আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মফস্বল শহরের পড়াশোনা ও শিক্ষকের দৌরাত্ব্য

খাঁটি কথার ভাত নাই শুরুতে এ বছর শুরু হয়ে যাওয়া এইচ এস সি পরীক্ষার্থীদের জন্য শুভ কামনা রইল। উচ্চ মাধ্যমিকের সময়টা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ের প্রস্তুতির ভিত্তত্তেই রচিত হয় তার পরবর্তী শিক্ষা ও কর্ম জীবন। তাই সময়টা অনেক প্রতিযোগীতাপূর্ন। বিশেষ করে বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রদের জন্য।

কিন্তু এই প্রতিযোগীতায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মফস্বল শহরগুলোর ছেলে মেয়ে পিছিয়ে পরে। তার অনেক রকম কারন আছে। আমি নিজে মফস্বল শহর সিরাজগঞ্চে লেখাপড়া করেছি, সেই অভিজ্ঞতা থেকে কারন গুলোর দু-একটা চিত্র তুলে ধরছি। এখানকার ছেলে-মেয়েরা এস এস সির শেষ পরীক্ষাটা দিয়েই যায় কলেজের স্যারদের কাছে। তাদের ধারনা ইন্টারমিডিয়েটে সময় খুব কম আগের থেকেই না পড়লে নাকি ভালো করা যাবে না।

শুরু আগাম প্রাইভেট পড়া। একেকটা শিক্ষক ৫-৬ টা ব্যাচ তৈরি করেন। প্রতি ব্যাচে ছাত্র সংখ্যা ৫০-৬০ জন। একেকটা ব্যাচ যেন একটা করে মিনি কলেজ। এই শিক্ষকদের একটা চক্র আছে।

প্রতিটা বিষয়ের শিক্ষক মিলে একটা চক্র তৈরি করেন। এক জনের কাছে ছাত্র এলে অন্য বিষয়ের জন্য চক্রের আরেকজনের কাছে পাঠিয়ে দেন। এভাবে দীর্ঘদিন ধরে চলছে তাদের ব্যবসা। তাদের আয়ও প্রচুর। মাসে লাখ খানেক।

এরা মুলত স্থানীয় শহরেরই মানুষ। কখনও বদলি হন না বা হলেও ঘুষ দিয়ে আবার ফিরে আসেন। ছাত্ররাও তাদের কাছে যায় বিভিন্ন কারনে যেমনঃ বি সি এস ক্যাডার, নামি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া করা, হ্যান্ড-নোট দেন, অনেক মজা করেন স্যার, যদি এই কলেজ ভর্তি হই তাহলে স্যারদের সু-দৃষ্টি পাব ইত্যাদি। আমাদের মত যারা গ্রাম থেকে কলেজে ভর্তি হয়ে ক্লাস শুরুর সময় আসে, তাদের তো চোখ কপালে উঠে যায় কারন বাকি ছাত্রদের অর্ধেক সিলেবাজ শেষ। কলেজে বছর ধরে মারামারি ও বন্ধের কারনে ক্লাস হয়না।

যেকয়টা দিন তাতে সিলেবাজ শেষ হবে না। তাই ছাত্রদের প্রাইভেট পড়তেই হই। আর সেই সুযোগে শিক্ষকরা কলেজকে মিডিয়া হিসেবে ব্যবহার করেন। প্রথম যখন ক্লাস শুরু হয়, তখন তাদের লেকচার দেখে মনে হবে এটা কোন পন্যের বিজ্ঞাপন বা কোন মুভি রিলিজের আগে তার প্রমো। একটা অংক করে তারপর ছাত্রদের বলবেন দেখ আমার মত করে এত ভাল করে এই শহরে আর কোন শিক্ষক বুঝাতে পারবে না।

অতএব আমার কাছেই পড়। এছাড়া নিজের আরও গুনগান। তাদের কাছে পড়ার আরো সুবিধা কলেজে ক্লাস না করলেও কোন ঝামেলা হবে না পরীক্ষার আগে অ্যাডমিট কার্ড আটকাবে না ইত্যাদি। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল এই শিক্ষকরা কখনও বই পড়ান না। বই পড়ানোর মত সময় তাদের হাতে নাই।

বিগত বিভিন্ন বোর্ডে আসা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলো নিয়ে তৈরি করা আছে তাদের হ্যান্ড নোট। তাই ছাত্রদের গলাধকরন করান। ছাত্ররাও আর জীবনে মুল বইটি খুলে দেখে না। যার কারনে কলেজ থেকে প্রতি বছর বস্তা বস্তা এ প্লাস পেলেও মেডিকেল-পাবলিক বিশ্ববিধ্যালয়ে চ্যান্স পাওয়ার হার খুব কম। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.