সময় খুব দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে শুন্য খাতা নিয়ে ফিরে যাচ্ছি
“যা বল প্রয়োগে অর্জন সম্ভব নয় তা ধোঁকা দিয়ে সিদ্ধ করা যায়,বিষাক্ত গোখারা সাপও কাক আর সোনার হারের ফাঁদে পরাজিত হয়। “ –চানক্য
তথ্য সংগ্রহ: কভার্ট ও নন কভার্ট উভয় পদ্ধতি ব্যবহার করে “র” তথ্যা সংগ্রহ করে থাকে। –আই এস আই
পুর্ব কথাঃ
“সরকারের ভিতরে সরকার” পাকিস্তানের মাটিতে এই নামে বহুল পরিচিত ও সবচেয়ে ক্ষমতাধর সংস্থাটির নাম আই এস আই। ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা পরবর্তি পাকিস্তানে নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে তৈরী হয়েছিলো দুইটি গোয়েন্দা সংস্থা আইবি ও এমআই। কিন্তু ১৯৪৭ সালে পাক ভারত সংঘর্ষের পর সামরিক বাহিনীর প্রাপ্ত গোয়েন্দা তথ্যগুলির মধ্যে সমন্নয় সাধনে ঘাটতি থাকায় এ জন্য একটি নতুন সংস্থা গঠন জরুরি হয়ে পড়লে।
১৯৪৮ এর মাঝামাঝি ঐ সময়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কর্মরত অস্ট্রেলিয় বংশভুত ব্রিটিশ আর্মি অফিসার ও পাকিস্তান সেনা বাহিনীর ডেপুটি চিফ অব স্ট্যাফ মেজর জেনারেল রবার্ট চাওথামের পরামর্শে ও তত্বাবধানে আই এস আই তৈরী হয়। প্রাথামিক ভাবে এর কাজ তিন বাহিনীর প্রাপ্ত তথ্য যাচাই বাছাই করে সমন্নয় সাধন করা হলেও ১৯৫০ সাল থেকে একে আদালা করে শুধুমাত্র পাকিস্তান রাস্ট্রের নিরাপত্তা,স্বার্থ রক্ষা ও অখন্ডতা বজাইয় রাখার দায়িত্ব দেয়া হয়। প্রথম সংস্থা প্রধান কর্নেল সৈয়দ শহিদ হামিদ।
বাংলাদেশে আই এস আইঃ
“ভারত পুর্ব পাকিস্তান নিয়ে যাচ্ছে নিয়ে যাক,৫ বছরের মধ্যে আমরা সোনার বাংলা আমাদের কাছে ফিরিয়ে আনব,সোনার বাংলা শুধু আমাদের আর কারো নয়”
– জুলফিকার আলী ভুট্টো।
বাংলাদেশে আই এস আই একটি বেশ বহুল চর্চিত নাম।
কাভার্ট ও নন কাভার্ট গুপ্তচর হিসাবে বাংলাদেশে ৪৫০ কভার্ট আই এস আই অপারেটর নিয়োজিত আছে। বেতনভুক্ত ইনফর্মার,সংখ্যালঘু বিহারী ও আদর্শগত ভাবে অত্যন্ত সহানুভুতিশীলদের ধরলে এই সংখ্যা ১ লক্ষর অধিক হবে। কিছু ইসলামিক দাতব্য প্রতিস্টান ও অর্থনৈতিক সংস্থা সাধারনত এদের উর্বর চারনক্ষেত্র। এছাড়া বেশকিছু ন্যাশানাল ও মাল্টি ন্যাশানাল কোম্পানীতে বড় পদে আই এস আই কর্মকর্তারা কাভার্ট অপারেটর হিসাবে আছে। বলা হয়ে থাকে ধানমন্ডি সিটি কলেজের কাছে একটি বহুতল টাওয়ার থেকে আই এস আই বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম মনিটরিং করে থাকে।
বাংলাদেশের ইতিহাসের সাথে আই এস আই এর অনেক সাফল্য ব্যার্থতা জড়িয়ে আছে
দুস্টলোকেরা বলে বাংলাদেশের একজন সাবেক রাস্ট্রপতি ১৯৭১ সালে আই এস আই’র ডীপ কাভার অপারেটর ছিলেন। যদিও তার সার্ভিস রেকর্ড বলে তিনি মাত্র ৫ বছর আই এস আই তে ছিলেন এবং ১৯৬৩ তে সংস্থা থেকে চলে যান। আর একজন রাস্ট্রপতি ডবল এজেন্ট হিসাবে দীর্ঘদিন থাকার পর আই এস আই তাকে সাময়িক ভাবে ত্যাগ করে।
বলা হয়ে থাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হত্যাকান্ড সি আই এ ও আই এস আই এর যৌথ প্রকল্প। নিজ ডিপ কাভার অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে যুদ্ধ শেষ হওয়ার আড়াই মাস আগে ফারুক ও একমাস আগে খন্দকার রশিদ মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেয়।
যেখানে ৭১ এ বাঙ্গালী অফিসারদের হয় গৃহবন্দী নয়তো জেলে রাখা হতো সেখানে রশিদ ঐ সময় পাকিস্তানের পোস্টিং থেকে ছুটি নিয়ে স্ত্রী সহ প্রথমে দেশে প্রবেশ করে পরে আগরতলা যায় এবং পরে জিয়াউর রহমানের জেড ফোর্সের সাথে ডিসেম্বরে বাংলাদেশের প্রবেশ করে। ফারুক আগস্ট মাস পর্যন্ত দুবাইয়ে ট্রেনিং এ থাকলেও শেষ সময়ে এসে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন।
১৯৭৬ এ বাংলাদেশ এর নাম ইসলামিক রিপাব্লিক অব ইস্ট পাকিস্তান রাখার পরিকল্পনা করলেও মাওলানা ভাসানীর দৃঢ়তায় শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।
জেনারেল হোসেন মোহাম্মদ এরশাদ কে পুরানো সম্পর্কের জের ধরে “র” এর কব্জা থেকে নিজেদের কব্জায় নিয়ে আসা।
বাংলাদেশ কে ব্যবহার করে উত্তরপুর্ব ভারতের স্বাধীনতাকামী গেরিলা গ্রুপগুলিকে অস্ত্র সরব্রাহ।
পশ্চিম সীমান্ত নজরদারিতে থাকায় বাংলাদেশের সীমান্ত ব্যবহার করে ভারতে নিজেস্ব নেটওয়ার্ক এর সাথে যোগাযোগ রক্ষা ও ভারতের জন্য সন্ত্রাসের প্যাকেজ রফতানী করা।
২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় সম্পৃক্ততা।
১৯৯৬ এ নেদারল্যান্ড প্লপ্ট,১৯৯৭ এ নেপালি আত্মঘাতী বোমারু আই এস আই কর্মী শ্রীবাস্তব এর সাহায্যে ,১৯৯৯ ১০ মিলিয়ন ডলারে এল টিটি ই আত্মঘাতী ভাড়া করা সহ আই এস আই অনেক বার বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কে হত্যার একাধিক চেস্টা করে।
বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দলের মধ্যে আই এস আই’র কর্মীরা সক্রিয় রয়েছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের দরবেশ উপাধি পাওয়া এক নেতা বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সাথে আই এস আই’র প্রধান কন্ট্যাক্ট।
দুস্ট লোক বলে বি এন পি জামাতের শেষ সময়ে এসে আই এস আই যখন নিশ্চিত হয় শেখা হাসিনা আগামিতে বাংলাদেশের ক্ষমতায় আসছেন তখন তারা দরবেশ এর মারফত আওয়ামী লীগ কে ৩০০ কোটি টাকা নির্বাচনি তহবিল প্রদান করে। যা “র” খুব ভালো ভাবে নেয় নি। ফলাফল তত্বাবধায়ক আমলে আওয়ামী লীগে RATS এর উত্থান ও শেখ হাসিনাকে কোন্ঠাসা করার চেস্টা।
বাংলাদেশ এ সাবেক প্রধানমন্ত্রীর এক ভাই আই এস আই’র অন্যতম প্রধান কন্ট্যাক্ট।
আর জামাতের কথা বলে নাহয় সময় নস্ট নাই করি ক্বেন… কারন সিনিয়ার নেতাদের মধ্যে কম বেশি সবাই পাকিস্তানের প্রতি শুধু সহানুভুতিশীলই না… তাদের সাথে যেকোন পর্যায়ে সহযোগিতা করতে ও সহযোগিতা নিতে প্রস্তুত থাকে।
১৯৯২ সালে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের বিচারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনে হরতাল কর্মসূচি সফল করার লক্ষ্যে জাসদের মিছিল চলাকালে শিবিরের সশস্ত্র হামলায় সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে জাসদ নেতা মুকিম মারাত্মক আহত হন এবং মারা যান। ঐ হামলায় প্লট আই এস আই’র করা ছিলো।
চট্টগ্রামে এইট মার্ডার । চট্টগ্রামের বদ্দরহাটে শিবির ক্যাডাররা মাইক্রোবাসের মধ্যে থাকা ৮ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে প্রকাশ্য দিবালোকে ব্রাশফায়ার করে নৃশংসভাবে হত্যা করে। নাসির গ্রুপের নাসির সহ প্রত্যেকে আই এস আই ট্রেনিং ক্যাপমের সদস্য ছিলো।
৫ মে, ২০০৭ চাঁপাইনবাবগঞ্জের একটি আর্মি ক্যাম্পের বিভিন্ন স্থাপনা ভিডিও করার সময় আর্মি সদস্যরা শিবিরের ২ নেতাকে ভিডিও ফুটেজসহ আটক করে।
চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকা থেকে শিবির ক্যাডার মাহমুদুল চৌধুরীকে পুলিশ সদস্যরা একে-৪৭ এর ৩৩টি বুলেটসহ গ্রেপ্তার করে। যার মধ্যে ১৭টি বুলেট দেশীয় কোনো কারখানায় তৈরি হয়েছে বলে সেনাবাহিনীর বিশেষজ্ঞ দল মত প্রকাশ করে।
১৯৯৯ রাবি ছাত্র শিবির সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর পাকিস্তানে তৈরী রিভলবার, গুলি ও গান পাউডার সহ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। তার কোয়েটায় টেনিং নেয়ার অভিজ্ঞতা আছে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশে ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টি নামে একটি দল আছে যাদের ১২,০০০ কর্মী সোভিয়েত বিরোধী যুদ্ধ ও পরবর্তিতে আফগান গৃহযুদ্ধে লড়াঈ করে । এদের ট্রেনিং রিক্রুটমেন্ট আসা যাওয়ার সব খরচ আই এস আই বহন করে।
১৯৯২ সাল থেকে রোহিঙ্গা রিফিউজিদের মধ্য থেকে বাছাই করে তাদের ট্রেনিং দিয়ে কাজে লাগায় আই এস আই।
চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র যে জেটিতে ভিড়ল এই জেটিটা শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতায় ছিল। শিল্পমন্ত্রীর অনুমতি ছাড়া বা জানা ছাড়া অস্ত্র চট্টগ্রামের জেটিতে ভিড়তে পারেনা।
আর তখন শিল্পমন্ত্রী ছিলেন জামায়াতে ইসলামের মতিউর রহমান নিজামী।
১২৫ টা গুপ্ত জঙ্গী সংঠন আই এস আই’র হাতে তৈরী যাদের অনেকের বাংলাদেশে শাখা আছে।
মধ্যযুগের একজন বিখ্যাত আরব মনীষির নামে তৈরি করা একটি দাতব্য সংগঠন ও চিকিৎসা কেন্দ্রের নামে আসা ফান্ড এর বড় একটা অংশ স্থানীয় কর্মী আর ইনফর্মারদের বেতন ভাতায় খরচ হয়।
অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদকে টার্গেট করে আক্রমনের নির্দেশ দেন বাংলাদেশের বড় ইসলামিক আলেমের ছদ্দবেশে একজন আই এস আই’র কর্মী।
এই লিখার তথ-উপাত্ত অনিক আহসান এর" যে ৫ টি বিদেশি গোয়েন্দাসংস্থা বাংলাদেশের মাটিতে সর্বাধিক সক্রিয়..রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস উইং(র) এর আদ্যপান্ত পর্ব" থেকে নেওয়া।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।