আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিএনপিকে অর্থ দেয়ার কথা স্বীকার করলেন আইএসআইয়ের সাবেক প্রধান দুররানী

বিএনপিকে অর্থ দেয়ার কথা স্বীকার করলেন আইএসআইয়ের সাবেক প্রধান দুররানী ১৯৯১ সালে বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনের আগে বিএনপিকে ৫০ মিলিয়ন রুপি দেয়ার কথা স্বীকার করেছেন পাকিস্তান ইন্টার সার্ভিস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) সাবেক প্রধান আসাদ দুররানী। গত বুধবার পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টে এ বিষয়ে আয়োজিত এক শুনানিতে তিনি এ বিষয়টি স্বীকার করেন। বৃহস্পতিবার ব্রিটেনের ডেইলি মেইলের অনলাইন ইন্ডিয়া সংস্করণ মেইল অনলাইন ইন্ডিয়ার এক খবরে বলা হয়, বিএনপিকে দেয়া আইএসআইয়ের ৫০ মিলিয়ন রুপির বিষয়টি আইএসআইয়ের সাবেক প্রধান আসাদ দুররানী সুপ্রিম কোর্টে স্বীকার করেছেন। প্রধান বিচারপতি ইফতেখার মোহাম্মদ চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের বেঞ্চে পাকিস্তানের প্রবীণ রাজনীতিক এয়ার মার্শাল আসগর খানের দায়ের করা একটি পিটিশন শুনানির সময় আইএসআইয়ের সাবেক এই প্রধান পাকিস্তানের ভেতরে ও বাইরে গোয়েন্দা সংস্থাটির তৎপরতা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেন। তার দেয়া তথ্যে উত্তরপূর্ব ভারতে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি ও বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় বিএনপিকে আনতে আইএসআয়ের অর্থ বরাদ্দের কথা তিনি আদালতে স্বীকার করেন।

মেইল অনলাইন ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়, অভিযোগ রয়েছে বাংলাদেশে বিএনপি যখনই ক্ষমতায় আসে আইএসআই তখনই বাংলাদেশে তৎপর হয়। সংস্থাটির বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ যে, বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিতে ব্যাপক তৎপর থাকে আইএসআই। আর তা নির্বিঘœ করতেই তারা বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় বিএনপিকে দেখতে চায়। ভারতবিরোধী তাদের এই তৎপরতায় যাবতীয় লজিস্টিক সাপোর্ট বিএনপি শাসনামলেই আইএসআই পেয়ে থাকে এমনই অভিযোগ রয়েছে পাকিস্তানের এই গোয়েন্দা সংস্থার বিরুদ্ধে। বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য ধর্মভিত্তিক সংগঠনগুলোকেও পৃষ্ঠপোষকতা করছে আইএসআই এমনও অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

উল্লেখ্য, পাকিস্তানি ইন্টার সার্ভিস ইন্টেলিজেন্সের (আইসআই) সঙ্গে বিএনপির যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে তার চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রথম প্রকাশ করে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় দুবাইভিত্তিক মধ্যপ্রাচ্যের ইংরেজি দৈনিক ‘খালিজ টাইমস’। কিছু দিন আগে খালিজ টাইমস অনলাইন সংস্করণে বলা হয়, বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে পরাজিত করতে আইএসআই বিএনপিকে ৫০ মিলিয়ন রুপি দিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ ভারতপন্থি রাজনৈতিক দল, সুতরাং বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতা থেকে এই দলটিকে দূরে রাখতে হবে, এমনই একটি পরিকল্পনা থেকে আইএসআই বিএনপিকে এ অর্থ দেয়, খালিজ টাইমসের ‘আজগর খানস পিটিশন ফাইন্যালি কামসআপ ফর হিয়ারিং’ শীর্ষক রিপোর্টে এমনই উল্লেখ করা হয়েছিল। পাকিস্তানের বর্ষিয়ান রাজনীতিক এয়ার মার্শাল আসগর খানের দায়ের করা একটি পিটিশন দীর্ঘ ২৩ বছর পর পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে শুনানির জন্য উঠলে পাকিস্তানের রাজনীতি কলুষিত করার আইএসআই তৎপরতা ও বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির সঙ্গে পাকিস্তানি এই ইন্টেলিজেন্স বিভাগের যোগাযোগের তথ্যটি উঠে আসে। ১৯৯০ সালে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে বেনজির ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টিকে পরাজিত করতে ইসলামি জামহুরি ইতেহাদ-এর নেতৃত্বে অন্যান্য মৌলবাদী সংগঠনগুলোকে একত্রিত করতে আইএসআই ১৪০ মিলিয়ন রুপি বিলি করেছিল, এমনই একটি অভিযোগ এনেছিলেন বর্ষিয়ান পাকিস্তানি রাজনীতিক এয়ার মার্শাল আসগর খান।

খালিজ টাইমসের রিপোর্টে বলা হয়, অভিযোগ রয়েছে উপরোক্ত ১৪০ মিয়িলন রুপির বাইরে আরও ৫০ মিলিয়ন রুপি তখন আইএসআই বিএনপিকে দেয় বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে আওয়ামী লীগকে দূরে রাখার লক্ষ্য সামনে রেখে। কারণ আইএসআই মনে করে আওয়ামী লীগ ভারতপন্থি একটি রাজনৈতিক দল। কিছু দিন আগে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে আসগর খানের এই অভিযোগটি শুনানির জন্যে উঠলেও মূল সাক্ষীদের অনুপস্থিতির কারণে শুনানি মুলতবি রাখা হয়েছিল। আইএসআইয়ের সাবেক প্রধান জেনারেল আসাদ দুররানী ও পাকিস্তানের মেহরান ব্যাংক-এর সাবেক প্রধান ইউনুস হাবিবকে শুনানিতে উপস্থিত থাকার নোটিস পাঠানো হলে দুররানী বুধবার আদালতে উপস্থিত হয়ে উপরোক্ত স্বীকারোক্তি দেন। আদালতের বাইরেও এর আগে আইএসআইয়ের তৎপরতা বিষয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছিলেন জেনারেল দুররানী।

তার স্বীকারোক্তি মতে বেনজির বিরোধী বিভিন্ন গ্র“প ও রাজনীতিকদের কাছে আইএসআইয়ের পক্ষ থেকে তিনি নিজে এই অর্থ পৌঁছে দিয়েছিলেন। অর্থপ্রাপ্তদের মধ্যে নেওয়াজ শরীফের পাকিস্তান মুসলিম লীগও রয়েছে। তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশেই তিনি একাজ করেছেন, জেনারেল দুরবানী তার স্বীকারোক্তিতে এমনই বলেছেন বলে তথ্য দিয়েছিল খালিজ টাইমস। খালিজ টাইমসের রিপোর্টে বলা হয়, আইএসআইয়ের তৎকালীন চিফ জেনারেল দুররানী তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে তৎকালীন সেনা প্রধান মির্জা আসলাম বেগকেই বোঝাতে চেয়েছেন। রিপোর্টে আরও বলা হয়, পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোলাম ইসহাক খানের নির্দেশেই আইএসআইয়ের এই বেনজীর ভুট্টো বিরোধী তৎপরতা পরিচালিত হয়েছেÑ সাবেক সেনা প্রধান মির্জা আসলাম বেগ এমন ইঙ্গিত দিলেও এই গোপন তৎপরতা যে এথনিক্যাল ও লিগ্যাল ভায়োলেন্স, তা তারা কেউই চিন্তা করেননি।

উল্লেখ্য, বর্ষিয়ান পাকিস্তানি রাজনীতিক এয়ার মার্শাল আসগর খান সম্প্রতি ইমরান খানের তেহরিক ই ইনসাফ পার্টিতে যোগদান করেছেন। দৈনিক আমাদের সময় ১৭ মার্চ ২০১২ ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.