একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানকে আদালতের দেওয়া দণ্ডাদেশ নিয়ে আইনজীবী, শিক্ষাবিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও দেশের বিশিষ্ট কয়েকজন নাগরিক তাঁদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। এখানে তা তুলে ধরা হলো:
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, ‘এ রায়ে আমরা স্বস্তি প্রকাশ করছি। আমরা মনে করি, এর মাধ্যমে একাত্তর সালে জামায়াতে ইসলাম ও তাদের সহযোগী বাহিনী আলবদর, আলশামস, শান্তি কমিটি, রাজাকার বাহিনীর ভূমিকা আরও স্পষ্ট হয়েছে। ’
যে দুটি অভিযোগ থেকে কামারুজ্জামান খালাস পেয়েছেন, ওই দুটি অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে আপিল করা হবে কি না, জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলো ডটককমে বলেন, ‘রায়ের কপি দেখে সিদ্ধান্ত নেব। ’
মফিদুল হক
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক বলেন, আজকের রায় ঐতিহাসিক।
মুক্তিযুদ্ধের অনেক ঘটনা ও বিচারের ন্যায়সংগত যে ভিত্তি, তা রায়ে পরিষ্কার হয়েছে। রায়ে আইনের ব্যাখ্যা এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচারে অন্যান্য দেশের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। মুক্তিযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের অধিকারের যে স্বীকৃতি, তা রায়ে নিশ্চিত হয়েছে।
উপাচার্য আনোয়ার হোসেন
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আনোয়ার হোসেন বলেন, জামায়াতে ইসলামী, আলবদর, রাজাকারসহ অন্যান্য স্বাধীনতাবিরোধী সংগঠনের অপরাধের বিষয়টি এ রায়ে সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এতে স্বাধীনতাবিরোধী এসব সংগঠনের বিচারকাজ আরও সহজ হবে।
মুনতাসীর মামুন
ইতিহাসবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘আমি মনে করি, রায়টি অনেক সুনির্দিষ্ট ও ভালো হয়েছে। আমরা ৪২ বছর ধরে এ রায়ের জন্য অপেক্ষা করছি। যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে তরুণ প্রজন্ম যে আন্দোলন শুরু করেছেন, সেই আন্দোলনকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, তরুণেরা এ রায়ের ফলে শান্তিতে ঘুমাতে পারবেন। ’
শাহরিয়ার কবীর
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবীর বলেন, ‘এ রায় প্রত্যাশিত ছিল। ৩০ লাখ শহীদ পরিবারের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়েছে।
রায়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো কমান্ড রেসপনসিবিলিটি। যেটা হচ্ছে নেতৃত্বের দায়বদ্ধতা। কামারুজ্জামান আলবদরের নেতা ছিলেন। তাঁর বাহিনী যে অপরাধ করেছে, এর দায় তিনি এড়াতে পারেন না। এ বিষযটি রায়ে উঠে এসেছে।
’
নাসির উদ্দীন ইউসুফ
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দীন ইউসুফ প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘এই রায়ের ফলে সন্তুষ্টি প্রকাশ করছি। স্বস্তি প্রকাশ করছি। একাত্তর সালে জামায়াত যুদ্ধাপরাধ করেছিল। সেই যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত করার ক্ষেত্রে আলবদর ছিল প্রধান ভূমিকায়। সেই কিলিং স্কয়ারের অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক কামারুজ্জামানের রায় হলো।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হলো। এতে আমরা সন্তুষ্ট। ’
গোলাম আরিফ টিপু
রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি গোলাম আরিফ টিপু বলেছেন, সারা দেশের মানুষ এ রায়ের জন্য অপেক্ষা করছিল। মৃত্যুদণ্ডাদেশ হওয়ায় রাষ্ট্রপক্ষ যে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করেছে, রায়ে তা প্রতিফলিত হয়েছে।
হেলাল মোরসেদ
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হেলাল মোরসেদ প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘আজকের রায়ে দেখলাম, সাতটি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সবাই আনন্দিত হয়েছি। আমরা চাই, ভবিষ্যতে এ ধরনের যেসব রায় হবে, সেগুলোর দণ্ডও একই হবে। এতে আমরা আনন্দিত হব, খুশি হব, উদ্বেলিত হব। আশা করি, এ রায় আপিল বিভাগে বহাল থাকবে। দণ্ড কার্যকর হবে।
’।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।