আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বন্ধু শাকিল... তোমাকে হারালাম

গত রাতে অফিস থেকে বের হবার আগ মুহূর্তে ফোন পেলাম এক রিপোর্টারের। বললো, সড়ক দুর্ঘটনায় এক সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে। যেহেতু অপরিচিত তাই খারাপ লাগলেও তার পরিমাণটা খুব বেশি ছিল না। কোনা ছবি ছিল না। তাই একটা ম্যাপ দিয়ে ন্যাশলাল টপে নিউজটা দেওয়া হলো।

খবরটা ধরাতে ধরাতে আমাদের সবারই দেরি হয়ে গেল। অনুভূতি দিন দিন কমে যাওয়ায় একটু বিরক্ত লাগছিল। চিন্তা হচ্ছিল কখন বাসায় যাবো? বাসায় গিয়ে দেরির কারণ হিসেবে দুর্ঘটনার কথাটা বললাম সবাইকে। সকালে অফিসে এসে ছবিসহ নিউজটা আবার দেখে আমার চোখ আটকে গেলো। মাত্র ছাব্বিশ বছরের একটা যুবক।

তিতুমীর কলেজের ছাত্র। পাশাপাশি একটা দৈনিক পত্রিকার (দৈনিক প্রান্ত) স্টাফ রিপোর্টার। একটা পরিচিত মুখ। একটা হাসি হাসি মুখ ফেসে উঠলো চোখের সামনে। একটু মনে করার চেষ্টা করতেই মনে পড়ে গেল আমাদের এলাকার (দনিয়া এলাকা) এক ছেলের কথা।

এক বন্ধুর কথা। এক সময় একসঙ্গে সংগঠন করেছিলাম আমরা। বেশিদিন গ্রুপে মন বসেনি তার। মনটা একটু উড়ু উড়ু ছিল। হয়তো তাই।

যখনি রাস্তায় দেখা হতো, হাসি ভরা মুখে মাথা নেড়ে জিজ্ঞেস করতো- কেমন আছো? কখনো আমি প্রশ্ন না করতেই ‌উত্তর দিতো ভালো আছি। কথাগুলো মনে পড়তেই খুব মন খারাপ হয়ে গেল। মনো হলো খুব কাছের কোনা বন্ধুকে হারালাম। কিন্তু পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারছিলাম না। কারণ এলাকা থেকে দূর আছি প্রায় আড়াই বছর হলো।

তাই ঠিকমত কারো খবর রাখা হতো না। এরউপর আবার সাংবাদিক। মুহূর্তে নিশ্চিত হবার জন্য এক বান্ধবীকে ফোন করলাম। ও কিছু বলতে পারলো না। শুধু বললো একজনের কাছে শুনেছে শাকিল নাকি বিদেশ চলে গেছে।

ফেসবুকে নিউজটা এক বড় ভাইকে ট্যাগ কলাম, তাকে মেসেস পাঠালাম। কিছুক্ষণ পর রিপ্লাই এলো- ‘আমি কনর্ফম এটাই শাকিল’। এরপর যতবার ছবিটা দেখছি ততবার একটা কষ্ট মনের ভিতর ভারী হচ্ছে। শাকিল এভাবে তোমার অকাল মৃত্যুর খবর পাবো ভাবিনি কখনো। খুব কষ্ট হচ্ছে তোমার জন্য।

খুব খারাপ লাগছে। এতোটা কষ্ট নিখিল ভদ্র বা দিনেশ দার জন্যও লাগেনি। এই পৃথিবীতে আরো অনেক দিন বেঁচে থাকার অধিকার ছিল তোমার। আরও অনেক কিছু দেওয়ার ছিল তোমার আমাদের। হেয়তো কোনো নামিদামি পত্রিকার সাংবাদিক ছিলেনা তুমি।

হয়তো অনেকেই চিনতো না তোমাকে। কিন্তু তুমিই একদিন হতে পারতে অনেক পরিচিত কোনা মুখ, নামি কোনো সাংবাদিক। আমরা আর কাউকে এভাবে হারাতে চাইনা, চাইনা কোনা সড়ক দুর্ঘটনা, চাইনা কোনা অকাল মৃত্যু। চাইনা কোনা যুবকের লাশ কাঁধে নিক কোনা বৃদ্ধ বাব, দেখতে চাইনা কোনা মায়ের বুকভাঙা আহাজারি। চাইনা আর কোনা সাংবাদিক ভাই বা কোনা বন্ধুকে এভাবে হারাতে।

একটুখানি সচেতনতাই বাঁচাতে পারে একটি মূল্যবান জীবন। আসুন আমরা সবাই নিজ নিজ যায়গা থেকে একটু সচেতন হই, একটু সচেতন করি অপরকেও। তাহলে হয়তো আমাদের শুনতে হবেনা কোনা দুর্ঘটনা, কোনা আপন মানুষের অকাল মৃত্যুর খবর। ি ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.