সন্দেহভাজন হেফাজতকর্মীর হামলায় গুরুতর আহত হয়ে চিকিত্সাধীন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আরিফ রায়হান ওরফে দীপ আজ মঙ্গলবার ভোররাতে মারা গেছেন। ভোররাত সাড়ে তিনটার দিকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে তিনি মারা যান।
এরপর তাঁর লাশ বুয়েটে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁর জানাজার পর লাশ পিরোজপুরে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। জানাজায় বুয়েটের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, আরিফের বাবা, ভাইসহ আত্মীয়স্বজন অংশ নেন।
গত ৯ এপ্রিল বুয়েটের নজরুল ইসলাম হলে আরিফের মাথায় ও পিঠে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। আরিফ যন্ত্রকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও বুয়েট ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা গত ১৭ এপ্রিল বুয়েটের মেজবাহউদ্দীন নামের এক ছাত্রকে গ্রেপ্তার করে।
মেজবাহ বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। তিনি এম রশীদ হলের ৩০১ নম্বর কক্ষের বাসিন্দা।
মেজবাহ হেফাজতের সমর্থক বলে ডিবি কর্মকর্তারা দাবি করেছেন।
এ ঘটনায় চকবাজার থানায় আরিফের ভাই বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। এ মামলায় মেজবাহকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
ডিবি কর্মকর্তারা দাবি করেন, জিজ্ঞাসাবাদে মেজবাহ বলেছেন, গত ৬ এপ্রিল ঢাকায় হেফাজতের সমাবেশে আসা লোকজনকে খাবার সরবরাহ করায় একটি হলের মসজিদের ইমামকে মারধর করে পুলিশে দিয়েছিলেন আরিফ ও তাঁর বন্ধুরা। এ জন্যই তিনি আরিফের ওপর হামলা চালান।
বুয়েটের উপাচার্য এস এম নজরুল ইসলাম প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘আরিফের মৃত্যুতে আমরা মর্মাহত। একজন শিক্ষার্থীকে আরেকজন শিক্ষার্থী এভাবে আঘাত করে মেরে ফেলতে পারে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা আরিফের উন্নত চিকিত্সার জন্য তাঁকে ভারতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এবং সে অনুসারে কাজও এগিয়েছিল। ’
উপাচার্য আরও জানান, বুয়েটের নিজস্ব তদন্তেও আরিফকে কুপিয়ে আঘাত করার জন্য মেজবাহকে দায়ী করা হয়। তদন্তের পর মেজবাহকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এ ছাড়া, ওই মসজিদের ইমামকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বুয়েটে দোয়া ও মিলাদ: আরিফের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে ৫ জুলাই শুক্রবার বুয়েটের কেন্দ্রীয় মসজিদে বাদ আসর দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
মেজবার ভগ্নিপতি আশরাফুজ্জামান আজ প্রথম আলো ডটকমকে জানান, তাঁরা আপাতত মেজবার মামলাটি নিয়ে আইনি লড়াইয়ে যাবেন না। তাঁদের আশঙ্কা, বর্তমান পরিস্থিতিতে এ ধরনের আইনি লড়াইয়ে গেলে আরও সমস্যায় পড়তে হবে। মেজবাহ বর্তমানে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক রয়েছেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।