আমি প্রথমেই আমাদের সবার প্রিয় সামহোয়ারিন ব্লগ মডারেশনকে অকুন্ঠ চিত্তে ধন্যবাদ জানাই। আমি তাদের ব্লগার ইন্টারেক্টিভ সম্পর্ক ও তাদের দ্রুত ফিডব্যাকের প্রশংসা করছি। আসলে ভুল মানবীয়,দ্রুত তা মেনে নিয়ে শুধরে নেয়ার মধ্যেই আছে আসল মহানুভুতিতা ও সঠিক উপলদ্ধি। আজ কেউ মানুক আর না মানুক,সামহোয়ার ব্লগের সামাজিক মিডিয়া ও বিকল্প মিডিয়ায় একটা গ্রহনযোগ্যতা তৈরী হয়েছে। তাই এতে যখন কোন কিছু স্টিকি করন করা হয়,তা নজর কাড়ে।
সে কারনে স্টিকিকরনের আগে প্রতিবেদনের সত্যতা সর্বাগ্রে প্রয়োজন। কারন সরেজমিন তদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া রিপোর্ট করলে তা যেমন গ্রহনযোগ্যতা পায় না,তেমনি ব্লগের স্থায়ী ক্ষতিসাধন হয়।
আর এসব ব্যাপারে বর্তমানে তদন্ত চলছে। আমাদের সরকারকে আমরা এসব ব্যাপারে অন্তত ধন্যবাদ দিই। তারা এ ব্যাপারে সংখ্যালঘুদের যথেস্ট সাহায্য করছে।
আমরা আমাদের আইন-শৃংখলা বাহিনীদের ধন্যবাদ জানাই। কারন ঘটনার পরই তারা পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিয়েছে। আমরা ভারতের মত সাম্প্রদায়িক নই যে,যেখানে ২০০২ সালে স্বয়ং গুজরাট পুলিশ ,মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে অগনিত মুসলমান হত্যার জন্য দায়ী। ২০০২ সালের মত ন্যাক্কারজনক ঘটনা বাংলাদেশে কখনো ঘটবে না। আমরা আদপেই সাম্প্রদায়িক জাতি না।
আমি জানি এই ব্লগেই অনেকে এ নিয়ে আমাকে আক্রমন করতে পারে। কিন্তু এটাই সত্য আমরা অসাম্প্রদায়িক জাতি।
এবার একটা সত্য ঘটনা শোনাই,সরেজমিন প্রতিবেদন না করে রিপোর্ট দিলে কি বিপর্যয় ঘটতে পারে। ঘটনাটা সরেজমিন সাংবাদিকতার প্রতিকৃত সাংবাদিক মোনাজাত উদ্দিনের। তিনি জানান,কিভাবে এক মূর্খ লোক তাদের সমস্ত সাংবাদিকদের হাতে কলমে শেখান যে,সরেজমিন প্রতিবেদন কাকে বলে?ঘটনাটা ১৯৭৪-৭৫ সালের।
তিনি তখন সংবাদ পত্রিকায় কাজ করেন। রংপুর প্রেসক্লাবের বাইরে এক লোক পান-সিগারেটের দোকান করতো। সাংবাদিকরা সবাই তার ক্রেতা ছিলো। বলতে গেলে সে ছিলো সাংবাদিকদের বন্ধু। সে একদিন মোনাজাত উদ্দিনদের বললো,ভাই আপনারা কি খবরের জন্য ঘটনাস্থলে জান না?কারন আমি প্রায়ই দেখি,আপনারা ক্লাবেই বসে থাকেন প্রায় সময়।
তাহলে সাংবাদিকতা কখন করেন। মোনাজাত উদ্দিন আর তার কাছে বললেন না যে তারা অনেকটা গ্রুপ বেধে কাজ করেন। অর্থাত খবর যেই আনুক সবাই ভাগ করে ঢাকায় খবর পাঠাবেন। মানে সবাইর চাকুরী ঠিক থাকলো।
একদিন পান-দোকানদার মোনাজাত উদ্দিনকে ইসারায় ডেকে বললেন,আপনার জন্য একটা গুরুত্বপুর্ন নিউজ আছে।
কি নিউজ?মোনাজাত ভাই আপনি কি জানেন,অমুক গ্রামের এক লোকের বিরাট দাড়ি আছে,কিন্তু খবর দাড়ি না,এমন দাড়ি অনেকেরই আছে,কিন্তু খবর হলো উক্ত লোকের দাড়িতে মৌ-মাছি বাসা বেধেছে,মৌচাক বড় হয়েছে আর নিয়মিত তিনি তা থেকে মধু পান। মোনাজাত উদ্দিন উত্তেজিত হয়ে বললেন,ভাই বলেন কি?এটা কি সত্যি? আপনি কি আর কোন সাংবাদিকদের এটা বলেছেন?না মোনাজাত ভাই,কাউরে বলি নাই। আপনি ঠিক বলছেন তো?আরে কি বলেন মোনাজাত ভাই আমার সম্মুন্দি নিজে দেখে আমারে বলছে।
এবার মোনাজাত উদ্দিন একটা এক্সক্লুসিভ নিউজের লোভে তারাতারি তা সংবাদে পাঠিয়ে দেয়। এবং পরেরদিন তা সংবাদে বিচিত্র খবরে ছাপা হয়ে যায়।
এবার রংপুরের অন্যান্য পত্রিকার সংবাদদাতাদের ঢাকা হতে কারন দর্শাতে বল হলো তারা কেনো এই নিউজটি দেয়নি। তারাও অমুক গ্রামে গেলো ,গিয়ে লোক তো দুরের কথা,দাড়িতে মৌমাছি এটির কোন সত্যতা পর্যন্ত পেলোনা। সবাই মোনাজাত উদ্দিনকে ধরলো। মোনাজাত গিয়ে দোকানদারকে জিজ্ঞেস করলো,কি রে ভাই আপনি না বললেন আপনার আত্নীয় ঘটনাটা দেখেছেন?দোকানদার উনাকে বললেন,মোনাজাত ভাই আমি একটা কথা বললাম,আর আপনারা তা বিবেচনা না করে ,সেই স্থানে না গিয়ে ছাপিয়ে দিলেন। আরে ভাই,আমি খালি দেখছিলাম আপনারা প্রেসক্লাবে বসে বসে খবর বানান।
তাই আপনাদের সাথে একটু মজা করলাম। আপনারাও যে এটি খবর মনে করে ঢাকায় পাঠাবেন তা কি আর আমি জানি?আপনারা কি একবার সরেজমিনে গিয়েও দেখবেন না যে ঘটনাটা সত্য কি মিথ্যা?
সাংবাদিক মোনাজাত উদ্দিন বুঝলেন,সরেজমিন প্রতিবেদন কি এবং এর গুরুত্ব কতটুকু?তাই আমিও বলি ,আমাদের এখন এই ফেসবুক সাংবাদিকতা আর সুসজ্জিত অফিসে বসে ইন্টারনেট চালাচালির সাংবাদিকতা থেকে বের হয়ে প্রকৃত ঘটনা জেনে কনফার্ম হয়ে এডিট করে তারপরে দেয়া উচিত। এটা উপদেশ নয়,বস্তুনিস্টতার স্বার্থেই এটা করা উচিত। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।