পলানটুকঃ
একজন ওয়ালে চোখ চাইপ্পা এক থেইক্কা তিরিশ গুনতো আর সবাই পলাইতো। গুনা শেষ হইলে খোঁজাখুঁজি। একদিন দুই বন্ধু মিলে প্রতিপক্ষরে হারানোর জন্য স্কুল বাউন্ডারীর বাইরে যায়া পলাইছিলাম। এদিকে ঘন্টা মাইরা ক্লাশ শুরু। সাহস কইরা আর ক্লাসে আসিনাই।
পরেরদিন স্কুল পালানোর অপরাধে সে কি ডলাটা খাইলাম। আর এই সর্বনাশা পলানটুক খেলি নাই।
পিঠফুডান্তীঃ
ভাইরে নাম লইতেই পিঠটা জ্বলতাছে। অনেকে এটাকে বোম্বাস্টিং ও ডাকে। মারাত্মক ডেঞ্জারাস খেলা এটা।
স্কুলের টিফিন টাইমে খেলতাম স্কুলে। টেনিস বলের খেলা। যার কাছে বল থাকতো সে অন্যদের পিঠ সই করে ধাম করে বল মারতো। যাকে মারতো সে যদি বল টা কালেক্ট করতে পারতো তাইলে প্রতিশোধ নেয়ার চান্স পাইতো। মিস করলে দেখা যাইতো আরেকজন তারে টার্গেট করেছে।
এই খেলার গোপন টিপস হইল সন্ধি করে খেলা। দোস্ত আমি তোরে মারুম না তুই ও আমারে মারিস না। কিন্তু আমি চুক্তি করলেও ম্যাক্সিমাম টাইমেই ক্রস ফায়ারের নির্মম শিকার হইতাম। আরেকজনরে মারতে গেলেও আমার গায়েই লাগতো। তাই এখনো পিঠ জ্বলে।
(এই খেলার ছবি তোলা সম্ভব হয়নাই। কারো কাছে থাকলে পিলিজ দিয়েন। এখানে আপলোডামু ক্রেডিট সহ। )
কলম কলমঃ
ক্লাস রুমের খেলা। বেঞ্চ বা টেবিলের চারপাশে কয়েকজন বন্ধু জড়ো হয়ে প্রত্যেকে একটা করে কলম রাখতো আর পালাক্রমে টোকা দিয়ে দিয়ে অন্যের কলম ফেলার চেস্টা করতো।
যারটা শেষ পর্যন্ত টেবিলে থাকবে সেই জয়ী।
এই খেলাটার জন্য অনেক গবেষনা করতাম। ক্লাস ফাইভ সিক্সে থাকতেই মোমেন্টাম, ফ্রিকশন এবং বলের সঠিক প্রয়োগের উপর ব্যাপক বাস্তব জ্ঞান দিয়েছিল এই খেলা। খেলায় জিতার জন্য ভারি কলম নির্বাচন,ঘর্ষন কমানোর জন্য কলমের মাথায় রাবারের গ্রিপ লাগানো এবং অন্য কলমকে টেবিল থেকে সরাইতে ঠিক কত এঙ্গেলে কিভাবে মারতে হবে এমন অনেক বিদ্যা খাটানো লাগতো।
কাটাকুটিঃ
game of X and O. এর জন্য আম্মার হাতে ব্যাপক মাইর খাইছিলাম থ্রী ফোরে থাকতে।
ক্লাস ওয়ার্কের অর্ধেক খাতা জুড়ে কাটাকুটি খেলার অপরাধে।
আমার খেলার টেকনিক ছিল প্রতিপক্ষের চোখ ফাঁকি দিয়া খালি তিন কোনায় কোনরকম তিনটা X বা O বসানোতে। এবার যাইবি কই? হেঃ হেঃ।
ক্রিকেটঃ
স্কুলে ব্যাট আনা যাইতো না তো কি হইছে? বেঞ্চের পায়া আছে না? অবলা চতুষ্পদ বেঞ্চ গুলার রান খুইল্লা ব্যাট বানানো হইতো আর উড়িয়ে ঘুরিয়ে ছক্কা চাইর পিটানো হইতো। একবার কোন এক অসতর্ক মূহুর্তে এসিস্টেন্ট হেডস্যারের হাতে একজন বন্ধু সুস্থ সবল বেঞ্চের পা খুলতে যায়া ধরা পড়ে এবং পরবর্তীতে বন্য প্রানী সংরক্ষন আইনের মত জরিমানার বিধান রেখে বেঞ্চ সংরক্ষন আইন পাশ হয় টিচার্স রুমে।
তাতে খেলা কিন্তু বন্ধ হয়নাই। খেলারও আইন পরিবর্তন হয়। হাতের তালুরেই ব্যাট বানায়া ব্যাপক হারে খেলা হইত।
ভিড্যু গেমস (MOSTAPHA):
২ টাকা দিয়া এক কয়েন মোস্তফা আর ১৫ টাকায় পুরা গেম ওভার।
কিছুই বলার নাই।
ক্লাস ফাঁকি দিয়ে কখনো খেলি নাই এটা সত্য তবে টিফিন টাইমটা খারাপ যাইতো না। সিরিয়াল পাইতে আগেই বুক দিয়া আসতাম। হান্না, জ্যাক, মেস নাকি মোস্তফা? এখনো কম্পিউটারের ডি ড্রাইভে আছে।
খাতার ক্রিকেটঃ
ক্লাশরুমে কখনো টিচার না আসলে খেলা হইতো দুইজনের মধ্যকার এই প্রীতি ম্যাচ। একটা খালি পেজে এ সুন্দর করে একটা বৃত্ত আঁকা হত।
বৃত্তটাকে এখনকার হোটেলের বড় নানরুটি ভাগ করার মত (উপযুক্ত আর কোন তুলনা পাইলাম না) ১০/১২ টা ভাগ করা হত। তারপর প্রতি ভাগে 6 run, 4 run, 2 run, 1 run, no ball, wd, catch out, bold, lbw, run out, hit out লেখা হত।
ব্যাটসম্যান সেন্টারে কলম রেখে মাথা উপরের দিকে করে চোখ বন্ধ রাখতো আর বোলার খাতা ঘুরাইতো। তারপর ব্যাটসম্যান কলম তুলে আন্দাজে বিভিন্ন ঘরে ফেলতো। এভাবে রান না হয় আউট হত।
চুরির চান্স খুব কমই ছিলো। আচ্ছা এখনকার ক্রিকেটে খেলা শুরুর আগেই বৃষ্টির জন্য পুরা খেলা বাতিল হয়ে যায়। এই মেথডে রেজাল্ট দিলে খারাপ হয় না। নাম হবে এন আর মেথড। নানরুটি পদ্ধতি।
খাতার কথা যখন আসলোই আরেকটা কথা মাথায় আসলো।
খাতার মলাট। আমাদের সময়কার খাতার মলাটে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ছিল মিনা।
অনেক সময় মীনার দাড়ি মোছ লাগাইতাম ক্লাসে বসে। এবার এখনকার একটা খাতা দেখেন...
পোলাপাইন কী শিখবে??
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।