আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুছে যাক জরা, শুচি হউক ধরা

হরবোলা নাই নাই। হাহাকার। পানি নাই। বিদ্যুৎ নাই। গ্যাস নাই।

অফিসে সেবা নাই। হাসপতালে ডাক্তার নাই। স্কুলে শিক্ষক নাই। এত নাইয়ের মাঝে ১৮ কোটি মানুষ আছে। আয়তনে পৃথিবী্র ৯০তম, জনসংখ্যায় নবম আমাদের সোনার বাংলাদেশ।

জনসংখ্যার ঘনত্বে আমাদের প্রিয় শহর ঢাকা প্রথম। ১ কোটি মানুষের শহর ঢাকা। বাসে সীট নাই। ট্রেইনের টিকেট নাই। আবাসনে বাসা খালি নাই।

কল-কারখানায় কর্মখালি নাই। প্রেম নিবেদন করবেন, মনখালি নাই। এত নাইয়ের মাঝেও আনন্দ আছে। বিভিন্ন জরিফে দেখা যায়, বাংলাদেশের মানুষ তুলনামূলক সুখী। তাহলে না পাওয়ার মাঝেও কি সুখ আছে? জানিনা।

হয়তোবা থাকতে পারে। মনে হয় হারানোর মাঝে সুখ আছে, পাওয়ার মাঝে নাই। ভাই-বোনে খুঁনসুটি আছে। বাবা-মায়ে রাগারাগি আছে। দাদা-দীদায় অভিমান আছে।

ভালবাসার অধিকার আছে। অধিকার হারানোর স্বাধিকার আছে। পরচর্চ্চা, পরনিন্দা আছে, আছে পরশ্রীকাতরতা। তেমনী আছে পারস্পরিক সহযোগীতা, সহমর্মীতা। এই এক আজব দেশ।

কাছে টানে, দূরেও ঠেলে। আমাদের ১৬ই ডিসেম্বর আছে। ২৬শে মার্চ আছে। আছে ২১শে ফেব্রুয়ারী। ১লা ফাল্গুন আছে, আছে পহেলা বৈশাখ।

আবার আছে ঈদুল ফিতর, আযহা। তেমনী আছে দূর্গা, লক্ষী ও কালী পূজা। মাঘীপূর্ণীমা, ইস্টার সানডে ও বড় দিনেও আমরা কম যাই না। এই এক উৎসবের দেশ। উৎসবের শেষ নেই।

বাঙ্গালীর জীবনে রংয়ের শেষ নেই। এতো রঙ্গীন দিনের মাঝে পহেলা বৈশাখ আরো রঙ্গীন। মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান ও আদিবাসীর প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। এই যেন বাঙ্গালীর প্রাণের মেলা মনের মেলা। আবালবৃদ্ধবণিতার এক মিলন মেলা।

। ভাইয়ের বাহারী পঞ্জাবী, ভাবীর রঙ্গীন শাড়ী, মঙ্গলশোভাযাত্রা, বন্ধুর ডুগডুগী, ভাতিজির নরম গালে উল্কির মেলা। এই সব আছের মাঝে নাইয়ের জায়গা নেই। কেবল উপচে পড়া সুখ আছে। এই সব সুখ দেখে দুঃখ পাওয়ার লোকও আছে।

তাদের জেহাদী জোশ আছে। বাঙ্গালীকে খৎনা দেয়ার রোষ আছে। বেদাতী বৈশাখ বন্ধ করার খায়েশ আছে। ইহারা জেহাদে আকবর চায় না। জেহাদে আসগর চায়।

ইহাদের নফসে আতর চায় না, চায় বিষ্ঠা। আমরা বাঙ্গালী ছিলাম, থাকতে চাই। মঙ্গলযাত্রায় যেতে চাই, বাঙ্গালী হয়ে মরতে চাই। আমরা জোশের দাঁড়ী চাই না, খোশের টিকি চাই না। আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাংলাদেশকে গড়তে চাই।

আমরা রমনায় বোমা চাই না। ভাই-বোনের লাশ চাই না, মায়ের আহাজারী চাই না। বিচারের নামে প্রহসন চাই না। রক্তে ভেজা রমনার মাটি কালের সাক্ষী হয়ে বাংলাদেশে অস্প্রদায়িকতার জয়যাত্রা অব্যাহত রাখবে। তোমাদের রক্তে ভেজা মাটিতে স্প্রদায়িকতা ও ধর্মান্ধতার চারা গজাতে পারেনা।

আমরা শুধু পান্তা-ইলিশ ও শুঁটকী ভর্তা খাবনা, সম্প্রদায়িকতা ও উগ্র ধর্মান্ধতার ভর্তা বানিয়ে খাব। বাঙ্গালী চেতনার মশাল জ্বালাব। অপশক্তির হাড্ডী দিয়ে পহেলা বৈশাখে ডুগডুগী বাঁজাব। আমরা অতন্দ্র প্রহরী হয়ে তোমাদের রক্তের ঋণ শোধ করবো। এই হউক আজ বৈশাখের শপথ।

জয়তু পহেলা বৈশাখ। বিঃ দ্রঃ- পহেলা বৈশাখে রমনা বটমূলে নিহতদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নিবেদিত। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.