পথ্য তো রোগীরও লাগে না ভালো! যদিও এটা তার রোগ সারিয়ে তুলতে সাহায্য করবে,তথাপিও! ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ১৬,১০৮ রাজকুমারী বিয়েঃ
- আবার কেউ কেউ বলে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ১৬,১০৮ জন রাজকুমারীকে হরণ করেছিলেন আর কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে রাজ্য হরণ করে পান্ডুপুত্রদের দান করেছিলেন (কৃষ্ণ হলেন পঞ্চপাণ্ডবদের মামাত ভাই)।
একটু খোলাসা করে বলি, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ খ্রিস্টপূর্ব ৩২২৮ (২০ শে জুলাই) ভারতের মথুরায় বাসুদেবের ঔরস্যে দেবকীর গর্ভে জন্ম গ্রহণ করেন। ২৯ বছর বয়সে রুকমিনী এবং ৭ জন রাজকুমরীকে বিয়ে করেন। ২৯-১২৫ বছর জীবনকালে তিনি ১৬,১০০* টি বিয়ে করেন। তাদের প্রত্যেকেই ছিলেন রাজকুমারী।
এবং এই সংপ্তি জীবনে তিনি ১,৬১,০৮০ টি সন্তানের বাবা হন। এতগুলো সন্তানের মধ্যে একটিও কন্যা সন্তান ছিল না।
১৬,১০০ এবং রুকমিনীসহ ৭ জন মোট ১৬,১০৮ জন কুমারীকে বিয়ে করেছিলেন। তাও আবার ২৯-১২৫ বছর অর্থাৎ ৯৬ বছরের মধ্যে। ৯৬ বছর থেকে শেষের আরো ১০ বছর বাদ দিলে থাকে ৮৫ বছর।
আর এই ৮৫ বছরকে ৩৬৫ দিন দিয়ে গুণন করলে হয় ৩১,০২৫ দিন। তাহলে গড়ে প্রতি দুই দিনে একটি করে বিয়ে করতে হবে। যদি তা না করে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ দিনে একের অধিক বিবাহ করেন তারপরও সমস্যাটা থেকেই গেল কারণ প্রতিদিন হিন্দু বিয়ের লগ্ন থাকে না। নির্দিষ্ট মাসে নির্দিষ্ট দিনে লগ্ন পাওয়া যায়। তাহলে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কি লগ্ন ছাড়াই বিয়ে করতেন? ধরে নিলাম তা নয়, তিনি একই লগ্নে বহুসংখ্যক বিয়ে করতেন।
কিন্তু সদ্যবিবাহিত নারীদের তিনি সময় দিতেন কিভাবে? কথা উঠতে পারে ভগবানদের সময়টা একটু ভিন্ন রকমের। আমাদের এক বছর সমান ভগবানদের ১ দিন বা তার চেয়েও কম। কিন্তু খ্রিস্টপূর্ব ৩২২৮ সালে সময়ের পার্থক্যটা এমন অবাস্তব ছিল না। আর এই স্বল্প সময়ে জন্ম দিলেন ১,৬১,০৮০ জন পুত্র সন্তানের। না জানি কি ভাবে সন্তানদের নাম মনে রাখতেন? এ পর্যায়ে শ্রীকৃষ্ণের পরিবারের সদস্য সংখ্যা দাঁড়াল ১,৭৭,১৮৮ জন।
এর ফাঁকে কতটা সময় পেতেন ধর্ম প্রচারের? তারপরও তো রাধালীলা, রাসলীলা, জললীলা, নৌকালীলা, গোচারণ আর বাঁশিতে ফুঁ দিয়ে সুর সৃষ্টির কাজগুলো পড়েই রইল। বাঁকি যুক্তি-তর্ক তোদের উপরই ছেড়ে দিলাম।
- না, গদা দা তুমি এসব বানিয়ে বলছ।
[* শ্রীকৃষ্ণের জীবন বৃতান্ত চার্টটি দেখে নিতে পারেন: Click here]
- নারে না, ওসব কি আমার কথা; ওসব তো বড় বড় মানুষের কথা। শুধু কি তাই, ঐ যিনি ছিলেন কৃষ্ণের পিতা-বাসুদেব; তিনিও ১৬,০০০ নারীকে বিয়ে করেছিলেন।
মহাভারতের স্বর্গারোহণ পর্বে বলা আছে :
শ্রীকৃষ্ণ পিতা বাসুদেবের বহুবিবাহঃ (১৬০০০ বিয়ে)
শুধু কি তাই, ঐ যিনি ছিলেন কৃষ্ণের পিতা-বাসুদেব; তিনিও ১৬,০০০ নারীকে বিয়ে করেছিলেন। মহাভারতের স্বর্গারোহণ পর্বে বলা আছেঃ
"বাসুদেব ছিলেন অনাদির আদি ভগবান নারায়ন (শ্রীহরি) এর অংশ। যখন তিনি নারায়নের মধ্যে প্রবেশ করেছিলেন তখন তিনি ১৬,০০০ নারীকে বিয়ে করেছিলেন। "
Vasudeva was a portion of that eternal god of gods called Narayana.Accordingly, he entered into Narayana. 16,000 women had been married to Vasudeva as his wives. (From Mahavharata : Svargarohanika-parva-XVIII, Krishna-Dwaipayana Vyasa, by Kisari Mohan Ganguli [1883-1896])
ভগবান রাম পিতা মহারাজ দশরথের বহুবিবাহঃ (৭৫০ বিয়ে)
অযোধ্যার রাজা কোশলপতি দশরথ ছিলেন মহারাজা অজ'র পুত্র। অকালে
পিতৃবিয়োগ হওয়ায় মাত্র পাঁচ বছর বয়সে দশরথ রাজপদে অধিষ্ঠিত হন।
তিনি অস্ত্রবিদ্যা ও রাজধর্মে ছিলেন অতুলনীয়। দেবরাজ ইন্দ্র ছিলেন তার বন্ধু। তিনি কোশলরাজ্যের কন্যা কৌশল্যাকে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু অপুত্রক থাকায় তিনি অতঃপর কেকয় রাজকন্যা কৈকেয়ী ও সিংহল রাজকন্যা সুমিত্রাকে বিয়ে করেন। অল্প সময়ের ব্যবধানে পর পর তিনটি বিয়ে করেও রাজার পুত্র কামনা অপূর্ণ থাকায় পরে একে একে আরও, সর্বমোট সাত শত পঞ্চাশটি বিয়ে করেন।
কিন্তু তথাপি রাজা পুত্রমুখ দেখতে ব্যর্থ হন। (মহামুনি বাল্মীকি পন্ডিত কর্তৃক বিরচিত, মহাকবি কৃত্তিবাস পন্ডিত কর্তৃক অনূদিত, কৃতিবাসী রামায়ন, আদিকান্ড, পৃষ্ঠ- ৬৪৬)
কুন্তি পুত্র শ্রীঅর্জ্জুনের বহুবিবাহঃ
অর্জুন, কুন্তি দেবীর তৃতীয় পুত্র। তবে পান্ডুর ঔরস জাত নন (কারণ, পান্ডু ছিলেন সন্তান উৎপাদনে অক্ষম), তিনি হলেন দেবরাজ ইন্দ্রের ঔরসজাত। তিনি দৌপ্রদীকে বিয়ে করেছিলেন। তবে তিনি একা নন।
পাঁচ ভ্রাতা মিলে দ্রুপদ রাজের কন্যা দৌপ্রদীকে বিয়ে করেছিলেন। বিয়ের পর স্বত্ত্ব ছিল দৌপ্রদী (কৃষ্ণা) যখন কোন ভ্রাতার সঙ্গে নিভৃতবাসে থাকবেন তখন অপর চার ভ্রাতার যে কেউ শয়ন কক্ষে অনুপ্রবেশ করতে পারবে না। যদি করেই ফেলে তবে শাস্তি স্বরুপ তাকে ১২ বছরের বনবাসে যেতে হবে। কিন্তু ঘটনাটমে এক বাহ্মণের গোধন রক্ষার্থে অস্ত্র আনতে অর্জুন ভ্রাতা যুধিষ্ঠি ও ভার্যা দৌপ্রদীর শয়ন কক্ষে পবেশ করনে। এজন্য অর্জুনকে বনবাসে যেতে হয়েছিল।
কিন্তু সেখানে তিনি বনবাস বা ব্রহ্মচর্য কোনটাই পরিপূর্ণভাবে পালন করেননি। ঐ সময়ে তিনি চিত্রবাহনের কন্যা চিত্রাঙ্গদা এবং কৃষ্ণ ভগিনী (বোন) সুভদ্রাকে হরণ করে বিয়ে করেন। আর কৌরব্যনাগের কন্যা উলুপীর আমন্ত্রনে তার সাথে সহবাস করেন। উলুপী পূর্ব-বিবাহিতা ছিলেন বলে প্রথমে তিনি তাকে বিয়ে করেন নি। অবশ্য পরে তাকে পত্নীর মর্যাদা দিয়েছিলেন।
(সুত্রঃ কাশীদাসী মহাভারত- মহামুনি বেদব্যাস প্রণীত মূল সংস্কৃত থেকে পন্ডিত কাশীরাম দাস কর্তৃক বাংলায় অনূদিত, বেণীমাধব শীল ও প্রমথনাথ চট্টোপাধ্যায় কাব্যরত্ন কর্তৃক সম্পাদিত, মহাভারতের কাহিনী- বিধায়ক ভট্টাচার্য্য সম্পাদিত, পৃষ্ঠা নং- ১২১০-১২১৪ এবং মহাভরতের চরিতাবলী- সূর্যদাস গুপ্ত, অবলম্বনে)
- যে অর্জুন বিবাহিত নারীর সাথে অবৈধ্য কাজে লিপ্ত হয় সেই অর্জুন কিভাবে দেবতা হয়। তাছাড়া বনবাসে আরো দু'খানা বিয়ে করে তিনি কি নিয়ম ভঙ্গ করেননি। আর দেবতারাই যখন নিয়ম ভাঙ্গে তখন ব্যাপারটা কি দাঁড়ায়? এরুপ দেবতার কাছ থেকে তার ভক্তরা কি শিক্ষা গ্রহণ করবে। বিবাহিত নারীর সম্ভ্রম হরণ- না আইন ভঙ্গের মূলমন্ত্র?
ঋৃষিরাজ কশ্যাপের বহুবিবাহঃ (২৭ বিয়ে)
মরীচপুত্র ঋৃষিরাজ কশ্যাপের বিয়ে করেছিলেন কর্দমমুনির কন্যা কলাকে। প্রজাপ্রতি কশ্যপ ছিলেন মরীচ-কলার পুত্র।
কশ্যপ দক্ষ প্রজাপ্রতির তেরটি কণ্যাকে বিয়ে করেছিরেন। এই ত্রয়োদশ কন্যার গর্ভে কশ্যপের ঐরসে জগতের সমস্ত প্রাণীর জন্ম হয়েছে। (এই ত্রয়োদশ কন্যার মধ্যে ছিল বিনতা, কুদ্র, সতী, দিতি ও অদিতি। বিনতার গর্ভ থেকে গরুড় এর জন্ম, কুদ্রের গর্ভ থেকে নাগগণের (সাপ) সৃষ্টি, দিতি গর্ভ থেকে দৈত্যের জন্ম, অদিতি গর্ভ থেকে দেবতাদের জন্ম। সতী, যার অপর নাম পার্বতী, দূর্গা; তিনি মহাদেব শিব কে পতি হিসেবে পান।
-পদ্মপুরাণের র্বর্ণনা)
(মহামুনি বাল্মীকি পন্ডিত কর্তৃক বিরচিত, মহাকবি কৃত্তিবাস পন্ডিত কর্তৃক অনূদিত, কৃতিবাসী রামায়ন, আদিকান্ড, পৃষ্ঠ- ৬৪৫)
চন্দ্রের দেবের বহু পত্নীগ্রহণঃ
কশ্যপের বংশকথা করিনু কীর্ত্তন।
চন্দ্রবংশ কথা এব করহ শ্রবণ \\
মৃগশিরা, পুনর্ব্বসু, বিশাখা, অশ্বিনী।
ভরণী, অম্লেষা, হস্তা, শ্রবণা, রেবতী।
পূবের্বাত্তরভাদ্রপদী আর মূলা সতী \\
অনুরাধা, জ্যেস্ঠা, চিত্রা, পূর্ব্বাষাঢ়া, আর।
উত্তর-আষাঢ়া, পুষ্যা অতি চমৎকার \\
শতভিষা, আর্দ্রা আর কৃত্তিকা, ফল্গুনী।
এই সপ্তবিংশ হয় চন্দ্রের রমণী \\
(ব্রহ্ম বৈবর্ত্ত পুরাণ, ব্রহ্মখন্ড, নবম অধ্যায়, পৃষ্ঠা-৫৭, লেখক-ব্যাসদেব, সুবোধচন্দ্র মজুমদার কর্তৃক সম্পাদিত এবং শ্রীঅরুণচন্দ্র মজুমদার কর্তৃক দেব সাহিত্য কুটীর প্রাইভেট লিমিটেড, ২১ ঝামাপুকুর লেন, কলিকাতা-৯ থেকে প্রকাশিত)
ইনি সেই চন্দ্র দেব যিনি অত্রি মুনির পুত্র ও বৃহস্পতি মুনির সুযোগ্য শিষ্য। ঘরে ২৭ জন অপরুপা স্ত্রী থাকা স্বত্ত্বের তিনি তারাদেবীর রুপে মোহিত হয়ে তারাদেবীর সাথে জোড়পূর্বক রতিটীড়া করেছিলেন। চন্দ্রের এই হীন ব্যবহারে তারা চন্দ্রদেবকে অভিশাপ দিয়েছিলেন। যার ফলে চন্দ্রগ্রহণ হয়। কিন্তু শাস্ত্র এখানে যে চন্দ্রের বর্ণনা করেছে তা ৩৪৮০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের, ২,৩৮,৮৫৭ মাইল দূরের, পৃথিবীগ্রহের কোন উপগ্রহ নয়, বরং তিনি ২৭ জন পত্নীগ্রহণকারী মহাপুরুষ।
সূত্র: "সত্যভূত" এবং "ভ তে ভগবান ল-তে লীলা" লেখক: মো: মোস্তাফিজুর রহমান http://www.oneallah.org/ ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।