দূরের মানুষ-কাছের মানুষ... জটিল সমীকরণ সাম্যবাদ অর্থাৎ মানুষের সম-অধিকার প্রতিষ্ঠায় কমিউনিজমের বিকল্প নেই। এই কমিউনিজমের প্রাথমিক পর্ব হচ্ছে সমাজতন্ত্র। সমাজতন্ত্র ব্যাক্তিমালিকানা ও মানুষ দ্বারা মানুষের শোষনের বিলোপ ঘটায়। পুঁজিবাদের বিকাশকালেই তার পতনের সম্ভাবনা একইসাথে পাশাপাশি বড় হতে থাকে এবং অসম্পূর্ন কমিউনিজম অর্থাৎ সমাজতন্ত্র গঠনের পূর্ব-শর্তগুলও বিকশিত হতে থাকে।
পুঁজিবাদী উৎপাদন বৃদ্ধির সাথে সাথে পরস্পর বিরোধী পার্থক্য এবং দারিদ্রতা বাড়তে থাকে।
দরিদ্র কৃষক এবং শ্রমিক শ্রেণীর মেহনতে উৎপাদিত ভোগপণ্য বন্টন হচ্ছে সামর্থ্যবান শ্রেনী তথা পুঁজিবাদী-বুর্জোয়াশ্রেনীর কাছে। সুবিশাল নিপিড়ির-বঞ্চিত মানুষ এই পার্থক্য মেনেও নিতে পারছেনা আবার তা দূরও করতে পারছে না। কিন্তু মানুষ জাগবেই।
ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিন বলেছেন,
"আমরা অবশ্যই ভুল করব। একদল ছাত্র এখান থেকে শিক্ষালাভ করবে না, তাত্বিকভাবে যারা রাষ্ট্র পরিচালনার শিক্ষা নেয়।
অন্যদিকে কোটি কোটি মেহনতি মানুষরা অনুভব করবে তাদের সামনে রয়েছে সম্পদের সুষ্ঠু ব্যাবহার, শ্রমের উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর কর্তব্য। তারা পূর্ব অভিজ্ঞতা দেখেছে যে তাদের হাতেই রয়েছে সত্যিকারের ক্ষমতা। নিজেরাই নিজেদের সাহায্য না করলে, কেউই তাদের সাহায্য করবে না। "
বুর্জোয়া গঠন ব্যবস্থার সংকট যতই গভীর রূপ ধারন করুক না কেন, সয়ংক্রিয়ভাবে পুঁজিবাদের পতন অসম্ভব। পুঁজিপতিদের শ্রেণী নিজেদের রক্ষা করে রাষ্ট্রীয় শাসনক্ষমতার দমনমুলক শক্তিসম্পন্ন বাহিনী, মগজ ধোলাই করা তাদের ভাবাদর্শজনিত গোলাম কিংবা অপরাধীদের সাহায্যে।
এই অবস্থায় সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব ছাড়া সমাজতন্ত্রে রূপান্তর সম্ভব নয়।
সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব হলো মার্কস-লেনিনবাদী শ্রমিক শ্রেণীর নেতৃত্বে কোটি কোটি মেহনতির আন্দোলন ও সংগ্রাম। এই বৈপ্লবিক উত্তরন পথ যেমন হতে পারে শান্তিপূর্ণ, তেমনই সশস্ত্র পন্থার। সমাজতন্ত্রের উদ্দেশ্যে বিপ্লবী আন্দোলনে পক্ষপাতিরা যদি আগে থেকেই সিদ্ধান্ত নেন যে, তারা শুধু শান্তিপূণ-অহিংস সংগ্রাম করবেন কিংবা শুধুই সশস্ত্র ধরন গ্রহন করবেন; তবে তা হবে গুরুতর ভুল।
সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের বিজয়ের মাধ্যমে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সাথে সাথে বিলুপ্তি হয় শোষক শ্রেণীর।
প্রতিষ্ঠিত হবে ন্যায়সঙ্গত নীতি- "যে কাজ না করে, সে খেতেও পায় না। " অর্থাৎ কর্মক্ষম সব মানুষের সামাজিক অবস্থানের মানদন্ড হবে যেকোন সামাজিক-হিতকর শ্রম, তা সে সমাজজীবনের যে ক্ষেত্রেই বাস্তবায়িত হোক না কেন।
সমাজতন্ত্রের পরবর্তী উন্নত পর্যায়, কমিউনিজমের দিকে সমাজের অগ্রগতি শুরু হবে বিজয়ী সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব থেকে। কমিউনিষ্ট রাষ্ট্র হচ্ছে পরিপূর্ণ ব্যাবস্থা, যা নিশ্চিত করে সাম্যবাদ। কমিউনিষ্ট উৎপাদন ব্যবস্থা হবে অখন্ড সমাজের সার্বজনীন মালিকানা।
শহর ও গ্রাম, কায়িক ও মানসিক শ্রমের বিশেষ পার্থক্যগুলি- সামাজিক অসমতার শেষ জেরগুলি হবে উধাও। সত্যিকারের জয় হবে মানবতার।
শ্রম ও শ্রেণী অনুসারে বন্টন ছেড়ে সমাজ এগিয়ে যাক চাহিদা অনুযায়ী বন্টনের দিকে। বাস্তবায়িত হোক কমিউনিজমের মূলনীতি- প্রত্যেকের সামর্থ্য অনুযায়ী, প্রত্যেকের চাহিদা অনুযায়ী। মানুষের সম্পূর্ণ সামাজিক সমতায় সমাজ হয়ে উঠুক শ্রেণীহীন।
মানুষ হোক সাম্যবাদী।
আসুন একটি শ্রেণীহীন সমাজের স্বপ্ন দেখি।
সূত্রঃ
socialism and communism
কমিউনিজম কি(খারিস সাবিরভ) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।