ষার খাতা দেয়া হয়েছিল। ইংরেজী না বাংলা দ্বিতীয় পত্র হবে। সবাই খুব কম নাম্বার পায় দুই একজন ছাড়া। তো নিয়ম ছিল সেই খাতা বাসায় নিতে হবে এবং গার্ডিয়ানকে দেখিয়ে খাতার উপরে তাদের সই আনতে হবে।

এলাহী মনে খুব খারাপ নাম্বার পেয়েছিল। যা ওর আব্বা আম্মা কেউ ই আশা করেন নি। ও ত ভয়ে একদম কাঁচুমাঁচু হয়ে গেল। কি করে কম নাম্বার পাওয়া খাতা আব্বা আম্মাকে দেখাবে! ভয়ে ভয়ে খাতাটাকে বাসায় নিয়ে গেল। যত্ন করে লুকিয়ে রাখল।

সুযোগ বুঝে একটা কাল পলিথিনে মুড়িয়ে পরীক্ষার খাতাটাকে ওদের বাগানে মাটির নিচে অনেক অনেক সাহস সঞ্চয় করে পুঁতে ফেলল!!!! এবং তার উপর একটা গাছ লাগিয়ে দিল!! হাহাহাহাহাহাহাহাহা...... কি বুদ্ধি ওর। আল্লাহ! হাহাহাহাহাহা... আমি ত শুনে হাসতে হাসতেই খুন!!!!! ভাবি, সাবধানে থাকবেন কিন্তু!!! হাহাহাহাহাহাহাহা...... ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.