আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যায়যায়দিনে অগ্নিকান্ড!

আর কেন সম্মেহন-এ পাপ, থাক- ‘বেদনা আমারি থাক’ ভয়াবহ অগ্নিকা- থেকে রক্ষা পেলে দৈনিক যায়যায়দিন। শুক্রবার সন্ধ্যায় পত্রিকার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের এইচআরসি মিডিয়া ভবনের নিচতলায় প্রেসের কাটিং রুমে আকস্মিক আগুন লাগে। এতে ইলেক্ট্রিক কাটিং মেশিনসহ ওই রুমের কিছু সরঞ্জামাদি পুড়ে গেলেও প্রেসের মূল যন্ত্রাংশে আগুন স্পর্শ করেনি। এতে কেউ হতাহত হয়নি। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুন সূত্রপাত বলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে।

প্রেস কর্মচারীরা জানায়, সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে আকস্মিক কাটিং রুমে থাকা স্তুপকৃত কাগজে আগুন লাগে এবং মুহুর্তের মধ্যে তা দাউ দাউ করে চারদিকে ছড়াতে থাকে। এ সময় পত্রিকার বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র দিয়ে এবং পানি ঢেলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেন। খবর পেলে অল্প সময়ের মধ্যেই তেজগাঁও ফায়ার স্টেশনের দু’টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌছে প্রায় আধাঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলে। আগুন যাতে বিদ্যুৎ লাইনে ছড়িয়ে পড়তে না পারে এ জন্য আগুন লাগার পরপরই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। আগুন নিভে যাওয়ার পর বিদ্যুৎ সরবরাহের কথা থাকলেও সর্বোচ্চ নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে রাতে ডিপিডিসি’র (ঢাকা পাওয়ার ডিস্টিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড) বিদ্যুৎ লাইনে সংযোগ দেয়া হয়নি।

প্রতিষ্ঠান নিজস্ব গ্যাস জেনারেটর দিয়ে রাতে পত্রিকা ছাপানো হয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন মাস্টার আবুল হাশেম বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব না হলে তা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতি হতে পারতো। এতে ব্যাপক হতাহতেরও আশঙ্কা ছিল। আগুন লাগার খবর পেয়ে এইচআরসি গ্রুপের চেয়ারম্যান, যায়যায়দিনের সম্পাদক ম-লীর সভাপতি সাঈদ হোসেন চৌধুরী ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তিনি দীর্ঘ সময় যায়যায়দিন পত্রিকা অফিসে উপস্থিত থেকে অগ্নিনির্বাপন এবং অগ্নি নির্বাপন পরবর্তী সব ধরণের নিরাপত্তার বিষয় তদারক করেন।

প্রতিষ্ঠানে আরও উন্নত অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দেশ দেন। ভয়াবহ অগ্নিকা-ের হাত থেকে যায়যায়দিন রক্ষা পাওয়ায় তারা আল্লাহ তা’আলার শুকরিয়া আদায় করেন। যায়যায়দিনে অগ্নিকা-ের খবর পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব আসিফ কবির টেলিফোনে খোঁজ-খবর নেন এবং প্রয়োজনে যে কোনো ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। আগুনের সংবাদে ঢাকা-১১ আসনের সাংসদ আসাদুজ্জামান খান কামাল, ঢাকা সিটি কপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা, জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার যায়যায়দিনে আসেন। এ সময় তারা সম্পাদক ম-লীর সভাপতি সাঈদ হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে অগ্নিকা-ের ঘটনা ছাড়াও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী প্রেস কর্মচারীরা জানান, সন্ধ্যার দিকে কোনো কাজ না থাকায় তারা প্রেসের ভেতরে ছিল না। এ কারণে আগুন লাগার পরপরই তারা টের পায়নি। কিন্তু গ্লাসে ঘেরা প্রেসের বাইরে থেকে পথচারীরা আগুন দেখতে পেয়ে চিৎকার শুনে গেটে অবস্থানরত নিরাপত্তা কর্মী ও অফিসের বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংবাদকর্মীরা প্রেসে ছুটে যান এবং আগুন নিভানোর চেষ্টা করেন। এরই মাঝে খবর দেয়া হয় ফায়ার সার্ভিসকে। প্রেসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানায়, আগুনের প্রচ- তাপের কারনে তারা কেউ কাছে ঘেঁষতে পারছিলেন না।

একই সময় প্রচ- কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে নিচতলার প্রেস, দোতলার হল রুম ও তৃতীয় তলার নিউজ সেকশন। আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে এ আতঙ্কে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সংবাদ কর্মীরা ভবন থেকে বাইরে বের হয়ে আসেন। তবে আগুন নিভে যাওয়ার পরও গোটা ভবন প্রায় তিন ঘণ্টা কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন থাকে। পরে ফায়ার সার্ভিসের স্মোকার (ধোঁয়া বহির্গমনের জন্য বিশেষ যন্ত্র) এবং অফিসের প্যাডেল ফ্যান চালিয়ে ধোঁয়া বের করা হয়। ধোঁয়ার কারণে সংবাদকর্মী ও প্রেসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রায় দু’ঘণ্টা কাজে যোগ দিতে পারেনি।

রাত সাড়ে ৯টার দিকে পরে ধীরে ধীরে ধোঁয়া কেটে গেলে অফিসের পরিবেশ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। এ কারণে পত্রিকা প্রকাশে কিছুটা বিলম্ব হয়।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.