অহন থিক্কা সব শয়তানরে দৌরের উপর রাখুম।
সব প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক।
সাভারের রানা প্লাজা ট্রাজেডির জেরে অরাজকতা ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশের সমগ্র গার্মেন্টস শিল্পে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা দায়ী ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তি ও উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবিতে কারখানায় কারখানায় বিক্ষোভ করেছে।
সাভারের রানা প্লাজার মালিক ও সংশ্লিষ্ট গার্মেন্টস কারখানার মালিকদের গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও কারখানা বন্ধের দাবিতে শুক্রবার নারায়ণগঞ্জ থেকে গাজীপুর পর্যন্ত বেপরোয়া তা-ব চালিয়েছে পোশাক শ্রমিকরা। কারখানা ও যানবাহনে তারা চালিয়েছে নির্বিচার ভাংচুর, দিয়েছে আগুন, অবরোধ করে অচল করে দেয় এসব এলাকার সড়ক-মহাসড়ক, রাজপথ-গলি। এমনকি এ তা-বে রেহাই পায়নি হাসপাতালও। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকাতেই সবচেয়ে বেশি তা-ব চলে। এখানে গাড়ি ভাংচুর করা হয় পাঁচশ’রও বেশি।
পুরো ঢাকা পরিণত হয় আতঙ্কের নগরীতে। গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগ করা হয় আরো শতাধিক যানবাহনে। এছাড়া গাজীপুরে কী কারখানা, কী বিপণি বিতান, কী দোকানপাটÑ ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ থেকে বাদ যায়নি কিছুই। সড়ক অবরোধের পাশাপাশি এসব স্থানে চলেছে বিক্ষোভও।
শ্রমিকদের ভাংচুর, বিক্ষোভ, অবরোধ ও অগ্নিসংযোগে বাধা দিতে গেলে বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে শুক্রবার।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি ও কাঁদানে গ্যাসও ছুড়েছে। কোথাও কোথাও চালিয়েছে লাঠিপেটা। শ্রমিকরা পাল্টা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেছে পুলিশকে লক্ষ্য করে। পুলিশ ও শিল্পপুলিশ ছাড়াও গাজীপুরে পরিবহন শ্রমিকরাও জড়িয়ে পড়ে সংঘর্ষে। আবার কোথাও কোথাও পুলিশের সামনে গাড়ি ভাংচুর করতে দেখা গেছে।
আর এসব ঘটনায় ঢাকা যেমন অচল হয়ে পড়ে, তেমনি বন্ধ হয়ে যায় ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কও।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রতিবাদের ভাষা যে ভাংচুর, নাশকতা, সহিংসতা আর তা-ব চালানো নয়, তা রাষ্ট্রযন্ত্র তার নাগরিকদের বোঝাতে অক্ষম কেন? অপরদিকে শ্রমিকদের কম বেতন দেয়া, শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিধান না করা যে কাঙ্খিত নয় তথা গুরুতর অপরাধ- একথাও মালিকদের বোঝাতে রাষ্ট্রযন্ত্র অক্ষম কেন? রাষ্ট্রযন্ত্র গার্মেন্টস মালিকদের যুলুমবিরোধী এবং শ্রমিকদের তা-ববিরোধী চেতনা জাগ্রত করতে অক্ষম কেন? রাষ্ট্রযন্ত্র কেন একটি নির্বোধ প্রতিষ্ঠান? ধর্মনিরপেক্ষতার নামে রাষ্ট্রকে কেন নির্বোধ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে? কোনো ধর্মের প্রতি যাতে অনুরাগ না থাকে, সেজন্য ধর্মনিরপেক্ষ করতে গিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে নির্বোধ করা হয়েছে। কিন্তু এ নির্বোধ রাষ্ট্রের অধীনে মানুষ বোধসম্পন্ন হয় কী করে? নির্বোধ রাষ্ট্রের অধীনে একদিকে নির্বোধ মালিকরা যুলুম করছে, অপরদিকে নির্বোধ শ্রমিকরাও সমানে ভাংচুর সহিংসতা চালিয়েছে। কিন্তু নির্বোধ মালিক, শ্রমিক কেউই বুঝেনি যে, একজনের পাপের শাস্তি অন্যকে দিয়ে কোনো লাভ নেই। গাড়ি-গার্মেন্টস শুধু মালিকের নয়, রাষ্ট্রের তথা খোদ শ্রমিকেরও সম্পদ।
গার্মেন্টস চালু না থাকলে শ্রমিক কাজ করবে কোথায়? কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষ নির্বোধ রাষ্ট্রযন্ত্র এ বোধটুকুর উন্মেষ ঘটাতেও ব্যর্থ। রাষ্ট্রযন্ত্রের হাতিয়ার পুলিশ থেকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ তারপর র্যা ব-বিজিবি ইত্যাদি। কিন্তু দেশে প্রতি পনেরশ’ লোকের জন্য ১ জন পুলিশ। কাজেই রাষ্ট্রযন্ত্রের পুলিশ মানুষের কাছ থেকে ইট-পাটকেল খায়, রক্তাক্ত হয়, মারাও যায়। তাহলে রাষ্ট্রযন্ত্রের রক্ষাকবচ কী? শুধু গার্মেন্টস শ্রমিকদের তা-ব নয়, আজ যে কোনো বিষয়ে আহবান করা হয় হরতাল।
হরতালসহ যে কোনো প্রতিবাদীরা চড়াও হয় নির্দোষ মানুষের জান-মালের উপর। কারণ ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রযন্ত্র শুধু নির্বোধই নয়; বধিরও বটে। আর বধির রাষ্ট্রযন্ত্রের কানে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিদের ক্ষোভ প্রকাশে জ্বালাও-পোড়াও নীতিই এ যাবৎকাল পর্যন্ত অনুসৃত হয়ে আসছে। এটা ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের চরম ব্যর্থতা।
বলাবাহুল্য, এক্ষেত্রে রাষ্ট্রযন্ত্র যদি নির্বোধ না হতো, রাষ্ট্রযন্ত্র যদি আদর্শ তথা পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে লালন করতো, ইনসাফ পালন করতো, হক্কুল ইবাদ বুঝতো, তাহলে একদিকে মালিক যেমন শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরী স্বতঃস্ফূর্তভাবে দিতো; পাশাপাশি শ্রমিকের জান-মালের নিশ্চিত নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করতো।
অপরদিকে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকরা শুধু সংশ্লিষ্ট ক্ষতিপূরণের জন্যই অপেক্ষা করতো; ঢালাওভাবে চড়াও হতো না। অপরের জান-মালের ক্ষতি করতো না। কিন্তু পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার এ আদর্শের শিক্ষা ও প্রসার নেই বলেই আজ মালিক-শ্রমিক সবারই এ দুর্গতি।
সঙ্গতকারণেই আমরা মনে করি, এ নির্বোধ রাষ্ট্রযন্ত্রের অধীনে বোধসম্পন্ন মানুষ কাজ করতে পারে না। ধর্মনিরপেক্ষতা ঢুকিয়ে ৯৭ ভাগ মুসলমানের রাষ্ট্রযন্ত্রকে নির্বোধ বানিয়ে রাখা যায় না।
সঙ্গতকারণেই সংবিধান থেকে অবিলম্বে ধর্মনিরপেক্ষতার অবসান করতে হবে। রাষ্ট্রকে সম্মানিত ইসলামী আদর্শের বোধসম্পন্ন করতে হবে। সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি আস্থা ও বিশ্বাসসহ সমস্ত সম্মানিত ইসলামী অনুষঙ্গ সংবিধানে ঢোকাতে হবে।
মূলত, এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে পবিত্র ঈমান ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাদের অনুভূতি ও প্রজ্ঞা মুবারক থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত তথা মুবারক ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ মুবারক।
যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র সে মহান ও অমূল্য নিয়ামত হাছিল সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।