সাদা কুয়াশা জ্যোস্না রাত, দেয়ালে তোমার ছায়া,আমি আঁধারে একা হেটে যাই,বুঝি না কোনটা ভালোবাসা আর কোনটা মায়া । আমাদের দেশে বাসের দুরবস্থা আর যানজট ,রাস্তা ঘাট ভাঙ্গা চুরা সব মিলিয়ে আমদের বাসা থেকে কর্মস্থলে যাওয়ার পথটা পেরুতে আমদের নানান রকম ঝক্কি ঝামেলা পোহাতে হয়। উন্নত দেশে বাস,রাস্তা ঘাট অনেক উন্নত। ,নেই কোন যানজট,সব মিলিয়ে বলা যায় খুবই ভালো সুযোগ সুবিধা।
তারপরও কিছু সমস্যা মাঝে মাঝে আপনাকে বেশ বিব্রত করবে।
তার ই কিছু কথা আজ লিখব।
আমার কানে মোবাইল। এক কলিগের সাথে কথা বলিতেছি। কোনোরকম তোয়াক্কা না করিয়া,কথা বলিতে বলিতে উঠিয়া পড়িলাম। সিটে বসতে যামু।
এই টাইমে মামু দিলো ডাক। একটু ঝারি সহকারে বলিল, ও হে তুমি কত ব্যস্ত টা আমি বুঝিবার চাহি না। ঊঠার সাথে সাথে নিয়ম অনুযায়ী টাচ
অন করিতে হইবে। মনে করছে,আমি ফাঁকি দিবার লাইগা এমন ভান ধরছি। আমি সবিনয়ে দুঃখিত বলিয়া টাচ অন করিয়া সিটে আসিয়া বসিলাম।
মনে ভাবিলাম,বাংলাদেশ হইলে তোরে বুঝাইতাম। আমি চুপ করিয়া বসিয়া রইলাম। মামুর পাশের সিটে,মানে আমাদের
দেশে যেখানে মহিলা সিট থাকে,সেখানে লাস্যময়ী এক কন্যা বসিয়াছেন। বাস চলা আরম্ভ করিল। ওমা মামু দেহি।
ফিল্ডিং মারা শুরু করিছে। ভাবতাম আমাগো দেশের মামুরাই খালি ফিল্ডিং মারে। এখন তো দেহি,ঢেকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে। মামু গাড়ি চালায় আর ফিল্ডিং মারে। আমি দেহি গাড়ি চালানোর চেয়ে মামুর ফিল্ডিং এ নজর বেশি,যারে বলে কু নজর।
মনে ভাবলাম, চালাও মামু, গাড়ি না, ফিল্ডিং চালাও। ব্রেক তোমার কষা লাগব না,আমি আজকা তুমার ব্রেক কষুম। বাস থামিল আমার গন্তব্য। আমি এবার টাচ অফ করিলাম। করিয়া কিঞ্চিত উঁচা বলিলাম, যে ড্রাইভার সাহেব,গাড়ি চালানোর সময় কথা বলা ঠিক না,
যে কোন সময় অঘটন ঘটতে পারে, আপনি যে ভাবে মোড় ঘোরার সময় প্যাসেঞ্জার এর সাথে কথা বলিতেছিলেন,ইহা ঠিক নহে।
আমি আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ করিব। মামু কিঞ্চিত নড়িয়া বসিল। এবং আমাকে দুঃখিত বলিল। আমি মাফ করিয়া দিলাম। প্রতিশোধ নেই নাই,কাটা দিয়া কটা তুললাম
আর কি।
আরেকদিলের কথা বাসে উঠিয়াছি. এয়ারপোর্ট এর উদ্দেশ্য। বাস ভর্তি চাইনিজ। বাস চলছে। হটাৎ এয়ারপোর্ট এর আগের স্টপেজ আসিয়া মামু ঘোষনা দিল,বাস আর যাইবে না। উহার কারন সামনে বিরাট না গরু ছাগলের হাট না, দুর্ঘটনা ঘটিছে।
সব্বাইকে নিজ দায়িত্বে
গন্তব্যে যাইতে হইবে। কি আর করা, দুঃখ ভরাক্রান্ত বাস হইতে আমি সহ ১৫ জন যাত্রী নামিলাম। সবাই এদিক ওদিক চায়। কি করা যায়। কিছু যাত্রী,যাদের একটু পড়ে ফ্লাইট,তাহারা অতীব দুশিন্তাগ্রস্ত হইয়া পড়িলেন।
এ সময় ভিনদেশি ময়ূরী না মানে একটু নাদুস-নুদুস একটা
মেয়ে প্রস্তাব করিল, আমি মাইক্রো সমেত একটা টেিক্স কল করি। আমরা সবাই মিলে ভাড়া ভাগ করে দিয়ে দিব। সবাই ভিনদেশি ময়ূরীর কথায় রাজি হইয়া গেলো। কিন্তু সমস্যা বাঁধিল ভাড়া যদি আসে ৩৫ ডলার তবে সবার কাছে খুচরা না ও থাকিতে পারে। আর কেই
বা ডলার কালেক্ট করিবে মানে কেই বা কন্ট্রাক্টর হইবে।
এই চিন্তা করিতে করিতে টেিক্স আসিয়া পড়িল। আমি চট জলদি ড্রাইভারের পাশের সিটে বসিয়া পড়িলাম। অবশেষে এয়ারপোর্ট আসিলাম। ভাড়া নিয়া গেঞ্জাম লাগার আগেই এক চাইনিজ ভদ্রলোক পূরো ভাড়া
দিয়া দিলেন এবং বলিলেন কাঊকে ভাড়া দিতে হইবে না, সবাই তাকে থ্যাংকু দিয়ে যে যার রাস্তায় চলিয়া গেলো।
ইহা আরেকদিনের ঘটনা।
ঝুম বৃষ্টি পড়িতেছে। বাসিয়া উঠিয়া মনে হইল, বেশ রোমান্টিক আবহাওয়া। দেখা যাক কপালে কি আছে। বাসে যাত্রী সংখ্যা ৫ জন,আমি সহ। যার মধ্যে একজনই নারী।
আমার কাছে কোনো ছাতা নেই। হঠাত গন্তব্য থেকে ৫ মিনিট দূরত্বে বাস বন্ধ হইয়া গেলো। ড্রাইভার মামু অনেক চেষ্টা করিয়া ও স্টার্ট দিতে পারল না। বৃষ্টির দিন তো মনে হয় ব্যাটারি ডাঊন হইয়া গেছে। যাই হোক এই পথ হাটিয়া যাইতা কমছে কম ১৫-২০ মিনিট
লাগিবে।
তার উপর আমার কাছে নাই ছাতা,কাজ করছে না মাথা। কি করি, কিন্তু বাস হইতে তো নামিতে হইবে। কি আর করা ভিজিয়া ভিজিয়া আজ কাজে যাইতে হইবে। বাস হইতে নামিয়া যে যার মত হাটা ধরল। আমি হাটছিলাম,আমার সাথেই নামল, বাসের একমাত্র
নারী যাত্রী।
কিছিক্ষন পর উনি খেয়াল করল আমি ভিজছি। মধুর স্বরে ডাক, আরে আপনি ভিজছেন কেনো? আসুন আমরা ছাতাটা শেয়ার করতে পারি। তারপর আর কি একসাথে দুজন হাঁটতে থাকলাম। মনে হলো কাজে না গিয়ে দূরে কোথাও হারিয়ে যাই। মেয়েটা দেখতেও বেশ।
বাস টা আজ নষ্ট না হলে, এই সুযোগ কি পেতাম। রোমান্টিক আবহাওয়ায় বেশ রোমান্টিক সময় কাটল।
ঘটনাগুলো খুবই সাধারন কিছু ঘটনা। বিছিন্ন কিছু দিনের বিচ্ছিন্ন কিছু সময়ের চিত্র। আসলে আমি কিঞ্চিত বোঝাতে চাচ্ছি যে,উন্নত দেশ সব সুযোগ সুবিধা থাকার পরও, চলতে ফিরতে অনেক সময় অনেক সমস্যায় পড়তে হয়।
সমস্যা সব দেশেই আছে,
সবার জীবনেই আছে তবে হয়তোবা ভিন্ন ভিন্ন রুপে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।