আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলা একাডেমী প্রাঙ্গনে বইমেলা প্রাণ হারাচ্ছে - একান্ত আলাপচারিতায় বিশিষ্ট কবি নির্মলেন্দু গুণ

মুক্তমত প্রকাশের প্লাটফর্ম ব্লগ। তাই ব্লগে বসতে ভা্ল লাগে....। ঢাকার শহরে বর্তমানে এক কোটিরও বেশি লোকের বাস। অথচ ঐতিহ্যবাহী এই বইমেলা যখন প্রথম শুরু হয় তখন এখানে লোক ছিল ২৫ লাখ। সময়ের সাথে সাথে পাঠক-প্রকাশক-লেখক ও মিডিয়া সবই বেড়েছে।

একই প্রাঙ্গণে আবার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হয়। কিন্তু মেলার পরিধি খুব বেশি বাড়েনি। আসলে প্রতিবছর মেলা প্রাঙ্গনে যে ভিড় হয় তাতে বইমেলা তার নিজস্ব চরিত্র প্রকাশ করতে পারছে না। এখন মেলার দায়িত্ব নিয়েছে বাংলা একাডেমী। অথচ এই বইমেলার শুরু হয়েছিল প্রকাশকদের হাত দিয়ে।

পরে আশির দশকে বাংলা একাডেমী এ মেলা আয়োজনের উদ্যোগ নেয় এবং নানা প্রচারমাধ্যমে মেলাটাকে জনপ্রিয় করেছে। তবে আমার মনে হয়েছে বাংলা একাডেমী মেলার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বইমেলা আসলে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কেননা বইমেলা করার জন্য বাংলা একাডেমীকে কেউ বলেনি। তারা একুশের আবেগকে পুঁজি করে মেলাকে তাদের তত্ত্বাবধানে রাখতে চায়। বস্তুত বাংলা একাডেমী প্রাঙ্গনে বইমেলা প্রাণ হারাচ্ছে।

সম্প্রতি একান্ত আলাপচারিতায় বইমেলা সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রখ্যাত সাহিত্যিক নির্মলেন্দু গুণ এভাবে তার মনোভাব ব্যক্ত করেন। বইমেলার আয়োজন সর্ম্পকে তিনি বলেন, মোড়ক উন্মোচন বাংলা একাডেমীতে হতে পারে। আমার মনে হয় ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক বইমেলার আয়োজন যেখানে হয়, সেখানে এই মেলার আয়োজন করা যেতে পারে। জায়গা কম বলে পথের পাশে রাস্তায় স্টল বসে। এভাবে জায়গা আটকে মেলা করা তো ঠিক নয়।

আমার তো মনে হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে মাঠ সেখানে মেলা হলে ভালো হয়। আমার মতে, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র এবং প্রকাশকরা মিলে বইমেলার আয়োজন করা হবে সঠিক কাজ। জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের জন্মই বইকে প্রোমোট করার জন্য, অপরদিকে বাংলা একাডেমীর কাজ ভিন্ন। বইমেলার আয়োজন করায় একাডেমী যেমন নিজে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে, তেমনি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বইমেলাও। বাংলা একাডেমীর নীতিমালা বা কর্মকা-ের সাথে এটা যায় না।

মেলায় স্টল ও বই বাড়ছে কিন্তু কমে যাচ্ছে জায়গা। আমার মনে হয়, বাংলা একাডেমীকে বাণিজ্য থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত রাখতে হবে। মেলায় বিষয়ভিত্তিক সেমিনারগুলো সর্ম্পকে তিনি বলেন, মেলা উপলক্ষে এগুলোর কোনো দরকার নেই। বছরের অন্যান্য সময়ে বাংলা একাডেমী এমনিতেই এটা করতে পারে। যারা বই কিনতে যায় তারা বই-ই কিনবে, আবার যারা গান শুনতে যায় বা বক্তৃতা শুনতে যায় তারা কেবল গান আর বক্তৃতাই শুনবে।

বই কিনতে গিয়ে তো ওইগুলি শোনার দরকার নেই। বাংলা একাডেমীর জায়গা ছোট। যে কারণে লোকজনের ভিড় লেগেই থাকে। ক্রেতার চেয়ে দর্শকের সংখ্যাই এখানে বেশি। সব সময় মানুষের ভিড় লেগে থাকে।

আমি আগেও অনেকবার বলেছি, এখনো বলছি, বাংলা একাডেমী থেকে বইমেলাকে সরাতে হবে। এবারের বইমেলা সর্ম্পকে নির্মলেন্দু গুণের মন্তব্য অনেকটা আক্রমানাত্মক। তিনি বলেন, কাগজ ভরানোর জন্য এখন অনেকেই লিখছেন। বইমেলাও এসব বইয়ের আগ্রাসন থেকে মুক্ত থাকতে পারে নি। তিনি বলেন, প্রথম কয়েক দিন আমি মেলায় যাইনি।

এখন মেলায় প্রতিদিন ৮টার পরে যাই, ঘণ্টাখানেক থাকি।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.