চক্ষু মেলিয়া তাকানোর পর থেকে খালি বাঁদরামি করি যাহা দেখি সবই নয়া লাগে , , পাখির মতো মন হলেও,কলিজা বাঘের মতো , মানুষের মতো খালি দেখতে তে তে তে ১ জুলাই, ২০১৩ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯২ তম জন্মদিনে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলো নিয়ে ভ্রমণ পোস্টের নতুন একটি শাখা শুরু করছি।
ইতিহাস:
১৯২১ সালের ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আনুষ্ঠানিক ভাবে কার্যক্রম শুরু করে। ঢাকার সবচেয়ে অভিজাত ও সৌন্দর্যমণ্ডিত রমনা এলাকায় প্রায় ৬০০ একর জমির উপর পূর্ববঙ্গ এবং আসাম প্রদেশের পরিত্যক্ত ভবনাদি এবং ঢাকা কলেজের (বর্তমান কার্জন হল) ভবনসমূহের সমন্বয়ে মনোরম পরিবেশে গড়ে উঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠার এই দিনটি প্রতিবছর "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস" হিসেবে পালন করা হয়।
দেশের সর্ব প্রাচীন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ১৩ টি অনুষদ, ৭০ টি বিভাগ, ১০ টি ইনস্টিটিউট এবং ৩৯ টি গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে।
এছাড়া ছাত্র-ছাত্রীদের থাকার জন্যে রয়েছে ২০ টি আবাসিক হল ও হোস্টেল।
ক্যাম্পাস পরিচিতি :
হাইকোর্ট মাজার হয়ে দোয়েল চত্বর গেলে হাতের বামে কার্জন হল । কার্জন হলের সাথেই মুসা খান মসজিদ ও ড. মুহম্মদ শহিদুল্লাহ এর কবর । এবার দোয়েল চত্বর থেকে বামে চলে গেলো চাংখার পুলের দিক , সোজা সামনের রাস্তা শহীদ মিনারের দিক আর ডানের রাস্তা টিএসসি চত্বরের দিকে। দোয়েল চত্বর থেকে টিএসসি চত্বরের দিকে যেতে বামে বাংলা একাডেমী ডানে তিন নেতার মাজার , খাজা শাহবাজ মসজিদ, মীর জুমলা গেট ।
টিএসসি চত্বরে রয়েছে রাজু ভাস্কর্য , ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র , সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। পেছনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ফেলে রাজু ভাস্কর্য দিক মুখ করে তাকালে ডানে কাজী নজরুল ইসলামের কবর , চারুকলা , শাহবাগ মোড় , , আর সামনের সোজা রাস্তায় বামে রোকেয়া হল ডানে গ্রন্থাগার , আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউট , হাকিম চত্বর , আইবিএ , ডাকসু , মধুর ক্যান্টিন , গুরুদুয়ারা নানক শাহী । এটাই নীলক্ষেত এর রোড । উপাচার্যের বাসভবনের সাথে তিন রাস্তার মোড় সোজা নীলক্ষেত বামে ফুলার রোড আর পেছনে তো রাজু ভাস্কর্য ।
ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা
ক্যাম্পাসে যা যা ঘুরে দেখতে পারেন সে গুলোর ছবি সহ হালকা বর্ণনা দেয়া হল।
শাহবাগ থেকে শুরু করেছি ।
চারুকলা ইন্সিটিউট :
১৯৫৪ সালে যাত্রা শুরু করলে তখন থেকেই এটি আর্ট কলেজ নামেও পরিচিত। বকুল তলায় রয়েছে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের ভাস্কর্য। সারা বছরই জয়নুল গ্যালারিতে চলে কোন না কোন প্রদর্শনী ।
চারুকলার উল্টো দিকে " ছবির হাট" এখানেও চলে নানা প্রদর্শনী।
ছবির হাট দিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এর দিকে
শিখা চিরন্তন - ১৯৯৯ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘটনাবলি স্মরণ করে রাখতে এটি স্থাপন করা হয়।
জাতীয় কবির সমাধি - - চারুকলা হয়ে সামনে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের সাথে।
রাজু ভাস্কর্য -- ১৯৯২ সালে ১৩ মার্চ গণতান্ত্রিক ছাত্র ঐক্যের সন্ত্রাস বিরোধী মিছিলে সন্ত্রাসীদের গুলিতে শহীদ বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতা মইন হোসেন রাজু এবং শহীদদের স্মরণে এটি নির্মাণ করা হয়। শ্যামল চৌধুরী এটি নির্মাণ করেন এবং ১৭ সেপ্টেম্বর ১৯৯৭ উদ্বোধন করা হয়।
টিএসসি চত্বরে
ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র
ভিতরে রয়েছে ক্যান্টিন , মাঠ , মিলনায়তন , ইনডোর খেলার জায়গা
বিকেলে এখানে বসে অনেকেই আড্ডায় মেতে উঠে
রোকেয়া হল
বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের গেট
গ্রন্থাগারের গেট দিয়ে ঢুকে ডানে "হাকিম চত্বর"
গ্রন্থাগারের সাথেই আধুনিক ভাষা ইন্সিটিউট
আধুনিক ভাষা ইন্সিটিউট থেকে নীলক্ষেতের দিকে গুরুদুয়ারা নানকশাহী
-- শিখ সম্প্রদায়ের প্রধান উপাসনালয় ।
১৫০৪ সালে শিখ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা নিজে এখানে এসেছিলেন বলে লোক মুখে শোনা যায়।
ডাকসু ভবন - - গ্রন্থাগারের গেট গিয়ে ঢুকে হাঁটা দিলেই পেয়ে যাবেন ডাকসু ভবন । এখানে একটি সংগ্রহশালা রয়েছে।
মধুর ক্যান্টিন - - ডাকসু এর সাথেই মধুর ক্যান্টিন
মধুর ক্যান্টিনের সাথেই "আইবিএ" ভবন
আইবিএ ভবন হয়ে সামনে গেলে "আর সি মজুমদার মিলনায়তন"
মিলনায়তন থেকে সামনের দিকে গেলে হাতের বামে " অপরাজেয় বাংলা" মুক্তিযুদ্ধে বাংলার নারী পুরুষের অংশগ্রহণ এবং অনমনীয়তার প্রতীক। এর স্থপতি শিল্পী সৈয়দ আব্দুল্ললাহ খালিদ
স্বাধীনতার সংগ্রাম - - ফুলার রোডে ব্রিটিশ কাউন্সিল ছাড়িয়ে এটি।
৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে একটি বড় ও অনেক ছোট ছোট ভাস্কর্য ।
দোয়েল চত্বরের গিকে যেতে - পরমাণু শক্তি কমিশন
বাংলা একাডেমী
বর্ধমান হাউস -- বর্ধমানের মহারাজা বিজয় চন্দ্র মেহতাব ১৯০৬ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৬ সালে কাজী মোতাহের হোসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থাকা কালে এখানে থাকতেন । ১৯৪৭ এর পর খাজা নাজিমুদ্দিন ছিলেন ১৯৫৪ পর্যন্ত । ১৯৫৫ সালে বর্ধমান হাউসে বাংলা একাডেমী প্রতিষ্ঠা করা হয়।
মীরজুমলা গেট - - দোয়েল চত্তের সাথেই মীর জুমলা গেট। ঢাকাকে মগ দস্যুদের হাত থেকে রক্ষা করতে এটি নির্মাণ করেন মীরজুমলা।
তিন নেতার মাজার -- গেটের পাশেই এটি। এখানে ৩ জন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদের কবর রয়েছে। শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক , খাজা নাজিমুদ্দিন এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী
খাজা শাহবাজ মসজিদ - - তিন গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদটি তিন নেতার মাজারের পাশেই ।
শাহজাদা মুহাম্মদ আজমের সময়ে ঢাকার বনিক খাজা শাহবাজ ১৬৭৯ সালে এটি নির্মাণ করেন। মসজিদ থেকে ৫০ ফুট উঁচুতে আছে তার মাজার।
কার্জন হল - - ১৯০৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারী লর্ড কার্জন এর ভিত্তি স্থাপন করেন। ১৯১১ সালে এটি ঢাকা কলেজ ভবন নামে পরিচিত ছিল , ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় এসে বর্তমানে বিজ্ঞান অনুষদের ক্লাস হয়।
মুসা খান মসজিদ - - কার্জন হলের পিছনের দিকে এটি।
মুসা খান ছিলেন ঈশা খান মসনদই আলার পুত্র। পিতার নামে তার পুত্র মুনাওয়ার খান এটি নির্মাণ করেন।
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লার কবর - - মসজিদের পাশেই অযত্ন অবহেলায় আছে ভাষা ও শিক্ষাবিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লার কবর। ১৯৬৯ সালের ১৩ জুলাই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
দোয়েল চত্বর
দোয়েল চত্বর থেকে একটু সামনেই শহীদ মিনার
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস আমার খুব পছন্দের একটি এলাকা।
ক্লাস ৯ অথবা ১০ থেকে এখানে আনাগোনার সাথে আড্ডা দেয়া শুরু। যে কোন বিশেষ দিন গুলোতে এই এলাকা যেন তারুণ্যের উৎসবে পরিণত হয়। যদিও ইচ্ছে ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে রাজনীতির সাথে জড়িত হবো কিন্তু তা আর হয়ে উঠলো না। শুভ কামনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য।
> কিছু তথ্য উইকিপিডিয়া হয়ে ও কিছু দেখুন বাংলাদেশ হতে সংগৃহীত ।
> বানান ভুল ক্ষমা করবেন ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।