আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিশিষ্ট নাস্তিক মামা সত্যান্বেষী মনে করেন: "যেহেতু আংগুর ফল টক, অতএব কাকপাখি নির্বোধ"

We must not exist, our existance is the most impossible thing. নাস্তিক মামাদের কাছে কুইনাইনের মত তিক্ত, অধম কাকপাখি ২ রচিত কুখ্যাত লেখা "যেই কারনে নাস্তিকরা বেওকুব" -- এর সর্বশেষ পোস্টে Click This Link সত্যান্বেষী নামক জনৈক জ্ঞানী নাস্তৈক মামার সাথে আলোচনা চলতেছিল। আলোচনা অনেকদূর পর্যন্ত এগিয়ে গেল। সত্যান্বেষী (!) মামার সাথে কাকপাখির কি কি আলোচনা হইল তাহা উৎসাহী পাঠকের জন্য তুলে দিলাম। ========================================== সত্যান্বেষী: মগজের এই সীমাবদ্ধতা কি শুধুই নাস্তিকদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য? নাকি আস্তিকদের মগজেরও সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে? আর সেই সীমাবদ্ধ মগজ দিয়ে তারা কি করে নিশ্চিত হচ্ছে যে ঈশ্বর আছে? কাকপাখি: ইন্দ্রিয়+মগজের সীমাবদ্ধতা একটা বাস্তব বিষয়। আ্স্তিক হোক আর নাস্তিক হোক, কেউ এই সীমাবদ্ধতার বাইরে না।

কিন্তু সীমাবদ্ধতা উপেক্ষা করার কারনে নাস্তিক মামারা একটা বাস্তবতাকেও উপেক্ষা করে, এই জন্য উনারা বেওকুব। সত্যান্বেষী: মানলাম সেই কারণে নাস্তিক মামারা বেওকুব। কিন্তু একই কারণে আস্তিক মামারাও কি বেওকুব নয়? প্লিজ পিছলাবেন না। কাকপাখি: এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে কিছু কনসেপচুয়াল ব্যাপারে আপনার মতামত জানা দরকার। আমার এই পোষ্টে আমি যুক্তি দিয়ে প্রমান করার চেষ্টা করছি যে মানুষের জ্ঞানের একটা হার্ড লিমিট আছে।

যেহেতু আপনি সীমাবদ্ধতার ব্যাপারটা মেনে নিয়েছেন, কাজেই আমি ধরে নিলাম মনুষ্য জ্ঞানের হার্ড লিমিটের ব্যাপারে আপনি আমার সাথে একমত (একমত না হইলে কেন একমত না সেইটা জানান)। আমরা যখনই ধরে নিব মানুষের জ্ঞানের একটা হার্ড লিমিট আছে তখনই কিছু অনুসিদ্ধান্ত আসবে। ১। বাস্তবতার যেই অংশ মানুষের ইন্দ্রিয় গ্রাহ্য সেইটাই সম্পুর্ন বাস্তবতা নয়। বাস্তবতার বাকি অংশ মানুষের জ্ঞানের অগোচরে আছে।

(যেটাকে আমরা বলতে পারি Hidden Reality, The part of reality that is beyond the hard limit of human knowledge.) ২। ইন্দ্রিয় এবং মগজের ক্ষমতা ব্যাবহার করে বাস্তবতার এই লুকানো অংশ উপলদ্ধি করা সম্ভব নয়। ৩। আমাদের এবং আমাদের চারপাশের সবকিছু বাস্তব। এবং আমরা যেহেতু বাস্তবতার অংশ, অতএব আমরা লুকানো বাস্তবতারও অংশ।

(আমাদের অস্তিত্বের সাথে লুকানো বাস্তবতার সম্পর্ক আছে, এইজন্য জীবন ও মৃত্যুর সংজ্ঞা আমরা দিতে পারি না) ৪। বাস্তবতার এই হিডেন অংশের খানিকটাও যদি আমরা কোনভাবে জানতে পারি, সেইটাই আমাদের অনেক বর্তমান থিওরি এবং কনসেপ্ট র‌্যাডিক্যালি পরিবর্তন করে দিবে। --- এই চারটা অনুসিদ্ধান্তের ব্যাপারে আপনার মতামত জানান, তার পরে আস্তিকরা বেওকুব কিনা, সেইটা আলোচনা করা যাবে। সত্যান্বেষী: আপনার ৩টা অনুসিদ্ধান্ত মেনে নিলাম। শুধু ৪ নম্বরটায় একটু আপত্তি: "বাস্তবতার এই হিডেন অংশের খানিকটাও যদি আমরা কোনভাবে জানতে পারি, সেইটাই আমাদের অনেক বর্তমান থিওরি এবং কনসেপ্ট র‌্যাডিক্যালি পরিবর্তন করে দিবে।

" আমাদের মূল প্রিমিজ কিন্তু মস্তিষ্কের সীমাবদ্ধতা। সেটাকে প্রধান করেই এগুতে হবে। এই যে বললেন "বাস্তবতার এই হিডেন অংশের খানিকটাও যদি আমরা কোনভাবে জানতে পারি", আমাদের এই "খানিকটা জানায়"ওতো ভুল হতে পারে। মস্তিষ্কের সীমাবদ্ধতা মেনে নিলে তো সব জানা-বোঝাকেই চ্যালেঞ্জ করতে হয়। যেমন কেউ এসে বলল - মহাবিশ্ব একজন বুদ্ধিমান অস্তিত্ত্বের দ্বারা সৃষ্ট এবং নিয়ন্ত্রিত।

তার কথাটা যদি আমরা মেনে নেই তাহলে তো এমনও হতে পারে আমাদের মস্তিষ্কের সীমাবদ্ধতার কারণেই, তথা নেহাত বোকা-সোকা হওয়ার কারণেই সেটা মেনে নিলাম। এই সীমাবদ্ধ মস্তিষ্ক নিয়ে এব্যপারে কিভাবে আপনি নিশ্চিত হলেন? কাকপাখি: প্রথম অনুসিদ্ধান্ত যদি আপনি মেনে নেন, তার মানে হল, আপনি মেনে নিচ্ছেন যে বাস্তবতার দুইটি অংশ, ১। জানা অংশ+সম্ভাব্য জানা অংশ (সম্ভাব্য জানা অংশ = ইন্দ্রিয় এবং মগজের ক্ষমতা ব্যাবহার করে যেই অংশটুকু মানুষ জানতে পারবে) ২। বাস্তবতার বাকি অংশ যেইটা মানুষের পক্ষে শুধুমাত্র ইন্দ্রিয় এবং মগজের দ্বারা কখনো জানা সম্ভব হবে না। বাস্তবতার এই ২য় অংশ, যেইটাকে আমরা হিডেন রিয়েলিটি বলতেছি, সেইটার ব্যাপারে তখনই শুধু জানা সম্ভব হবে যদি কারো মাধ্যমে সেইটা জানানো হয়।

এবং ততটুকুই জানা এবং বুঝা সম্ভব হবে যতটুকু জানতে এবং বুঝতে দেওয়া হয়। --- এই কথাগুলোর সাথে আপনি একমত কিনা জানান। ৪র্থ অনুসিদ্ধান্তের ব্যাপারে বলি: আপনি যদি বিজ্ঞানের অগ্রগতির ইতিহাস দেখেন, তাইলে দেখবেন, বস্তুবাদি জ্ঞানের সীমানা বাড়ার সাথে সাথে মানুষের অতীতের অনেক থিওরি আংশিক বা পুরোপুরি বাতিল হয়ে গেছে। মনে করেন, জ্ঞান চর্চা করতে করতে মানুষের জ্ঞান হার্ড লিমিট পর্যন্ত পৌঁছিয়ে গেল (বিজ্ঞানের সব শাখায় ব্যাপারটা একসাথে পৌছাবে না, এবং অনেক ব্যাপার এমন থাকতে পারে যেইগুলো মানুষ আংশিক জানতে পারবে)। হার্ড লিমিটে পৌঁছানোর পরে যদি কোন ভাবে বাস্তবতার আরো খানিকটা অংশ কোন ভাবে জানা যায়, তাইলে তখন পর্যন্ত জানা অনেক থিওরি এবং কনসেপ্ট আংশিক বা পুরোপুরি বাতিল হয়ে যাবে।

বিশেষ করে আংশিক জানা অংশগুলি পূর্নতা পাওয়ার পরে দেখা যাবে আগের ধারনাগুলি অনেকাংশে ভূল ছিল। ---এই পর্যন্ত পড়ে আপনার অনুভুতি কি, সেইটা জানান। সত্যান্বেষী: "বাস্তবতার এই ২য় অংশ, যেইটাকে আমরা হিডেন রিয়েলিটি বলতেছি, সেইটার ব্যাপারে তখনই শুধু জানা সম্ভব হবে যদি কারো মাধ্যমে সেইটা জানানো হয়। এবং ততটুকুই জানা এবং বুঝা সম্ভব হবে যতটুকু জানতে এবং বুঝতে দেওয়া হয়। " এইখানেই প্রমান করলেন আপনি যে কতবড় নির্বোধ।

বস্তুত: আপনাকে এই জায়গাটাতেই নিয়ে আসতে চেয়েছিলাম। কাকপাখি: এত সহজে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন দেখে হতাশ হলাম। আরো ক্রিটিক্যাল কমেন্ট আশা করছিলাম। আপনার "আমাকে নির্বোধ প্রমান করা" কমেন্টের উত্তরে একটা উদাহরন সহ কথা বলি: মনে করেন একটা জেলখানায় কিছু মানুষকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। জন্মের পর থেকে একটা নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত তাদেরকে সেইখানেই থাকতে হবে।

তাদের সাথে বাইরের জগতের কোন যোগাযোগ নেই। এমতাবস্থায় বাইরে থেকে তাদের মধ্যে একজনের সাথে যোগাযোগ করা হল। তাকে বলা হল, বাইরের জগতে সারভাইভ করতে হলে নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে প্রশিক্ষন নিয়ে আসতে হবে। যোগাযোগ কৃত ব্যক্তি জেলখানার অন্যান্য বন্দিদের এই খবরটা পৌছাঁতে লাগল। কিছু সংখ্যাক বন্দি তার কথায় বিশ্বাস করল বাকিরা অবিশ্বাস করল।

এখানে জেলখানার বাইরের জ্ঞান ততটুকুই বন্দিদের কাছে থাকবে, যতটুকু তাদেরকে জানানো/ বুঝতে দেওয়া হয়েছে। একই রকম ভাবে বাস্তবতার লুকানো অংশের জ্ঞানও মানুষের কাছে ততটুকুই থাকবে যতটুকু মানুষকে জানতে এবং বুঝতে দেওয়া হবে। আমাকে নির্বোধ বলে মনে সুখ পাইলে আরো বলেন, কোন সমস্যা নাই। কিন্তু কোন যুক্তিতে কথাটা বলছেন সেইটা পরিশ্কার করে উল্লেখ করলে ভাল হইত আরকি। ========================================== ---------- এই পর্যন্ত আসার পরে সত্যান্বেষী মামা মনেহয় সত্যের অন্বেষন কিছুক্ষনের জন্য বন্ধ করে রাখছেন।

একটা ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হইল সত্যান্বেষী মামা এখন পর্যন্ত মানুষের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা বিষয়ক অনুসিদ্ধান্তের উপরে অন্যান্য যে কোন নাস্তিক মামা থেকে সবচেয়ে বেশী আলোচনা করছেন। কিন্তু অনেকদূর এগিয়েও একটা পর্যায়ে এসে "আংগুর ফল টক" টাইপের একটা কথা বলে মানে মানে কেটে পড়েছেন। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.