আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাগার বিরাট চিন্তায় পড়ে গেলাম, এইটা কই হইলো; উচ্চ মাধ্যমিকে ডা, শাহজাহান তপন স্যারদের বই অনুমোদন পেল না।

ক্ষেতা পুড়ি তোর ভালবাসার- ফিরিয়ে দে আগের সহজ জীবন আমার। । উচ্চ মাধ্যমিক পদার্থ বিজ্ঞানের যেইসব বই শিক্ষক-শিক্ষার্থী মহলে সাদরে গ্রহন করা হয়, তার মধ্যে একটি হলো- >>> ডা। শাহজাহান তপন মুহম্মদ আজিজ হাসান ও রানা চৌধুরী বই স্যারদের রচিত বই কিন্তু আজরাতে রানা চৌধুরী স্যার তার ফেইসবুক স্টাটাসে জানালেন যে তার বইটি বোর্ড থেকে অনুমতি পায়নি। কিন্তু আমি নিজের ও বন্ধুদের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি বইটি অনেক সহজ করে লেখা হয়েছিল এবং এটি বিক্রয় এর দিক থেকে এক নাম্বার কই দুই নাম্বারে ছিল।

আমার মনে আছে আমাদের কলেজে অন্য রাইটারে বই পড়াত, কিন্তু আমি বাসায় তপন স্যারদের বইটিই পড়াতাম। এতে অনেকে সহজে অনেকে কিছু বোঝা যেত, আর ম্যাথের জন্য তো এই বইয়ের কোন বিকল্পই নেই। কিন্তু কই থেকে যে কই হলো, জানি না। খবরটি সোনার পর আমি যেন *দনা হয়ে গেলাম। নিচে রানা স্যারের স্টাটাস হুবহু তুলে দিলাম।

আমার যে সকল বন্ধু বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলেন ( অন্তত: উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ) বা আছো তাদেরকে আমার লেখার নিচের দীর্ঘ অংশটুকু পড়ে মূল্যবান মতামত দেওয়ার অনুরোধ করছি। কারণ, তাদের মতামত ও পরামর্শই আমাদের চলার পথের পাথেয়। আমরা আমাদের যৌবনে, সদ্য স্বাধীন দেশে ইচ্ছানুযায়ী অনেক পেশা গ্রহণের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও শিক্ষকতাকে গ্রহণ করেছিলাম একটা আদর্শ হিসেবে । ইনশাল্লাহ আমৃত্যু আমরা শিক্ষক থাকতে চাই , যদিও যথানিয়মে চকিুরী থেকে অবসর গ্রহণ করেছি । “ আলহামদুল্লিাহ ।

আল্লাহ এর অশেষ রহমতে অবশেষে আমাদের নতুন সিলেবাস অনুসারে রচিত পদার্থবিজ্ঞান প্রথম পত্র বইটি বেরুলো। বইটি পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত নয় । কেন বইটি অনুমোদন পেল না সেটা আমরা জানি না , আমাদের জানানো হয়নি। যদিও মূল্যায়নের জন্য যথারীতি বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত ফি জমা দেওয়া হয়েছে। আমরা শুনেছি অনুমোদনের জন্য ১৩ খানা বই জমা পড়েছিল।

১০ খানা বই এর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আমাদের খানা সম্ভবত: ১৩ তম স্থান অধিকার করেছে। এতদিন প্রথম দিক থেকে প্রথম ছিলাম , এবার শেষ দিক থেকে প্রথম ! এরপরও সারা দেশের অনেক শিক্ষক , শিক্ষার্থী ও অভিবাবক বিস্মিত হয়ে আমাদেরকে বইটি প্রকাশের অনুরোধ করেন । পদার্থবিজ্ঞান তথা বিজ্ঞানের সূত্র, তত্ত্ব, ব্যাখ্যা , প্রতিপাদন অগ্রগতি কারো অনুমোদনের উপর নির্ভর করে না । পৃথিবীর শত শত দেশে শত শত বছর ধরে লক্ষ লক্ষ শিক্ষক-শিক্ষিকা কোটি কোটি ছাত্র-ছাত্রীকে কারো অনুমোদন ব্যতীতই বিজ্ঞান শিক্ষা দিয়ে বিজ্ঞানের অগ্রগতি তথা সভ্যতাকে আজকের এই পর্যায়ে নিয়ে এসছেন।

তবে বিভিন্ন রাষ্ট্র তাদের প্রয়োজন, চাহিদা ও সংস্কৃতির নিরিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের আগ পর্যন্ত কোন্ কোন্ বিষয়ে কতটুকু শিক্ষা দেওয়া হবে তা শিক্ষাক্রম ( Curriculum) আকারে নির্ধারণ করে দেন । আমাদের দেশও তার ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু কীভাবে তা পড়ানো হবে, শ্রেণিকক্ষে কীভাবে উপস্থাপনা করা হবে তা ঐ পর্যায়ের শিক্ষকদের উপরই নির্ভর করে । আর অভিজ্ঞ শিক্ষক ও ব্যক্তিবর্গ তাদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার আলোকে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সুবিধা ও সাহায্যার্থে পুস্তক রচনা করেন । আমাদের দেশেও তাই ছিল।

বিভিন্নজন বিভিন্ন পুস্তক রচনা করেছেন। আমাদের দেশে ১৯৯৮ সাল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বই এর অনুমোদনের ব্যাপারটা শুরু হয়। বাংলা মাধ্যম চালু হওয়ার আগে বিগত শতাব্দির বিশের দশকে লেখা বসু ও চ্যাটার্জির পদার্থবিজ্ঞান, লাডলি মোহন মিত্রের রসায়ন, এ.সি মিত্রের জীববিজ্ঞান আর দাশ ও মুখার্জির গণিতের বইগুলো পড়েই এই উপমহাদেশে বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসার ঘটেছে। আমরা পেয়েছি বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী থেকে শুরু করে প্রকৌশলী, চিকিৎসক, গবেষক ও বিভিন্ন বিষয়ের প্রাত:স্মরণীয় শিক্ষকদের। বাংলা ভাষায় শিক্ষাদান শুরু হলে ড. মুসলিম উদ্দীন, কামিনী মোহন সাহা, তোফাজ্জল হোসেন, নাসির উদ্দিন প্রামাণিক, ড. আবুল কাসেম প্রমুখ পদার্থবিজ্ঞানের উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে পাঠ্যপুস্তক রচনা শুরু করেন।

পরবর্তীকালে পদার্থবিজ্ঞানের পাঠ্যপুস্তকে আধুনিকতার সূচনা করেন মোহাম্মদ ইসহাক ও নুরুন্নবী তালুকদার। প্রায় একই সময়ে ১৯৮২ সাল থেকে আমরা তিন বন্ধু আমাদের শ্রেণিকক্ষে শিক্ষাদানের অভিজ্ঞতার আলোকে , ক্লাশ রুমের পড়ানোর মতো করে এবং চলিত ভাষায় পদার্থবিজ্ঞান এর পাঠ্যপুস্তক রচনা করি । আল্লাহ এর অশেষ শুকুর যে এর পর থেকে আমাদের বই এর বিভিন্ন সংস্করণ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অকুণ্ঠ সমর্থন লাভ করে। তাদের পরামর্শমতো আমরা নিয়মিত বইএর উন্নতি সাধনের চেষ্টা করে আসছি। এর পর থেকে পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের নিজস্ব যে মাধ্যমিক স্তরের বই আছে , সেখানেও আমরা অন্যতম প্রণেতা।

১৯৯৬ সালে প্রকাশিত বোর্ডের মাধ্যমিক পদার্থবিজ্ঞান যা ২০১৪ সালের এসএসসি পরীক্ষা পর্যন্ত বলবৎ থাকবে , তা আমাদের তিন বন্ধুরই রচিত । নতুন সিলেবাসে সদ্য প্রকাশিত ( ২০১৩ ) বোর্ডের মাধ্যমিক পদার্থবিজ্ঞানের বই লেখার জন্য অনুরুদ্ধ হয়ে আমরা দুজন তাতেও অংশ নেই । এই বইটি বোর্ডে জমা দেওয়া বই এর বর্ধিত সংস্করণ। আমরা শতভাগ শিক্ষাক্রম তথা সিলেবাস অনুসরণ করেছি। বইটি অনুমোদন না হওয়ার পরও যখন আমাদের প্রকাশক সুশিক্ষক ড. ভক্তিময় সরকার অনেক সাহস ও ততোধিক ব্যবসায়িক ঝুকি নিয়ে বইটি প্রকাশে আগ্রহ প্রকাশ করলেন, তখন আমরা সিলেবাসে অন্তর্ভূক্ত বিষয়বস্তু উপস্থাপনায় ও সাজানোতে , অনুশীলনী তৈরিতে , শিক্ষর্থিীর উপলব্ধি, অনুধাবন ও ভবিষ্যৎ উচ্চ শিক্ষার কথা বিবেচনা করে কিছুটা স্বাধীনতা গ্রহণ করেছি।

আমাদের দেশের বাস্তবতায় এবং শিক্ষা ব্যবস্থায় উচ্চ মাধ্যমিক কোনো প্রান্তিক স্তর নয় । উচ্চ মাধ্যমিক পাশের পর আমাদের দেশের বিজ্ঞানের প্রায় সকল ছাত্র-ছাত্রী প্রকৌশল শাস্ত্র বা চিকিৎসা বিজ্ঞান বা বিশ্ববিদ্যালয়/কলেজে বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনা করে । বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে উন্নত বিশ্বের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে পাল্লা দিয়ে তাদের শিক্ষাক্রম তথা সিলেবাস তৈরি করে। কাজেই এদেশের একজন নাগরিক হিসেবে, একজন অভিভাবক হিসেবে সর্বোপরি শিক্ষক হিসেবে আমাদের চিন্তা চেতনায় রাখতে হয় আমাদের সন্তানেরা , শিক্ষার্থীরা যেন উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে এমন শিক্ষা লাভ করে যাতে তারা নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা গ্রহণের উপযোগী করে তুলতে পারে। আমাদের শিক্ষাক্রমের সীমানার মধ্যে থেকেও আমরা আমাদের ক্ষুদ্র সামর্থ্য দিয়ে সে চেষ্টা করেছি ।

এখন আমাদের দেশের জ্ঞানী , বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষকতার মহৎ পেশায় নিয়োজিত নিবেদিত প্রাণ শিক্ষকেরা এবং আমাদের দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ , আমাদের দেশের শ্রেষ্ঠ ও মেধাবী শিক্ষার্থীরাই বিচার করবে বইটি আমাদের পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত শিক্ষাক্রম অনুসারে লেখা হয়েছে কী না ? এই বই পড়ে পদার্থাবজ্ঞান উপলব্ধি ও অনুধাবনে , শিক্ষার্থীদের সুপ্ত সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটবে কী না ?” ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ২৮ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.