দাঁড়িয়ে থেকো সরে যেওনা...এখানে দাঁড়ানো তোমার অধিকার... আমরা ফেলানি হত্যার বিচার করতে পারি নি, কিন্তু বাংলার ক্রিকেটাররা ভারত কে পরাজিত করে তার কিছুটা জবাব দিয়ে দিল। তাই আমার দেশের ক্রিকেটারদের শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখা শুরু করছি.........
এশিয়া কাপের “বাংলাদেশ বনাম ভারত” ম্যাচটি নিয়ে বাঙালিদের মধ্যে ব্যপক উত্তেজনা বিরাজ করছিলো। এর অনেক কারণও ছিল। ভারতীয় সীমান্তে মানুষ নির্যাতন তার মধ্যে অন্যতম। মূলত যারা ক্রিকেট ভালোবাসে সেই তরুণ সমাজ অনেক বেশি সচেতন।
তারা দেশকে যে কত ভালোবাসে তা চোখে না দেখলে হয়তো বিশ্বাসই করতে পারতাম না। যখন বাংলাদেশ জয়লাভ করলো তখন তাদের চোখ দিয়ে বেয়ে এলো আনন্দ অশ্রু।
কয়েকদিন ধরে ফেইসবুক, ব্লগ, নোট এর মাধ্যমে সবাইকে জানানো হল যারা “বাংলাদেশ বনাম ভারত” খেলাটি স্টেডিয়ামে দেখতে যাবে তারা যেন অবশ্যই বিএসএফ এর নির্যাতনের প্রতিবাদ জানাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে যায়, যাতে লিখা ছিল “STOP BSF BRUTALITY”। বাংলাদেশের এমন কোন খেলা নেই যা তারা স্টেডিয়ামে বসে দেখে নি এমনি কিছু দর্শক প্ল্যাকার্ড নিয়ে গিয়েছিল। তারা প্ল্যাকার্ডটি খেলার একটি সময় মেলে ধরে।
সাথে সাথে গ্যালারির সকল দর্শক করতালির মাধ্যমে স্বাগত জানায়। শান্তিপূর্ণ ভাবেই প্রতিবাদ জানানো হচ্ছিলো। হঠাৎ করে একজন লোক এসে প্ল্যাকার্ডটি নামাতে বলে। এতে পুরো গ্যালারি প্রতিবাদ করে ওঠে। তখন তিনি ফিরে যান এবং কিছুক্ষণ পর তার মত আরও দুজন ও একজন পুলিশ কে সাথে নিয়ে আসেন।
দর্শকদের সাথে তর্কাতর্কি হয়। সকল(পুরো ইস্টার্ন গ্যালারি) দর্শক একদিকে আর তারা একদিকে। তারা কিছুতেই প্ল্যাকার্ড দিবে না। এক পর্যায়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তারা তাদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়। একজন দর্শকের দিকে আঙ্গুল তুলে পুলিশ বলে উঠে “Be careful....Be careful...”
গ্যালারি তত্ত্বাবধান কাজে নিয়োজিত একজন কর্মী বলেন “আপনাকে এখন পাবলিক সাপোর্ট দিচ্ছে, আপনাকে থানায় নিলে কিন্তু তারা যাবে না”।
আবার এই ব্যক্তিই চা-পানি বিরতির সময় গ্যালারির বাহিরে ২জন দর্শককে একা পেয়ে হুমকি দেয় “আমি মিরপুরের স্থানীয়...আমি ডাকলে ২০০ পোলাপান আসবে(!!)”।
যাই হোক তারা প্ল্যাকার্ডটি নিয়ে যায়। এতে অনেক দর্শক হতাশা প্রকাশ করেন, ধিক্কার জানায় বাংলাদেশের প্রশাসন এবং বিসিবির প্রতি।
উপরের ঘটনাটি সত্য। এবার আমি একজন ভুক্তভোগী হিসেবে আমার প্রতিবাদ প্রকাশ করব...যদি আমার কোন ভুল খুঁজে পান তাহলে বলবেন...
আমি খুব ক্রিকেট পাগল একটা ছেলে।
প্রায় ৭ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ করি এবং গতকাল “বাংলাদেশ বনাম ভারত” হাই-ভোল্টেজ ম্যাচটি দেখতে যাই। যথারীতি প্রতিবাদ জানানোর জন্য প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে যাই। তারপর কি হয়েছে তা এখন জানেন।
আমার কথা আমার দেশের সরকার তো কোন প্রতিবাদ জানায় না, তারা এটাকে “হতেই পারে” বলে চালিয়ে দেয়। তাহলে আমি প্রতিবাদ করলে তাদের সমস্যা কি???????? আমি কি দেশের নাগরিক না?? আমার কি মতামত প্রকাশ করার স্বাধীনতা নেই??? আমি দেশের দুই প্রধান সরকারকে বলতে চাই “আপনারা বিদেশি টাকায় কেনা গোলাম হতে পারেন, আমি না......”।
নিরাপত্তা কাজে নিয়োজিত কর্মীরা আমাদের বলে “উপরের নির্দেশ আছে”। আমার কথা “তাহলে কি মেলবোর্নে উপরের নির্দেশ ছিল না????”।
যেই ভারত আমাদেরকে তাদের দেশে খেলতে দেয় না, যেই ভারত আমাদের টেস্ট স্ট্যাটাস পাবার সময় বিরোধিতা করে, যেই ভারত বিভিন্ন মিডিয়ার সামনে আমাদের ক্রিকেট নিয়ে খারাপ মন্তব্য করে তাদের জন্য এত সমবেদনা কেন???? আমরা আর কত দিন এভাবে অপমানিত হব???? প্রশ্ন থাকলো বিসিবির কাছে।
আমার দেশে খেলা অথচ আমি পূর্ণ নিয়ম না মানায় আমাকে “ban করে দেবে, আর কোন দিন খেলা দেখতে দিবে না স্টেডিয়ামে” এমন কথা শুনতে হয়। (যারা স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে গিয়েছেন তারা দেখেছেন যে UPPER এবং LOWER গ্যালারির মাঝে একটি অংশ থাকে যেখানে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়) এই অংশে যখন কোন বাংলাদেশের পতাকা লাগানো হয়েছে তখন তা খুলে ফেলা হয়েছে।
কিন্তু এখানেই ভারতের পতাকা লাগানো ছিল। কেন??????
স্টেডিয়ামে পতাকা ওড়ানোর জন্য লাঠি নিয়ে প্রবেশ নিষেধ। আমার লাঠি রেখে দেওয়া হয়েছে। তাহলে কিভাবে শচীন এর ভক্ত “লাঠি” দিয়ে পতাকা ওড়ায়??????? আমি জানতে চাই.........
“বিতর্কিত বস্তু” নিয়ে প্রবেশ নিষেধ...তাহলে পাকিস্তানের পতাকা স্টেডিয়ামে কেন প্রবেশ করে???? এটা কতটুকু বিতর্কিত তা নিশ্চয় চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে হবে না।
পাঠকদের মনে হতে পারে “আমরা কি সফল?”।
আমি বলব হ্যাঁ...প্রশাসন তার সর্বাধিক চেষ্টা দিয়ে আমাদের সফল করে দিয়েছেন। আমরা জানতে পেরেছি প্রেস বক্স, ড্রেসিং রুম সহ অনেক জায়গাতেই আমাদের প্রতিবাদ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ফেইসবুকে ভালই ঝড় লক্ষ করা যাচ্ছে।
দুঃখ...আমরা এমন একটা দেশে জন্মগ্রহণ করেছি যেখানে সাধারণ মানুষের কোন মূল্য নেই। তবুও আমরা আমাদের দেশকে ভালোবাসি।
দেহে এক বিন্দু রক্ত থাকতে এই দেশ কারো সম্পত্তি হতে দিব না।
আমি গর্বের সহিত বলবো, “আমি একজন বাংলাদেশের দালাল...PURE বাংলাদেশি দালাল”।
***চেষ্টা করেছি গুছিয়ে লিখার, তবে ভালোভাবে লিখতে পারিনি এটা বুঝতে পেরেছি। খেলা দেখে এসে খুবই ক্লান্ত, এর মধ্যেই লিখেছি। ভুলগুলি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
***
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।