প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে সাবেক সিএসপি কর্মকর্তা কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদকে নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান।
আর চার কমিশনার পদে নিয়োগ পেয়েছেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আবু হাফিজ, সাবেক যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ আব্দুল মোবারক, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাবেদ আলী এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা দায়রা জজ মো. শাহনেওয়াজ।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব এ কে এম নেছারউদ্দিন ভূঞা বুধবার দুপুরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নিয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
নির্বাচন কমিশন সচিব মো. সাদিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞার সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। নিয়োগের বিষয়টি তিনি আমাদের জানিয়েছেন।
গেজেট হাতে পেলেই আমরা শপথ অনুষ্ঠানের জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে সময় চাইবো। ”
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়োগের গেজেট প্রকাশের জন্য বিজি প্রেসে পাঠানো হয়েছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ পাওয়া কাজী রকিব শিক্ষা সচিব হিসেবে ২০০৩ সালে অবসরে যান। এর আগে স্বরাষ্ট্র সচিবের দায়িত্বও পালন করেন তিনি। কর্মজীবনে বিভিন্ন কর্পোরেশনে চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
তার এক সময়ের সহকর্মী একজন অবসরপ্রাপ্ত সচিব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “১৯৬০ এর দশকের শেষ দিকে পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে যোগ দেওয়া রকিব সৎ এবং আদর্শবান কর্মকর্তা হিসেবে সুনাম অর্জন করেন। ”
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের সুপারিশে কাজী রকিব ছাড়াও আরেক সাবেক সচিব আলী ইমাম মজুমদারের নাম প্রস্তাব করেছিল রাষ্ট্রপতি গঠিত অনুসন্ধান কমিটি।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই কমিটি রাষ্ট্রপতির কাছে যে সুপারিশ জমা দেয়, তাতে কমিশনারের চারটি পদে আটটি নাম আসে। তার মধ্য থেকেই পাঁচজনকে বেছে নেন রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান।
নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়া অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাবেদ আলী তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মাহমান্য রাষ্ট্রপতি আমাকে মনোনীত করেছেন, এ জন্য আমি গর্ববোধ করছি।
এ দায়িত্ব পালনে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। বিতর্কের ঊর্ধ্বে উঠে স্বচ্ছ ও সততার সঙ্গে কাজ করবো। ”
এদিকে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এই ইসিকে প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, যে প্রক্রিয়ায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়োগ করা হয়েছে তা অসাংবিধানিক ও বেআইনি। এ কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে না।
এ টি এম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ চলতি মাসেই শেষ হওয়ায় রাষ্ট্রপতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করে গত মাসে এই অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেন, শুরু থেকেই যার বিরোধিতা করে আসছে বিএনপি।
এই কমিটির আহ্বানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ কয়েকটি দল নতুন কমিশনের জন্য তাদের পছন্দের ব্যক্তির নামের তালিকা দিলেও প্রধান বিরোধী দল বিএনপি কোনো নাম দেয়নি।
আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন নেতৃত্বাধীন এই কমিটির অন্য তিন সদস্য হলেন- হাই কোর্টের বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান, পিএসসি চেয়ারম্যান এ টি আহমদুল হক চৌধুরী ও মহাহিসাব নিরীক্ষক আহমেদ আতাউল হাকিম।
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে এর আগে ১০ জন সিইসি ও ১৯ জন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ পেয়েছেন। দেশের প্রথম সিইসি মো. ইদ্রিসের পাঁচ বছর মেয়াদ ১৯৭৭ সালের ৭ জুলাই শেষ হয়।
আর বিদায়ী সিইসি এটিএম শামসুল হুদা নিয়োগ পান ২০০৭ সালের ৫ ফেব্র“য়ারিতে।
ইতোমধ্যে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নিয়েছেন।
এদিকে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, বিদায়ী কমিশনের সদস্য এম সাখাওয়াত হোসেনের মেয়াদ ১৪ ফেব্র“য়ারি পর্যন্ত হওয়ায় নতুন কমিশনের চার কমিশনারের মধ্যে একজনের শপথ গ্রহণ পিছিয়ে যেতে পারে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।