প্রিয়/অপ্রিয় বিএনপি
শাহবাগ আন্দোলন সম্পর্কে আপনারা যে অবস্থান নিয়েছেন তা অত্যন্ত দু:খজনক। শুধু তাই নয় শাহবাগ জাগরন নিয়ে কিছু বিএনপি নেতার মিডিয়ায় আসা বক্তব্য অগ্রহনযোগ্য, অজ্ঞতা ও মূর্খতাপ্রসূত। এসব বক্তব্য বিএনপিকে তরুন সমাজের কাছে মান্ধাতা, পিছিয়ে পড়া সমাজের সংকীর্ন মনের গোষ্ঠী হিসেবে মেলে ধরেছে। এর মাধ্যমে বিএনপি দেউলিয়া ও দরিদ্র দল হিসেবে দেশের কোটি তরুনদের কাছে আত্ম প্রকাশ করেছে।
বিএনপি তরুনদের মনোভাব পড়তে দারুণভাবে ব্যর্থ।
তারা ও তাদের নীতিনির্ধারক নেতাগন প্রাচীন ও বয়েসভারে নুহ্য হয়ে মানসিক রক্ষণশীলতার গন্ডিতে আটকে গেছে। বিএনপি বর্তমান পৃথিবী ও তরুন বাংলাদেশীদের সম্পর্কে এতটাই মুর্খতায় আবদ্ধ যে শাহবাগ আন্দোলন এর মতো একটি অরাজনৈতিক উদ্যেগকে কটাক্ষ করে মন্তব্য করতেও দ্বিধা করছে না।
গত কিছু দিন ধরে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, এমকে আনোয়ার, হান্নান শাহ এর বক্তব্য পত্রিকায় দেখলাম। তারা তারুন্যকে কটাক্ষ করে সবকিছুতে দোষ ধরা কিড়মিড়ে মেজাজের বৃদ্ধের মতো নিজেদের অজনপ্রিয় করেছেন। ঘৃনার পাত্র করেছেন।
আজকের শাহবাগে যে আন্দোলন চলছে সেখানে ক্ষোভ কিন্তু সরকাররের বিরুদ্ধে। এই তরুনদের নির্বাচনের আগে যুদ্ধাপরাধের বিচারের স্বপ্ন দেখিয়ে ছিল আ.লীগ। যখনই আ.লীগ তাদের এই স্বপ্ন পুরনে ব্যর্থ হয়েছে, যখন তাদের মনে হয়েছে আ.লীগ তাদের সাথে প্রতারণা করছে, যখন তাদের মনে হয়েছে যুদ্ধাপরাধীরা বেঁচে গেছে বা আপোষ হতে যাচ্ছে, তখনই তরুন যুবকরা এটার বিরুদ্ধে অনলাইনে প্রতিবাদ করে। ( হে বিএনপি. এই ফাঁকে আপনাকে একটা খোঁচা দেই। আমার মনে হচ্ছে, আপনারা অনলাইন, ব্লগিং এইসব ব্যাপারগুলো এবারই প্রথম শুনছেন কিংবা আপনারা এসব বোঝেনই না।
তাই বারবার ব্লগারদের আ.লীগ বলে গালি দিচ্ছেন। )
কাদের মোল্লার রায় প্রকাশিত হওয়ার পর যখন মনে হলো সরকার আতাত করতে চাচ্ছে তখন প্রতিবাদের প্রথম প্রহরেই ব্লগারদের কয়েকজন সেই দুপুরে শাহবাগ চত্বরে ব্যানার নিয়ে দাঁড়ায়। তাদের কয়েকজন ফেসবুকে ছোট্ট একটি স্ট্যাটাস লিখে দিয়েছিল- আমার শাহবাগ যাচ্ছি, আপনারও আসুন। এই ডাক মুহুর্তেই ছড়িয়ে পড়ে । ৫০ জন ৫০ হাজারে দাড়ায়।
দিন গড়াতেই তা হয় আড়াই লাখ।
সরকারের প্রতি এই ক্ষোভ যাতে সরকারের পতনের আন্দোলনে রুপ না নেয়, তার জন্য সরকারের মন্ত্রী এমপিরা পিঠ বাচাতে মরিয়া হয়ে উঠে। সংহতির ভেক ধরে। কিছু ছাত্রলীগ নেতা এই প্রতিবাদকে হাইজ্যাক করতে চায়। আবার কিছু আওয়ামীলীগ নেতা গলা ফাটিয়ে এটাকে দলীয় রুপ দিতে চেয়েছে।
এজন্য তারা লাঞ্চিতও হয়েছেন।
বিএনপির অত্যন্ত দুর্ভাগ্য যে তারা শাহবাগের এই আন্দোলনের যে জনপ্রিয়তা তা বাগিয়ে নিতে পারেনি। শুধুই তাই নয় সমাবেশে উপস্থিত আড়াই লাখ ভোট তারা যেচে গিয়ে সরকারের ঘাড়ে উঠিয়ে দিয়ে এসেছে। অথচ এই ভোট গুলো হতে পারতো বিএনপির। সারা দেশে দুই কোটির বেশী তরুনের ভোটের কত শতাংশ আগামীতে বিএনপি পাবে তা নিয়েও এখন বিএনপির প্রগতিশীল অংশে সন্দেহ।
হে বিএনপি,
আপনাদের আবারো বলছি, প্রত্যেক রাষ্ট্রের তরুনদের নিজেদের গর্ব করার মতো একটি বিষয় থাকে। যেমন আমাদের রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা। আপনারা কখনোই তরুনদের মনোভাব ধরতে পারেন নি। তাদের আবেগ উচ্চাসকে প্রাধান্য দিতে পারেন নি। আপনার কখনোই তরুন হতে পারেন নি।
আপনারা সবসময় একধরনের সন্দেহবাতিকরোগে ভুগছেন। তা না হলে আজকের এই মুহুর্তে রাজাকারদের ছেড়ে আপনারা তরুনদের পাশেই দাড়াতেন। ক্ষমতার জন্য আপনারা তরুনদের নয়, রাজাকারদের উপর নির্ভর করছেন। তারুন্যই আপনাদের জয় এনে দিতে পারে- এটা বিশ্বাস করলে অবশ্যই আপনারা তরুনদের পাশে দাড়াতেন। তরুনদের নিষ্পাপ, পরিচ্ছন্ন আন্দোলনকে রাজনৈতিক রুপ দেওয়ার ব্যর্থ ও হাস্যকর চেষ্টা করতেন না।
আপনারা যখন এই ব্যর্থ চেষ্টাটি করেন আমরা লাখো তরুনরা তখন আপনাদের অজ্ঞতা দেখে হাসি। আপনাদের অজ্ঞতায় আমরা বিনোদন পাই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।