আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাওলানা ভাসানীর সংঙ্গে কিছুক্ষন।

আমি কাল মেঘকে ভাল বাসি,কারন সাদা মেঘ শুধুই তারার দেশে ঘুরে ঘুরে ফ্যাসন করে কিন্তূ কাল মেঘ তার জীবনের অস্থিত্বকে হারিয়ে দিয়ে দুনিয়াতে বৃষ্টি দিয়ে ফসল ফলায় করে। মওলানা ভাসানীর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে যে সংগ্রাম তার মূল কেন্দ্রে ছিল মানুষ এবং মানুষের বাঁচার অধিকার। এ পথে সামান্য ছাড় দিলেই তিনি পেতে পারতেন রাজমুকুট। কিন্তু সেই রাজমুকুটের মোহ তাকে কখনোই বিভ্রান্ত করেনি। এ নিয়ে বিতর্ক চলতে পারে- রাজনীতিবিদদের জন্য রাজমুকুট বড় না মানুষের অধিকারের রক্ষাকর্তা বড় এ প্রশ্নের সহজ, সরল কোনো জবাব নেই।

১৯৫৭ সালে কাগমারী সম্মেলনের আয়োজন করে তিনিই সর্বপ্রথম বিদায় জানিয়েছ ঐক্যবদ্ধ পাকিস্তানকে বলেছিলেন আসসালামুয়ালাইকুম, উচ্চারণ করেছিলেন বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীন জাতীয় সত্তার কথা। এ কারণেই তাকে সরে আসতে হয়েছিল তারই প্রতিষ্ঠিত দল আওয়ামী লীগ। এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গে মতভেদের কারণেই শুরুতেই তিনি শিকার হয়েছিলেন আওয়ামী দুর্বৃত্তদের হামলার। হামলা হয়েছিল তার নবগঠিত দল ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির প্রথম জনসভায়। এই পাপ কিন্তু আজও মোচন হয়নি।

কারন ঠিক দশ বছর পর ১৯৬৬ সালে স্বায়ত্তশাসনের দাবিকে শেখ মুজিব খুবই সুনির্দিষ্ট ও র‌্যাডিক্যাল আকারে উপস্থিত করলেন ঐতিহাসিক ছয় দফার ভিত্তিতে। তিনি হয়ে উঠেছিলেন বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রতীক পুরুষ। তিনিই হলেন জাতির স্বাধীনতার স্থপতি। অথচ ৬৬ পৃর্ব সময়ে মাওলানা ভাসানিই শেখ মুজিবকে সতর্ক করে বলতেন:মুজিব তোমার কারনে যদি আমার বাংলার মেহনতি মানুষের স্বাধীনতা হরন হয় তাহলে কিন্তু বাংলার মানুষ তোমাকে কখনো ক্ষমা করবে না। ১৯৫৬-৫৭ সালে তদানীন্তন প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগে ভাঙন, ভাসানী-সোহরাওয়ার্দী বিরোধ এবং প্রগতিশীল সাম্রাজ্যবাদবিরোধী রাজনৈতিক দল- ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) জন্ম আমাদের দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।

বলা যেতে পারে জাতীয় রাজনীতি একটি নতুন মোড় নিয়েছিল। স্বল্পসংখ্যক সংসদ সদস্য নিয়েও পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়াশীল শাসক প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার মির্যার আশীর্বাদে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী প্রধানমন্ত্রী হলেন। সোহরাওয়ার্দী আওয়ামী লীগের দক্ষিণ অংশকে প্রতিনিধিত্ব করতেন। উল্লেখ্য, সোহরাওয়ার্দী আওয়ামী লীগে যোগদান করেন ১৯৫৩ সালে। তার আগে তিনি করাচিতে বসে জিন্নাহ মুসলিম লীগ গঠন করেছিলেন এবং ভাষা আন্দোলনের সময় উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষে অর্থাৎ বাংলা রাষ্ট্রভাষার বিরুদ্ধে বিবৃতি পর্যন্ত দিয়েছিলেন।

পরিশেষে ভাসানী সম্পর্কে সত্য একটা স্থানীয় ঘটনার কথা বলছি: একদিন ভাসানী হুজুর টাংগাইলের এক গ্রামের রাস্তা দিয়ে হাটতে হাটতে কোন এক বাড়িতে উঠে লোকজনকে চিনার ভাত(যে ভাত খাইতে খুবই কষ্টকর; বড় লোকেরা এই ভাত খাইতে পারে না বারতে বললেন; এবং টাংগাইল জেলার ডিসিকে ঐ বাড়িতে আসার জন্য খবর দিলে জেলা ডিসি হুজুর হুজুর করতে করতে ভাসানীর কাছে আসলে তাকে উক্ত চিনার ভাত খাইতে বললেন কিন্তু সে অনুনয় বিনয় করে খাইতে অপারগতা প্রকাশ করে মাফ চাইলে মাওলানা তাকে শাসিয়ে বললেন: তুমি এই ভাত খাইতে পারো না অথচ আমার বাংলার মানুষ এই ভাত খেয়েই তাদের জীবন-যাপন করে। আর তুমরা শাসক হয়ে চিকন চাউলের ভাত খাও? আগামী দিনের মধ্যেই তুমি ডিসি আমার এলাকায় ট্রাক ভর্তি করে চিকন চাউল এনে এই গ্রামবাসিকে বিনামূল্যে বিতরন করবে। আর ডিসি ব্যাটা ছেড়ে দে মা কান্দাবাছি করতে করতে সব শর্তে রাজি হয়ে চলে গেলো এবং কথামতো পরের দিন ট্রাক ভর্তি করে চাউল এনে বিতরন করলো। আর বঙ্গবন্দু শেখ মুজিব সম্পর্কে মাওলানা হুজুরের বিখ্যাত উক্তি: মুজিব একজন ভালো অরগানাইজার কিন্তু ভালো এডমিনিসট্রেট্রর না। ১৫ই আগষ্ট সপরিবারে নিহত হয়ে যেনো ভাসানী হুজুরের সেই কথারই সত্যতা প্রমান হলো।

কিন্তু দুঃখ যে, যে ভাসানীর পা সেলাম করতে করতে মুজিব একদিন বড় নেতা হলেন, আর সময়ের পরিক্রমায় সেই ভাসানীর নাম পরিবর্তন করে নভোথিয়েটারটার নাম বঙ্গবন্দুর নামে পরিবর্তন করা হলো। শেখ মুজিব নিজে বেচে থাকলে হয়ত তিনি নিজেও এ কাজ করার দুঃসাহস করতেন না। অথচ আর তেলবাঝ নেতা-ক্ষেতারা তাই করলো। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।