অপ্রয়োজনে অনেক কথা বলে যাই, কিন্তু বলা হয়না আরো অনেক বেশী কথা- অনেক আপন মানুষদেরকে। তাইতো, এই খোলা চিঠি। হয়তো কারোর চোখে পরবে কোনদিন, যখন আমি থাকবোনা..... অন্য এক আন্দোলনের দিন , সামনের সারিতে ছিলাম- যখন বাহিরের কিছু ছেলে ভার্সিটির গাড়ি পোড়ানোর জন্য এগোচ্ছিল,"খ" স্যারকে একটা ছেলে অনুরোধ করলো - " স্যার , ওদের মানা করেন, যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ পোড়ানো না হয়, এমনিতেই আমাদের বাস নাই'। "খ" স্যারের উত্তর ছিল- "দু একটা বাস না পোড়ালে কি আন্দোলন হয়"। কিছুক্ষন পর দেখে ছিলাম ঐ বাহিরের ছেলে গুলো স্যারের কানে কানে কথা বলছে।
২০০৪/ ২০০৫-"-" নামের একটা মেয়ের ধর্ষকদের বিচারের দাবী নিয়ে আন্দোলনে প্রথম যে কজন কথা বলেছিল- সেই আহাম্মকদের মাঝে আমি একজন। জানতামনা - এটা ছিল সাজানো নাটক। কোন এক রাতে, প্রতিপক্ষের হুমকির মুখে ক্যাম্পাস থেকে এক রকম পালিয়ে আসি বন্ধুদের সাহায্যে। ক্যাম্পাসের "ইনটিলিজেন্সের সোর্সদের" একজনের সাথে পরিচয়ের সুফল সেদিন পেলাম। পরদিন তিনি কেবল বল্লেন- "ঢাকা যান গা - আপনেগো মতন সরল না এই আন্দোলন"।
আমার জেদের কারনে বল্লেন- বিকালে দেখা করতে, কি যেন দেখাবে। খুব ছোট ; আর এমন করে ভাজ করা কাগজ যেন কেবল একটা লাইনই দেখা যায়- আমিও পড়লাম একটা মেয়ের নাম- যার নাম তখন দেশশুদ্ধ সকলেই জানে, আন্দোলনের কল্যানে। আরো বল্লেন- গত তিনমাস আগে, এই লিস্ট বানানো হয়েছিল, যেখানে শহরের "খারাপ" কাজে নিয়োজিত ভার্সিটির মেয়েদের নাম লিপিবদ্ধ করা। আর এই মেয়ে সম্পর্কে উনি যা বল্লেন তা আজও মনে পরলে ঘৃনা হয় নিজের উপর - আমাদের সেই "সম্ভমহীন" ধর্ষিতার জন্য এই আমরাই রাস্তায় নেমেছি- বিচারের আশায়। নিজের নির্বুদ্ধিতার জন্য রাগ হয়- আমাদের চারপাশের আন্দোলনগুলোর উদ্দেশ্য, পেছনের পরিচালনাকারী এবং কারন কিছুই আমরা জানিনা, অথচ সেশনজটের ভুক্তভোগী এই আমরাই।
"২০০৫- উপাচার্যের অপসারনের দাবী" -তখন আমার শেষ বর্ষ- "গ" ম্যাডাম আর "ক" স্যারকে অনুরোধ করেছিলাম- যেন কেবল আমাদের থিসিস এর ভাইভাটা অনুষ্ঠিত হতে দেয়া হয়। "ততদিনে ফাইনাল পরীক্ষার পর ৬ মাস পার হয়ে গেছে, আমাদের ব্যাচের সিএসসির ("ক" স্যারের বিভাগের) ছাত্ররা পাশ করে চাকরিও পেয়ে গেছে (কারন "ক" স্যারের বিভাগের পরীক্ষা বরাবরই উনার নিয়ন্ত্রনে)। কয়েকটা ব্যাংকে চাকরির আবেদন করার জন্য সময় চলে যাচ্ছে " বলার কারনে ম্যাডাম বললেন- তাই বলে তো আমারা এই ভিসির অধীনে একটা স্বাক্ষরও দিতে পারিনা। ভাইভাটা অনুষ্ঠিত হয়েছিল তারও ২মাস পরে। সেদিন যাদের "থিসিস সুপারভাইজার" হিসাবে "গ" ম্যাডামের উপস্থিত থাকার কথা ছিল তারা খুব ভয় পেয়ে ছিল ।
কেননা অন্য টিচারদের আক্রোশের শিকার হওয়ার বিরাট আশংকা ছিল। সেদিন কেবল দুর থেকে ভেবে ছিলাম "ভুল মানুষকে শ্রদ্ধা করার চেয়ে কষ্টের আর কিছু নাই" ।
ছাত্রজীবনের কলংক যে সময়গুলো-১ ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।