আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

‘মধ্যরাতে অশ্বারোহী’ আর নেই

‘মধ্যরাতের অশ্বারোহী’ আর নেই। ২০১০ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ফয়েজ আহমদ যখন গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তখন তাঁর সাক্ষাৎকার নেওয়ার সুযোগ হয়েছিল আমার । তখনো তিনি ভাল করে কথা বলতে পারছিলেন না। সাক্ষাৎকার ভিত্তিক রিপোর্টটি ছাপা হয়েছিল মানবজমিন পত্রিকায়। তারই একটা অংশ তুলে দেওয়া হল... গুরুতর অসুস্থ হয়ে গত মঙ্গলবার থেকে শাহবাগের ইব্রাহীম কার্ডিয়াক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন সাংবাদিক ফয়েজ আহমদ।

গত এক দশক ধরে তিনি হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, চোখ ও কানের সমস্যাসহ বিভিন্ন ধরনের বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছেন। হাসপাতালের ৫০২ নম্বর রুমে ডাক্তারের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। তার স্বজনরা জানান, ১৯৯৯ সালে হার্টের অ্যাওর্টিক ভাল্ব প্রতিস্থাপন করার পর থেকেই তিনি বিভিন্ন ধরনের রোগে ভুগছেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রফেসর ড. এম. মাকসুমুল হক জানান, ফয়েজ আহমেদের ব্লাডের সুগার কমে গেছে। এছাড়া ইউরিনেও সমস্যা দেখা দিয়েছে।

তবে গতকাল থেকে অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। ফয়েজ আহমদ ১৯২৮ সালে ঢাকা জেলার বিক্রমপুরে জন্মগ্রহণ করেন। দৈনিক সংবাদ পত্রিকার মধ্য দিয়ে তিনি সাংবাদিকতার জগতে প্রবেশ করেছেন। এরপর দৈনিক ইত্তেফাক, আজাদী, চীনের বিদেশী ভাষা ইনস্টিটিউট, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র এবং সরকারি সংবাদ সংস্থা ‘বাসস’-এ কাজ করেছেন। ১৯৭১ সালের মার্চে নিজের সম্পাদনায় ‘স্বরাজ’ নামে একটি কাগজ বের করেন।

তবে চারদিন পরেই পাকিস্তানি আর্মি পত্রিকাটি ধ্বংস করে দেয়। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে কাজ করার সময় তিনি সাংবাদিকতা ছাড়াও ‘পর্যবেক্ষকের দৃষ্টিতে’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান করতেন। ক্ষুরধার লেখনীর জন্য তাকে নানান সময় সেনা শাসকের চক্ষুশূলে পরিণত হতে হয়েছে। এজন্য কারাভোগও করেছেন। প্রথমবার আইয়ুব খানের শাসনামলে তিনি কারাবন্দি হন।

চার বছর পরে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর প্রায় একবছর নজরবন্দিতে ছিলেন। পরবর্তীতে স্বৈরশাসক এরশাদ সরকারের সময়ে তিনি আবারও কারাবন্দি হন। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ প্রেস ক্লাবের ভেতরেই তিনি পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে আহত হন। আহত অবস্থায়ই তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়। তার লিখিত প্রায় শ’ খানেক বই আছে।

এর মধ্যে ‘মধ্যরাতের অশ্বারোহী’, ‘ওয়ান হানড্রেড পোয়েমস অব ফয়েজ আহমেদ’, ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা ও বাংলার বিদ্রোহ’ অন্যতম। গত গ্রন্থমেলায় বাংলা একাডেমী তার এক শ’টি ছড়া ইংরেজিতে অনুবাদ করে প্রকাশ করে। লেখালেখির জন্য তিনি বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে একুশে পদক, বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার, শিশু একাডেমী পদক, কবীর চৌধুরী পুরস্কার প্রভৃতি। ## ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।