প্রিল ফুলের প্রকৃত ইতিহাস নিয়ে কয়েকটি লেখা পড়লাম। এই দিনে স্পেনে নাকি বহু মুসলিমকে ধোঁকা দিয়ে মসজিদের ভিতর পোড়ানো হয়েছিলো। ব্যক্তিগত ভাবে আমি সকল গণহত্যার নিন্দা জানাই। তীব্র প্রতিবাদ ও শোক জানাই। আমার এই নিন্দা- প্রতিবাদ- শোক কোনো জাতি গোষ্ঠী ও সম্প্রদায় ভেদে নয়।
আমি কোনো উম্মাহ বাদী নই, যে শুধু উম্মাহ’র শোক-দু:খ নিবারণের জন্যই সর্বশক্তিমানের কাছে প্রার্থনা করবো। জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক এটা আমার প্রার্থনার মন্ত্র। আমার ধর্মের মন্ত্র বা আমার ধর্মের শিক্ষা।
সে যাই হোক, এপ্রিল ফুল পশ্চিমা দেশে মুসলিম নিধনের ইতিহাসকে সামনে রেখে পালন করা হয় না। এত বড় পৃথিবীতে প্রতিদিন কত ঘটনাই না ঘটছে।
দু:খের ঘটনাই যদি স্মরণ করি, আর দু:খ প্রকাশ করতে থাকি, তবে আনন্দ উৎসব আর পালন করতে হবে না। কথাটা এ করনেই বলছি এপ্রিল ফুল মজা মশকরার দিন হিসেবে প্রচলিত। কিন্তু অবাক এপ্রিল ফুলের এই মজা মশকরার দিনে হুজুরদের ফতোয়া জারি দেখে। বিভিন্ন দৈনিকের কলাম লেখক এই হুজুরি ফতোয়ায় অবতীর্ণ হয়েছে। বলি, এই শ্রেণীর কলাম লেখকরা কেনো সেদিন কলম ধরেন না যারা জাতির জনকের হত্যার দিনে কেক কেটে আনন্দ উৎসব করেন।
হত্যার ইতিহাস ও তার সন তারিখ নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। কিন্তু এফিডেভিটের মাধ্যমে যিনি জন্ম তারিখ বদলিয়ে আনন্দ উৎসব করেন। সেটা কি একজন সাচ্চা মোমিন মুসলমানের সাজে। আদি কালে স্পেনের মুসলিম নিধনের কারণে যদি এপ্রিল ফুল বাদ দেয়া যায়। তবে বর্তমান কালের জাতির জনকের মৃত্যুর দিনে কেনো ভুয়া কেক কাটার দিন বাদ দেয়া যায় না? স্পেনের সেই মুসলমানদের জন্য আমরা বাংলাদেশী মুসলমানরা এপ্রিল ফুল বাদ দিচ্ছি।
শোক জানাচ্ছি। ঘৃণা প্রকাশ করছি। সেটা কি সেই হত্যার শিকার ওই আরব মুসলমানরা জানে? তাদের জন্য আমাদের হৃদয়ের গদ গদ আবেগের কথা যদি তারা জানতে পারতো তবে বিনে পয়সায় খয়রাতি তেল সহ কত কিছুই না পাওয়া যেত। মনে হয় আমাদের এই আবেগের কথা আরব জাহান জানে না। তাই প্রতিবেশী হিন্দুরা আরব জাহানে গিয়ে আমাদের চেয়ে বেশি বেতন পায়।
আমরা কম পাই।
ফিরে আসি এপ্রিল ফুলের ইতিহাসে। ইনটার নেট ঘাঁটলে এপ্রিল ফুলের বেশ কয়েকটি ইতিহাস পাওয়া যায় । সেখানে দেখা যায় এপ্রিল ফুল পালন করার ইতিহাস অজ্ঞাত। আবার কেউ কেউ বলছেন, ফরাসী লোকেরা এপ্রিল ফুল পালন করে সবার আগে।
গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের পরিবর্তন যারা মেনে নেননি তাদেরকে ফুল বলা হতো। ১৫৮২ সালে পোপ গ্রেগরি ত্রয়োদশ নতুন ক্যালেন্ডারের প্রস্তাব করেন। যাকে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার বা গ্রেগরিয়ান পঞ্জিকা বলা হয়। পুরানো জুলিয়ান ক্যালেন্ডারের স্থলে এই ক্যালেন্ডার চালু করে রোমানরা।
বেশির ভাগ ফরাসি নতুন ক্যালেন্ডার মেনে নেয়।
সে অনুসারে তারা জানুয়ারি ১(এক) তারিখে হ্যাপি নিউ ইয়ার সেলিব্রেট করে। কিন্তু অনেক ফরাসি নতুন এই ক্যালেন্ডার মেনে নেননি। তারা পুরাতন জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে এপ্রিল ১ তারিখে হ্যাপি নিউ ইয়ার পালন করে। কিছু লোকের এই পাগলামি দেখে সংখ্যাগরিষ্ঠ লোকেরা তাদের বোকা বলে সম্বোধন করে। যেহেতু এপ্রিল মাসের প্রথম দিনে এই বোকামিটা তারা করত ।
তাই ওইদিনটিকে তারা এপ্রিলের ফুল বলে সম্ভোধন করত। এই ঘটনাটি যখন সারা ইউরোপে প্রচার পায় তখন দিনটিকে বোকাদের উৎসব বলে উল্লেখ করা হয়। একজন ইউরোপীয় বা আমেরিকান এপ্রিল ফুলের এই ইতিহাসটি পড়বে। মুসলিম নিধনের ইতিহাস তারা পড়বে না। কিন্তু বাংলাদেশে আজ যারা এপ্রিল ফুলকে মুসলিম নিধনের ইতিহাস দিয়ে স্মরণ করছে।
তারা এর থেকে কি শিখবে? সেটা সচেতন পাঠকই বিচার করবে। সূত্র খববের লিংক এই খানে ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।