আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাষ্ট্রযন্ত্রের এমন হঠকারিতা কিন্তু নিশ্চুপ সাধারন জনগণ __ ছিটমহল এর কান্নার কি কোন দাম নেই ?

স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের জন্য অনেকটা আশার আলো শুনিয়েছিল ১৯৭৪ সালে সম্পাদিত " মুজিব -ইন্দিরা চুক্তি " । দু দ দুই রাষ্ট্রের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য সদ্য স্বাধীন বাংলার পক্ষে শেখ মুজিব এবং ভারত এর পক্ষে ইন্দিরা গান্ধি এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন । উদ্দেশ্য ছিল অমীমাংসিত ইস্যু এর যৌক্তিক সমাধান করা । কিন্তু দীর্ঘ ৩৮ বছর হতে চললেও এখনোও আলোর মুখ দেখেনি এ চুক্তি । সীমান্ত এখনো অগ্নিগর্ভ , চুক্তি অনুযায়ী আমরা সীমানা হস্তান্তর করলেও আমাদের পাওনা গুলু এখনো পাই নি ।

যার ফলে সীমান্তে এখন চলছে মৃত্যুর মহাউৎসব , এমন কোন দিন নেই যেদিন সীমান্তে বি এস এফ গুলিতে মানুষ মারা যায় নি অথবা আহত হয় নি । শুধু মাত্র তাই না বর্বর বি এস এফ এর বাঙ্গালীদের উপর অত্যাচার করার ধরন দেখে যে কেও বলতে পারে ইন্দিয়ার সাথে আমাদের যুদ্ধ চলছে কি না । তাছাড়াও আমাদের সীমান্তে থাকার পর ও অনেক সময় এ পাশ থেকে টেনে হিঁচড়ে উপারে নিয়ে গিয়ে শুরু করে আমানবিক , পাশবিক নির্যাতন । মোদ্দা কথা আমরা আমাদের সীমান্তেও নিরাপদ নয় । আমরা বড় জোর পতাকা বৈঠক করতে পারি , আর কিছু না ।

আমাদের পররাষ্ট্র নীতি পুরাই ভারতপন্থি । এখানে ভারত কে নাখোশ করে কিছু করা যাবেই না ! গত বেশ কিছু দিন ধরে নাগরিকত্ব আদায়ের জন্য আমরণ অনশন করছে ছিটমহলবাসী । তাদের দাবিগুলো হলো- ১৯৭৪ সালের ইন্দিরা-মুজিব চুক্তির আলোকে অবিলম্বে ছিটমহল বিনিময় বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা, বাংলাদেশ ও ভারতের অভ্যন্তরে থাকা দুই দেশের ছিটমহলগুলোতে খাদ্য, বস্ত্র, আবাসন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নাগরিকত্ব, পূর্ণাঙ্গ আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা স্থাপনসহ ছিটমহলবাসীদের জন্য বাজেট ঘোষণা ও ছিটমহলবাসীর হজে যাওয়াসহ ধর্মীয় কাজ সম্পাদনে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। দেশ স্বাধীন হওয়ার এতগুলু বছর পেরিয়ে গেলেও কেন তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হল না ? কেন ৩৮ বছর পার হতে চললেও মুজিব ইন্দিরা চুক্তি বাস্তবায়ন হচ্ছে না ? কিসের বাঁধা এতে ? কে পথের কাঁটা এ চুক্তি বাস্তবায়নে ? ১১১ টি ছিটমহল বাসীর বুক ফাটা গগনবিদারী কান্না কি কোন দেশের রাষ্ট্র যন্ত্রের কানে যায় না , না কি এরা জারজ সন্তান __ দেশের কোন সুবিধা তো দুরের কথা , দেশ এদের কে নামে মাত্র হলেও নাগরিকত্ব পর্যন্ত দিচ্ছে না । সভ্যতার কি অপূর্ব নিদর্শন ! হাজার হাজার মানুষ দুই দেশের জাঁতাকলে পড়ে কোন রাষ্ট্রই এদেরকে স্বীকার করছে না ।

একবিংশ শতাব্দীতে এসে এমন বেহায়াপনা কিভাবে মানা যায় ? কিন্তু রাষ্ট্র যন্ত্র বরাবরের মত নিশ্চুপ ! যদি এ আন্দোলন ঢাকার আভিজাত " গুলশান ক্লাব" বা উত্তরা ক্লাব এর ক্ষেত্রে হত , ধরলাম এদের বিদেশি মদের লাইচেন্সে বাতিল করেছে এই মর্মে , যদি বলা হত নাইট ক্লাব এর অনুমোদন বাতিল করেছে সরকার এই মর্মে তখন কিন্তু পাচা চুলকাতে চুলকাতে সরকার গুলুর শীর্ষ মহল থেকে উদ্দেগ নেওয়া হত ! বলা হত এই যুগে এসে কেও এসব বন্ধ করে । কিন্তু এখন সেটা হওয়ার সম্ভাবনা নেই । কারন এই বিষয়টি গরীবের , বঞ্চিত , নিপীড়িত মানুষের যারা ৪০ বছর ধরে রাষ্ট্র নামধারী দেশের কোন সুবিধায় পাচ্ছে না । ছিঃ ছিঃ এ সব ভণ্ডামি ! ধিক্কার তোদের প্রতি , যারা উপরের মহলের কথা ছাড়া কোন সিদ্বান্ত্ব নিতে জানেন না তাদের প্রতি । এ কোন সমাজ ? কোন সমাজের গড়ায় আমারা বাস করছি ? তাহলে কি চিরকাল এরা নিষ্পেষিত হয়ে যাবে ? এদের পক্ষে বলার লোকের কেন অভাব দেখা দিল ? কেন দেশের মানুষ আন্দোলন করছে না , কেন ধিক্কার জানাচ্ছে না এমন অবিচারের প্রতি ? আসলে আমাদের সুশীল নামধারী মানুষরাই বড় কুশীল ! এরা বিক্রি হয়ে গেছে , কিন্তু সাধরন জনগন তারা ও কি চুপসে গেল ? আমাদের করার কি কিছুই নেই ? আসুন নেমে পড়ি এমন নির্লজ্জ হটকারিতার বিরুদ্ধে ।

আর কত কাল মুখ বুজে সয়ে যাব ? কখন কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙবে আমাদের ? ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.