আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের নায়ক সৈয়দ আশরাফের ঘনিষ্ঠ বন্ধু

অনলাইনে সকল সমস্যার সমাধান দেয়া হয় !!! সরকার উত্খাতে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের নেপথ্য নায়ক হিসেবে যার নাম এসেছে, সেই ইশরাক আহমেদ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। একসময় দুই বন্ধু গভীর রাত পর্যন্ত আড্ডা দিতেন। ১৯৯২ সালে লন্ডন থেকে সৈয়দ আশরাফ দেশে ফিরে সরাসরি ইশরাকের নিউ ডিওএইচএসের ২১ নম্বর রোডের বাসায় উঠেছিলেন। ইশরাক চিরকুমার থাকায় আনন্দ-আড্ডাবাজির ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা হতো না। দুই বন্ধুর আড্ডায় আওয়ামী ঘরানার লোক ছাড়াও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বর্তমান এক কর্মকর্তা ও মহাজোটের শরিক দলের এক বাম নেতা (বর্তমানে পূর্ণমন্ত্রী) যোগ দিতেন।

সৈয়দ আশরাফ ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত এ বাসায় থাকতেন। বিদেশ আসা-যাওয়া সবই হতো ওই বাসা থেকে। এ সময় আশরাফের সেবায় নিয়োগ করা হয় ইশরাকের দুই কর্মচারীকে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সৈয়দ আশরাফ বিমান প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেলে তিনি মিন্টো রোডের সরকারি বাসায় ওঠেন। আশরাফের এই ঘনিষ্ঠ বন্ধু ইশরাক আহমেদ সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারপ্রধান হওয়ার ষড়যন্ত্র করেছিলেন বলে সেনাবাহিনীর গ্রেফতার হওয়া দুই কর্মকর্তা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দেয়া জবানবন্দিতে দাবি করেছেন।

দৈনিক আমার দেশ-এর এক অনুসন্ধানে ইশরাকের ব্যাপারে পাওয়া গেছে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য। সরকার উত্খাতে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানকে ধর্মান্ধদের ক্যু বলা হলেও অনুসন্ধানে ইশরাকের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও বাম নেতাদের ঘনিষ্ঠতার তথ্যাদি পাওয়া গেছে। অবশ্য ইশরাক নিজেও বাম রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। শুধু তা-ই নয়, সেনাবাহিনীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও অভ্যুত্থান পরিকল্পনাকারীদের অন্যতম লে. কর্নেল (অব.) এহসান ইউসুফ ১৯৮১ সালের ৩০ মে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্বদানকারী নিহত মেজর জেনারেল আবুল মঞ্জুরের ভাগ্নে এবং ওই হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট কর্নেল মাহবুবের ভাই। কর্নেল মাহবুবকেও জিয়া হত্যায় জড়িত থাকার দায়ে ফাঁসি দেয়া হয়।

উল্লেখ্য, ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া লে. কর্নেল (অব.) এহসান ইউসুফকে ২০০৯ সালের ৫ মার্চ মেজর পদে থাকা অবস্থায় সেনাবাহিনী থেকে এমএস অপশনে (বাধ্যতামূলক) অবসর দেয়া হয়। পরে সশস্ত্র বাহিনী রিভিউ কমিটি/অফিসার্স পর্ষদের সুপারিশে বর্তমান সরকার বিএনপি সরকার আমলে পদোন্নতিবঞ্চিত ৩৬ সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে তাকেও ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি এবং আর্থিক সুযোগ-সুবিধা দেয়। অভ্যুত্থান পরিকল্পনাকারীদের আরেকজন কুমিল্লার ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল কামরুজ্জামানকে বর্তমান সরকারের সময়ে দুই দফায় পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের নায়ক ইশরাকের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক সম্পর্কে সৈয়দ আশরাফুলের বক্তব্য জানার জন্য সব ধরনের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। একটানা এক সপ্তাহ সচিবালয়ে তার দফতরে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।

পুরো সপ্তাহ তিনি অফিসে অনুপস্থিত ছিলেন। তার ২১ নম্বর বেইলি রোডের বাসায় গিয়েও সাক্ষাত্ করা সম্ভব হয়নি। বাসার স্টাফরা জানিয়ে দেন, তিনি বাসায় কোনো সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন না। এরপর জাতীয় সংসদে তার অফিসে গিয়ে কথা বলার চেষ্টা করা হয়। আমাদের সংসদ রিপোর্টার গত বুধবার জাতীয় সংসদে গিয়ে কথা বলার চেষ্টা করলেও সম্ভব হয়নি।

কয়েক ঘণ্টা বসিয়ে রাখার পর মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী সেলিম খান জানান, মন্ত্রী মহোদয় আজ কথা বলতে পারবেন না। এর আগে মন্ত্রীর কাছে আমার দেশ কী বিষয়ে জানতে এসেছে, সে সম্পর্কে তাকে অবহিত করা হয়। বিষয় জানার পর তিনি বলেন, আপনারা কার্ড রেখে যান। মন্ত্রী মহোদয় পরে যখন সময় দেবেন, আপনাদের ফোনে জানিয়ে দেয়া হবে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মন্ত্রী মহোদয়ের সময় হয়নি।

এরপরও আমাদের চেষ্টা থেমে ছিল না। গতকাল ছিল মন্ত্রিসভার বৈঠক। ওই বৈঠকে যোগ দিতে এসে অফিস করতে পারেন এমন আশায় আমরা তার দফতরে অপেক্ষা করতে থাকি। কিন্তু মন্ত্রীর দেখা মেলেনি। পরে মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তা মমিনুল হকের সঙ্গে সাক্ষাত্ করে তার সহযোগিতা চাওয়া হলে তিনি জানান, মন্ত্রী মহোদয় অফিসে আসেন না।

বাসায় গিয়েও লাভ হবে না। কারণ সেখানে তিনি সাক্ষাত্ দেন না। সংসদে গিয়ে চেষ্টা করা যেতে পারে বলে পরামর্শ দেন তিনি। পরে তার কাছে লিখিত দুটি প্রশ্ন দেয়া হয়। এর জবাব পাওয়া গেলে প্রতিবেদককে জানানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়।

প্রশ্ন দুটি ছিল এরকম—সরকার উত্খাতের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ব্যবসায়ী ইশরাক আহমেদ মাননীয় এলজিআরডি মন্ত্রীর বন্ধু কি-না। তিনি ১৯৯২ থেকে ’৯৬ সাল পর্যন্ত ইশরাকের নিউ ডিওএইচএসের বাসায় ছিলেন কি-না। মমিনুল হক মন্ত্রীর তথ্য কর্মকর্তা হিসেবে জানান, তিনি ১৯৯২ থেকে ’৯৬ সাল পর্যন্ত বিলেতে ছিলেন। কাজেই ইশরাকের বাসায় থাকার বিষযটি অবান্তর। মন্ত্রীর ই-মেইলেও প্রশ্ন পাঠিয়ে রাত দশটা পর্যন্ত তার জবাব পাওয়ার চেষ্টা করা হয়।

শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়ারও ইশরাকের বাসায় যাওয়া-আসা ছিল বলে জানা গেছে। তবে দিলীপ বড়ুয়া বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি ইশরাককে চিনিই না। আমাদের নওগাঁ প্রতিনিধি জানান, ইশরাক আহমেদের বাড়ি নওগাঁয়। তিনি নওগাঁ শহরের প্রবীণ রাজনীতিক এমএ রকিবের ছেলে। ইশরাকের বাবা নওগাঁ সদর উপজেলার চক-আতিথা গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান।

১৯৫০ সালের পর গ্রামের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। এমএ রকিব ন্যাপ (মোজাফফর) জেলা সভাপতি ও নওগাঁ পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি চল্লিশের দশক থেকেই প্রগতিশীল রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। পঞ্চাশের দশকে ভাষা আন্দোলনের অন্যতম নেতা। ’৫৬ সালে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি গঠিত হলে তিনি তার অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

’৬৬ সালে ন্যাপ বিভক্ত হলে অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদের সঙ্গে তিনি ন্যাপের (মোজাফফর) অন্যতম নীতিনির্ধারক হিসেবে ভূমিকা পালন করেন। । ’৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক, মুক্তিযুদ্ধকালে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনীর সংগঠক ছিলেন। ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাকশাল গঠিত হলে তিনি এই সংগঠনের সদস্য মনোনীত হন। এছাড়া তিনি ১৯৭০, ১৯৭৩, ১৯৭৯, ১৯৮৬ সালে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন।

তার দুই ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে ইশরাক আহমেদ তৃতীয় সন্তান। নওগাঁ শহরের সরিষাহাটির মোড়ে দীন মঞ্জিলে তার স্ত্রী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা উম্মে কুলসুমকে নিয়ে বসবাস করছেন। তার ছেলে ও মেয়েরা কখনও নওগাঁয় আসেন কি-না, তা স্থানীয়দের কাছে অজ্ঞাত। নওগাঁবাসী জানেন তার ছেলে ও মেয়েরা দেশের বাইরে বসবাস করেন। ইশরাক কয়েক ভাইবোনের মধ্যে ব্যক্তিগত জীবনে এখনও অবিবাহিত।

শেখ মুজিবুর রহমান সরকারের মন্ত্রিসভার এক প্রতিমন্ত্রীর মেয়ের সঙ্গে ইশরাকের বিয়ে ঠিক হলেও শেষ পর্যন্ত তা আর হয়নি। খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, ইশরাক আহমেদ ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজে পড়াশোনা করেছেন। তিনি কয়েক বছর ধরে বিদেশে বিভিন্ন স্থানে বসবাস করেন। ঢাকায় এলে তিনি গুলশানের নিকেতনে থাকেন। আরও জানা গেছে, ইশরাক আহমেদ মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।

ইশরাক সম্পর্কে জানার জন্য আমাদের নওগাঁ প্রতিনিধি তার বাবার সঙ্গে কথা বললে তিনি এ ব্যাপারে তথ্য জানাতে রাজি হননি। এদিকে লন্ডনভিত্তিক প্রভাবশালী সাময়িকী ইকোনমিস্টকে দেয়া সাক্ষাত্কারে বাংলাদেশে সাম্প্র্রতিক ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থান চেষ্টায় অভিযুক্ত বেসামরিক প্রবাসী ইশরাক আহমেদ বলেছেন, তিনি ধর্মান্ধ মৌলবাদী নন। ধর্মীয় মৌলবাদের সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তিনি বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আমার বন্ধু রয়েছেন।

তিনি বলেন, তার বাড়ি থেকে মদ, ব্র্যান্ডি এবং হুইস্কি জব্দ করা হয়েছে, কোনো ধরনের অস্ত্র নয়। সরকার সেনা অভ্যুত্থানের কথা বললেও কোনো ট্রুপস ও গান মুভমেন্ট দেখাতে পারেনি। ইকোনমিস্টের ওই প্রতিবেদনে ইশরাক আহমেদকে উদার পরিবারের উচ্চপদস্থ সাবেক কর্মকর্তা হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়, ইশরাক তাদের জানান, তিনি মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। ইশরাক ইকোনমিস্টকে আরও জানান, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা প্রায় দুই বছর থেকে বাংলাদেশী গোয়েন্দা সংস্থার কার্যালয়ে অফিস করছেন এবং সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে তাদের সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থাও কার্যকর রয়েছে। প্রতিবেদনে প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভীর বরাত দিয়ে বলা হয়, ড. রিজভী জানিয়েছেন, ভারতীয়দের বাংলাদেশে এ ধরনের উপস্থিতির ব্যাপারে তিনি ওয়াকিবহাল নন।

গত ১৯ জানুয়ারি সেনা সদর দফতরের সংবাদ সম্মেলনে থেকে জানানো হয়, সেনাবাহিনীর মধ্যম সারির কয়েক কর্মকর্তাসহ একটি চক্র সরকার উত্খাতের ষড়যন্ত্র করছে। তাদের সংখ্যা ১৪ থেকে ১৬ জনের বেশি নয়। তিনজনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়েছে সেনাবাহিনী। এ তথ্যের ভিত্তিতে অবসরপ্রাপ্ত দুই সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চাকরিরত একজন কর্মকর্তা সেনাবাহিনী থেকে পালিয়ে গেছেন।

তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। অভ্যুত্থান-চেষ্টার ঘটনা তদন্তে গত ২৮ ডিসেম্বর একটি তদন্ত আদালত গঠন করা হয়। ওইদিন বিকালে সেনা অফিসার্স ক্লাবে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান সেনাবাহিনীর পার্সোনাল সার্ভিসেস পরিদফতরের (পিএস পরিদফতর) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাসুদ রাজ্জাক। তার সঙ্গে ছিলেন সেনাবাহিনীর ভারপ্রাপ্ত জাজ অ্যাডভোকেট জেনারেল লে. কর্নেল মুহাম্মদ সাজ্জাদ সিদ্দিক। চিফ অব জেনারেল স্টাফ (সিজিএস) লে. জেনারেল মইনুল ইসলাম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে মাসুদ রাজ্জাক বলেন, সম্প্রতি কিছু প্রবাসী বাংলাদেশীর ইন্ধনে সেনাবাহিনীর সাবেক ও বর্তমান কিছু কর্মকর্তা ধর্মান্ধতাকে পুঁজি করে সেনাবাহিনীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ধারা ব্যাহত করার চেষ্টা চালিয়েছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তা সফল হতে দেয়নি। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সেনাবাহিনীর একজন সাবেক কর্মকর্তা গত ১৩ ডিসেম্বর মেজর পদমর্যাদার আরেক কর্মকর্তাকে তার সঙ্গে যোগ দিতে প্ররোচনা দেন। তবে ওই মেজর বিষয়টি তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানালে অবসরপ্রাপ্ত ওই কর্মকর্তাকে সেনা আইনের ২(১)(ডি)(র) এবং ৭৩ ধারায় গ্রেফতার করা হয়। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, গ্রেফতার হওয়া ওই সাবেক কর্মকর্তার নাম এহসান ইউসুফ।

তিনি বলেন, এই ঘৃণ্য পরিকল্পনার আরেক অংশীদার মেজর সৈয়দ মো. জিয়াউল হক গত ২২ ডিসেম্বর কর্মরত অন্য এক সেনা কর্মকর্তাকে একই ধরনের কার্যক্রম চালাতে প্ররোচনা দেন। ওই কর্মকর্তা বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানালে মেজর জিয়াউলের ছুটি ও বদলি আদেশ বাতিল করা হয়। তাকে ঢাকার লগ এরিয়া সদর দফতরে যোগদানের নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু গত ২৩ ডিসেম্বর ছুটিতে থাকার সময় মেজর জিয়াউল পালিয়ে গিয়ে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নাশকতামূলক (সাবভারসিভ) কার্যক্রম চালানোর পাঁয়তারা করেন। তিনি এখনও তা করে চলেছেন।

এছাড়া সুনিশ্চিত তথ্যের ভিত্তিতে দায়িত্বরত একজন কর্মকর্তাকে সরকারের আনুগত্য থেকে বিরত থাকার প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগে মেজর পদবির সাবেক এক কর্মকর্তাকে গত ৩১ ডিসেম্বর সেনা আইনের ধারায় গ্রেফতার করা হয়। ওই কর্মকর্তার নাম জাকির হোসেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে মাসুদ রাজ্জাক আরও জানান, গ্রেফতার হওয়া সাবেক দুই কর্মকর্তা ও চাকরিরত কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর ঘাড়ে ভর করে গণতান্ত্রিক সরকারব্যবস্থাকে উত্খাতের ঘৃণ্য চক্রান্তের সঙ্গে সেনাবাহিনীতে চাকরিরত কিছু কর্মকর্তার সম্পৃক্ততার সুনির্দিষ্ট তথ্য উদ্ঘাটিত হয়েছে। এ সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য উদ্ঘাটনের জন্য গত ২৮ ডিসেম্বর একটি তদন্ত আদালত গঠন করা হয়, যার কার্যক্রম এখনও চলছে। তিনি বলেন, দেশে-বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশী নাগরিকদের মদতে এবং ধর্মান্ধের অনুভূতিকে পুঁজি করে চাকরিরত ও অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তাদের এটি একটি ঘৃণ্য চেষ্টা।

এর সঙ্গে জড়িতরা সেনাবাহিনী ও দেশের সব সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে স্বার্থান্বেষী মহলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সেনাবাহিনীর ঈর্ষণীয় সাফল্য, উন্নয়ন এবং ঐক্য নষ্ট করার চেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। এরই মধ্যে এসব চক্রান্তের সঙ্গে জড়িত কিছু চাকরিরত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাদের সম্পৃক্ততার কথা অকপটে স্বীকার করেছেন। তদন্ত শেষে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, পলাতক মেজর জিয়ার আইনের নিরাপত্তা ও সঠিক বিচারপ্রাপ্তি নিশ্চিত করার স্বার্থে আত্মসমর্পণ করা অপরিহার্য। মেজর জিয়ার বর্তমান অবস্থান ও কর্মকাণ্ড সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া গেলে তা সেনাবাহিনীতে জানাতে অনুরোধ করেন তিনি।

সূএ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.