যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ইস্যুতে আন্তর্জাতিকভাবে চূড়ান্ত গণসংযোগ শুরু করেছে জামায়াত ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলো। বাংলাদেশে ক্ষমতাসীনরা বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিকে কোণঠাসা করতেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের নামে প্রহসন করছে_ এই অভিযোগ করে ব্যাপকভাবে প্রচার শুরু করেছে তারা। এ বিষয়ে জামায়াতকে পুরোপুরি সহযোগিতা দিচ্ছে বিএনপি। সূত্রমতে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত ট্রাইব্যুনালকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে তারা।
তারা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, সংগঠন, লেখক, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবীসহ ও জনপ্রিয় প্রচারমাধ্যমে ব্যাপক যোগাযোগ করছে।
এজন্য অঢেল অর্থও খরচ করা হচ্ছে।
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আটক জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর গোলাম আযমের বিচারে যা-ই হোক না কেন, তা হবে নাটকীয়। তার বিচার হলে বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সৃষ্টি হবে_ এমন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কাতারভিত্তিক জনপ্রিয় টিভি 'আল-জাজিরা'। গত বুধবার 'বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত' শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে তারা। নিকোলাস হকের করা ওই প্রতিবেদনে গোলাম আযমের সাফাই গেয়ে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সাবেক রাজনীতিবিদ গোলাম আযম ৪০ বছরেরও বেশি সময় আগে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে বিচারের মুখোমুখি।
৮৯ বছর বয়সী গোলাম আযম হাঁটতে পারেন না, দেখতে পান না, এমনকি শুনতেও পান না। তা সত্ত্বেও ১০ জন সশস্ত্র পুলিশ কর্মকর্তা সার্বক্ষণিক তাকে পাহারা দিচ্ছেন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতি জাতিসংঘের ওয়ার্কিং গ্রুপ এক শুনানিতে গোলাম আযম ও অন্য অভিযুক্তদের আটক করে রাখার বিষয়টিকে অযৌক্তিক ও আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী বলে অভিহিত করেছে।
অন্যদিকে বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের নামে বিচারের প্রহসন চলছে অভিযোগ করে ব্রিটেনে একটি আন্তর্জাতিক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। ব্রিটেনে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন, আইনজীবী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা গত সোমবার সেমিনারে বাংলাদেশে ট্রাইব্যুনালের নিন্দা জানান।
লন্ডন মুসলিম সেন্টারে এ সেমিনারের আয়োজন করে আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাত দুটি মানবাধিকার সংস্থা। এতে বক্তারা দাবি করেন, সরকার আন্তর্জাতিক মহলের আপত্তি উপেক্ষা করে সম্পূর্ণ দলীয় লোকদের দিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করতে চাইছে। এ বিচার বিরোধী দল দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হলে তা আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা পাবে না।
এদিকে, বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন, যুদ্ধাপরাধের বিচার বন্ধ ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের মুক্তির দাবিতে 'অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ ফোরাম' নামে একটি সংগঠন সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে। সমাবেশে নেতারা দাবি করে বলেন, জামায়াতের সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর প্রহসনের বিচার ত্বরান্বিত করে এই সরকার একটি বিষয়ই প্রমাণ করতে চাইছে_ ইসলাম নিয়ে যারা সোচ্চার তাদের কণ্ঠকে চিরতরে স্তব্ধ করে দেওয়া।
এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আসামি পক্ষের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক দৈনিক ডেসটিনিকে বলেন, ট্রাইব্যুনালের বিচার কাজ নিয়ে জাতিসংঘের অভিযোগের জবাব দিতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। আর তাই প্রমাণ হয়েছে ট্রাইব্যুনালে বিচারের নামে অবিচার করা হচ্ছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, আন্তর্জাতিক এনজিও, যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধাপরাধসংক্রান্ত অ্যাম্বেসেডর এবং স্বনামধন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন ও সংবিধান বিশেষজ্ঞরা এর (ট্রাইব্যুনাল) সমালোচনা করেছেন বলে দাবি করেন তিনি। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।