একদিন একটি সারস ও একটি শিয়ালের মধ্যে রাস্তায় যেতে যেতে দেখা হলো। এরপর একসঙ্গে পথ চলতে চলতে তাদের মধ্যে একটা বন্ধুত্ব হয়ে গেল। বিদায়ের সময় শিয়াল সারসকে সেদিন তার বাসায় রাতে খাওয়ার নিমন্ত্রণ জানাল। যথাসময়ে সারস শিয়ালের বাড়িতে উপস্থিত হলো। শিয়াল মজা করে সারসের সামনে একটা বিশাল চওড়া থালায় কিছু স্যুপের ব্যবস্থা করল।
সারসের তো লম্বা ঠোঁট! এই ঠোঁট দিয়ে তো এমন একটি চওড়া থালার স্যুপ খাওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তবু সে কয়েকবার থালার মধ্যে ঠোকর দিয়ে ব্যর্থ চেষ্টা করল। অন্যদিকে এই থালায় শিয়াল খুব সহজেই স্যুপটুকু চেটে চেটে খেল। শিয়াল বলল, ‘আমি দুঃখিত, বন্ধু। এই স্যুপ আসলে তুমি খেতে পারবে না।
’ সারস বুঝতে পারল, শিয়াল তাকে দাওয়াত দিয়ে বোকা বানিয়েছে। সারস বলল, ‘দুঃখিত হওয়ার কিছু নেই, বন্ধু। ’ এরপর যাওয়ার সময় সারসও শিয়ালকে একদিন রাতে তার বাড়িতে খাওয়ার নিমন্ত্রণ জানিয়ে গেল।
নির্ধারিত দিনে শিয়ালও নিমন্ত্রণ রক্ষার জন্য সারসের বাড়িতে হাজির হলো। গল্পগুজব শেষ করে খাওয়ার টেবিলে বসে শিয়াল লক্ষ করল, তার জন্য সারস একটা চিকন মুখওয়ালা লম্বা সরু গলার কলসির ব্যবস্থা করেছে, যার ভেতর রাখা খাবার শুধু সারসের পক্ষেই খাওয়া সম্ভব।
কারণ, শিয়ালের মুখ ওই কলসির ভেতর ঢুকবে না। শিয়াল তবু কলসির বাইরে কয়েকবার চেটেচুটে খাওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করল। সারস তখন শিয়ালকে বলল, ‘বন্ধু, আমি আসলে এর জন্য একটুও দুঃখ প্রকাশ করছি না। ’ শিয়াল তখন বুঝতে পারল, সারস সেদিনের প্রতিশোধ নিয়েছে।
ঈশপের শিক্ষা: ইটটি মারলে পাটকেলটি খেতে হয়।
বর্তমান সময়ে আমরা যা শিখলাম: কেউ দাওয়াত দেওয়ার পর যদি এ রকম কিছু ঘটার সম্ভাবনা না-ও থাকে, তবুও দাওয়াতে না যাওয়াই ভালো। শুধু একটা পাল্টা দাওয়াত দিলেই হবে, আফটার অল ফরমালিটি তো রক্ষা হলো! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।