আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একজন কল গার্ল যা পারে আমরা তাও পারিনা!! কতটা নিচে নেমেছি আমরা??

গতকাল রাতের ঘটনা। শ্যামলী থেকে মিরপুরে বাসায় ফিরব কিন্তু কোন বাস পাচ্ছি না। হঠাৎ করেই একটা মিরপুর সুপার লোকাল বাস পেয়ে গেলাম একদম ফাকা। অনেকেই দৌড় দিল উঠতে দেখে আমিও দৌড় দিলাম, কিন্তু বাস এ উঠে দেখি মাত্র ৮/৯ জন উঠেছে। যাত্রীদের মধ্যে ১ জন ছিল মহিলা আর ১ জন একটা মেয়ে।

তাদের দুজনকে দেখেই তেমন সুবিধার মনে হচ্ছিলনা। বাকি সবাই সেটা লক্ষ করল খেয়াল করলাম। যাইহোক, আমার কি! যা মন চায় সে তা হোক! মেয়েটা প্রথমে মহিলার সাথে মহিলা সিট (ড্রাইভার এর ডান দিকে যে বরাদ্দকৃত) তাতে বসলেও কল্যাণপুর এসে অন্য একটা সিটে এক ভদ্রলোকের সাথে বসলো (যেখানে অনেক ডাবল সিট ফাঁকা ছিল)। আর সে স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশীই চেপে বসেছিল। ওই লোক কিছু না বল্লেও বেশ বোঝা যাচ্ছিলো ছাইরা দে মা কাইন্দা বাঁচি অবস্থা! দারুস সালাম থেকে এক লোক উঠলো।

কন্ট্রাক্টর ভাড়া চাইলে তিনি ১০ টাকার একটা নোট দিলে কন্ট্রাক্টর ৫ টাকা রেখে বাকি ৫ টাকা ফেরত দিল। এরপরেই ঘটনা শুরু- লোকটাঃ ওই বেটা ৩ টাকা ভাড়া ৫ টাকা রাকসস ক্যান? কন্ট্রাক্টরঃ ৫ টাকাই ভাড়া। লোকটাঃ এই রোডের ভাড়া ৩ টাকা। তুই চাইলেই হইব? কন্ট্রাক্টরঃ আমি চাইলে ক্যান। ভাড়া ৫ টাকাই।

মাঝে মেয়েটি বললঃ ভাইয়া উনি, সবার কাছ থেকেই ৫ টাকা করে ভাড়া নিয়েছে। লোকটাঃ আমার কাছ থাইকা মাদারছদ নিতে পারবনা। লোকটাঃ খাড়া তোর বাপেরে ফোন দিতাসি। স্পিকার দিয়া শুনামু তোরে কত ভাড়া। কন্ট্রাক্টরঃ শুনানগা আপনে।

লোকটাঃ তোর বাপ (একটা নাম বলল) ফোন দিতাসি। কন্ট্রাক্টরঃ কোন বাপ? লোকটাঃ তুই রোডে গাড়ী চালাস তোর বাপেরে চিনস না? (আবারো সেই নাম বলল) তুই চিনস না! কন্ট্রাক্টরঃ হে কি আমারে খাওয়ায় নাকি? এর মধ্যেই কাওকে ফোনে ট্রাই করছে। ওপাশ থেকে ধরছে না। কয়েকবার করার পর ধরল মনে হল। কাওকে জিজ্ঞেস করল “ওই দারুস সালাম থাইকা আমাগো এক নম্বরের ভাড়া কত মিরপুর সুপার লোকাল বাসে?” ওপাশ থেকে কিছু একটা বলল, এরপর আবার- লোকটাঃ ওই হন খানকির পোলা।

ভাড়া কত তোর। কন্ট্রাক্টরঃ আমার হুইনা কাম নাই। লোকটাঃ তোরে হূনতে অইব। হুনবি না ক্যান মাদারচদ। কন্ট্রাক্টরঃ কে ফোন দিসে।

লোকটাঃ তুমার আব্বায়!! [এ পর্যায়ে আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি প্রচণ্ড খারাপ ভাষা ব্যবহার করার জন্য] এবার মেয়েটি আবার বলে উঠলোঃ ভাইয়া আপনি কিন্তু এবার বেশি বলছেন! লোকটাঃ ওই তোর কি, তুই চুপ থাক! মেয়েটিঃ আশ্চর্য!! আপনি ইচ্ছামত ভাড়া দিবেন আবার যাকে তাকে ইচ্ছামত গালি দিবেন এটা কোন ধরনের ভদ্রতা! লোকটাঃ তুই আবার কথা কস! তুই কি কল গার্ল! মেয়েটিঃ আপনার ভদ্রতা তো বোঝা হয়ে গেছে। আপনি বাপ-মা তুলে যা ইচ্ছা বলছেন। লোকটিঃ তুই কি? তুই তো কল গার্ল! তোরেই তো রাস্তায় ফেইলা চুদা উচিৎ!! মেয়েতিঃ ওই মুখ সামলাইয়া কথা বলেন। লোকটিঃ ওই মাগি! তোর লগে কি মুখ সামলাইয়া কথা কমু?? এসি রুমে নিয়ে চুদি তোরে চল!! মেয়েটিঃ ওই তোর মায়েরে নিয়া যা তোর এসি রুমে! লোকটিঃ মাগির ঘরের মাগি তোরে নিয়া যামু আমি! ওই তুই চিনস কে আমি?? মেয়েতিঃ তোরে চিনা লাগবনা আমার। তুই হইলি আরেক মাগির ঘরের পোলা! তোর মারে চুদস না তুই?? লোকটিঃ খানকি মাগি! মেয়েটিঃ তোর যা খুশি তাই বলবি।

বাসের একটা লোকও একটা কথা বলে নাই খানকির পোলা! লোকটাঃ কইব ক্যান? পুরা বাসে তুই একমাত্র মাগি! ওই কয় টাকা নেস তুই লাগাইতে!! এই রকম আরও নানা কথা বলতে বলতে খুব স্বভাবতই ওই দুজনের হাতাহাতির উপক্রম হয়। এই অবস্থায় বাসের বাকি দর্শক! তথা যাত্রীরা তাদের সরিয়ে নিতে চেষ্টা করে। বাসটি ততক্ষণে চাইনিজ এ এসে থেমে আছে। তাদের বাক্য বিনিময় চলছেই……...... লোকটাঃ কল গার্ল! আজকে তোরে যদি আমি না চুদসি! মেয়েটাঃ যা মাদারচদ তোর মায়েরে গিয়া চদ! আরও বেশ কিছু উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় শেষে এবারে বাসের যাত্রীরা বাসের ড্রাইভার কে বলতে লাগলো বাস ছাড়ার জন্য। অবশেষে বাস ছাড়ল।

মেয়েটি তার সিটে গিয়ে বসে বললঃ সব শালা বাইনচদ। আমি একলা প্রতিবাদ! করলাম, একটা লোকও কিছু বললনা। মেয়েটির চোখের কোণে পানির ফোঁটা! একটা ফোন এলো তার। ওপাশ থেকে কিছু বলতেই সে উত্তর দিল- এইতো আম্মু এক নম্বরের কাছাকাছি আর ১০ মিনিট লাগবে বাসায় আসতে। আচ্ছা, বলুন তো? আমরা কি একজন কল গার্লের চেয়েও খারাপ!! যে খুব সাধারণ প্রতিবাদটাও করতে পারিনা?? নিজের প্রতিই লজ্জা হচ্ছে ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.