আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উল্টাপাল্টা প্রশ্নপত্রে এসএসসি পরীক্ষা ২০১২ !! দোষীদের কী শাস্তি হওয়া উচিৎ ?

নিপুণ লেখনীর শানিত গর্জন / লিখব আজ নিপুণ কথন গতকাল শুরু হয়েছে এস,এস,সি, পরীক্ষা । প্রথম দিনেই কিছু কিছু পরীক্ষাকেন্দ্রে উল্টাপাল্টা প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে ! ২০১২ সালের প্রশ্নপত্রের বদলে এসব কেন্দ্রে ২০১১ সালের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেয়া হয় । যদিও পরবর্তীতে ভুল শুধরে নেয়া হয়, কিন্তু ততক্ষণে কেটে গেছে অনেকটা সময় । কর্তৃপক্ষ কোন অতিরিক্ত সময়ও দেয়নি । এর দায়ভার কে নেবে ? ক্ষতিগ্রস্থ পরীক্ষার্থীদের কি হবে ? ভাবতে পারেন অবস্থাটা ? আপনার নিজের ক্ষেত্রে হলে কেমন হতো ? এমনিতেই বাংলা ১ম পত্র পরীক্ষায় লিখে শেষ করা কষ্ট, সময় লাগে অনেক, লিখতেও হয় প্রচুর; তারপর যদি ৪০ মিনিট সময় কেড়ে নেয়া হয় তাহলে বাকি থাকে কি ? শিক্ষা জীবনের প্রথম পাবলিক পরীক্ষার প্রথম দিনেই যারা এই ভোগান্তির শিকার হল, তাদের পরের পরীক্ষাগুলো কেমন হতে পারে? ওদের ভবিষ্যতটাই বা কি ? আমি হলে বাকি সময়টুকুতে মাথা ঠাণ্ডা করে লিখতে পারতাম না, পরের পরীক্ষাগুলোতে অংশগ্রহণ দূরে থাক ।

সব কথার শেষ কথা- যদি অভিযোগ সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে তীব্র নিন্দা জানাই এই ধরনের অব্যবস্থাপনার । আশু প্রতিকার চাই । ক্ষতিগ্রস্থ পরীক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ কি হবে, আবার পরীক্ষা নেয়া হবে কিনা এ বিষয়ে সরকারের তরফ থেকে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর ভূমিকা কি হবে জানতে চাই, কালকের মাঝেই ঘোষণা চাই । বিস্তারিত খবর পড়ুনঃ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভুল প্রশ্নপত্র বিতরণের মধ্য দিয়ে চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিন পার হয়েছে গতকাল। টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে একটি কেন্দ্রের ছয়টি কক্ষে নতুন সিলেবাসের পরীক্ষার্থীদের মধ্যে পুরনো সিলেবাসের প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হয়।

৪০ মিনিট পর সেই ভুল নজরে এলে তা সংশোধন করা হয়। এর ফলে প্রায় ২০০ পরীক্ষার্থী সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি। কুড়িগ্রামেও ২০১২ সালের প্রশ্নের পরিবর্তে ২০১১ সালের সিলেবাসের প্রশ্নপত্র বিতরণের ঘটনা ঘটে। পরীক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে শিক্ষকরা পরে এ বছরের প্রশ্নপত্র দেন। মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় দুটি কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়ে বিভ্রান্তির মধ্যে রয়েছে পরীক্ষার্থীরা।

এখানে এসএসসির উত্তরপত্রের বদলে জেএসসির উত্তরপত্রে পরীক্ষা দিয়েছে তারা। শ্রীমঙ্গলে ১৬৭ জন পরীক্ষার্থীকেও ২০১১ সালের পুরনো সিলেবাসের প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়। পরীক্ষা শেষ করে বাসায় ফেরার পর তাদের ও অভিভাবকদের কাছে বিষয়টি ধরা পড়ে। একই রকম ঘটনা ঘটেছে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কে এম মাধ্যমিক বিদ্যালয়কেন্দ্রে। এই চরম দায়িত্বহীনতার শিকার পরীক্ষার্থীরা হল থেকে বের হয় কান্না শুরু করে।

বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন অভিভাবকরা। কোনো কোনো জায়গায় পরীক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে পড়েন পরীক্ষাসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এসব ঘটনায় শ্রীমঙ্গলে এক সহকারী কেন্দ্রসচিবকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সিলেট শিক্ষা বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. মনির উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, এসব ঘটনায় দায়ীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাল বুধবার এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষায় প্রথম দিনে বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষা নেওয়া হয়।

পরীক্ষায় অসুদপায় অবলম্বনের দায়ে সারা দেশে ৩৮ পরীক্ষার্থী ও দুই শিক্ষককে বহিষ্কার করা হয়েছে। পরীক্ষা চলার সময় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ রাজধানীর ধানমণ্ডি গভ. বয়েজ হাইস্কুল কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এরপর সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সম্পূর্ণ নকলমুক্ত ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বুধবার সকাল ১০টা থেকে সারা দেশে একযোগে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। পরীক্ষা চলাকালে সংশ্লিষ্ট বোর্ডের প্রতিটি কেন্দ্রের সঙ্গে অনলাইনে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। টাঙ্গাইলে পুরনো সিলেবাসের প্রশ্ন : জেলার ঘাটাইল উপজেলার ঘাটাইল মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ও কর্তব্যরত শিক্ষকরা জানান, কেন্দ্রের ১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮ ও ১৯ নম্বর কক্ষে পরীক্ষার্থীদের ২০১২ সালের সিলেবাস অনুযায়ী প্রণীত প্রশ্নে পরীক্ষা দেওয়ার কথা থাকলে তাদের ২০১১ সালের সিলেবাস অনুযায়ী প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হয়।

ঘাটাইল এসই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী শায়লা শারমিন জানায়, প্রশ্ন পেয়ে তারা ৪০ মিনিট পরীক্ষা দেয়। এরপর তারা প্রশ্নের ওপর '২০১১ সালের সিলেবাস অনুযায়ী প্রশ্নপত্র' লেখা দেখে কর্তব্যরত শিক্ষককে জানায়। পরে কেন্দ্রসচিব দ্রুত ভুল সংশোধন করে ওই প্রশ্নপত্র বদলে ২০১২ সালের প্রশ্নপত্র সরবরাহ করেন। কক্ষ পরিদর্শকরা পরীক্ষার্থীদের আগের লেখা উত্তরগুলো কেটে দিয়ে ২০১২ সালের প্রশ্নে পরীক্ষা শুরু করতে বলেন। নির্ধারিত সময়েই পরীক্ষা শেষ করা হয়।

পরীক্ষা শেষে পরীক্ষার্থীরা কান্নায় ভেঙে পড়ে। এ সময় অভিভাবকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। পরীক্ষার্থী শিউলি আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলে, 'আমরা বারবার সময় বাড়িয়ে দেওয়ার আবেদন করলেও নির্ধারিত সময়ের পর শিক্ষকরা খাতা কেড়ে নেন। ' লুৎফর রহমান নামে এক অভিভাবক বলেন, 'আমার মেয়ে অবশ্যই জিপিএ ৫ পেত।

শিক্ষকদের চরম দায়িত্বহীনতার কারণে সে পরীক্ষায় মাত্র ৬০ নম্বরের উত্তর দিয়েছে। ' এসব কক্ষে ঘাটাইল এসই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, পাকুটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, ব্রাহ্মণশাসন এইউ উচ্চ বিদ্যালয়, মমরেজ গলগণ্ডা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিচ্ছিল। ঘাটাইল এসই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বুলবুলি বেগম বলেন, 'আমাদের ভীষণ ক্ষতি হয়ে গেল। ' এ ব্যাপারে কেন্দ্রসচিব ও ঘাটাইল উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মফিজুল ইসলাম বলেন, একই কেন্দ্রে পুরনো ও নতুন সিলেবাসের পরীক্ষার্র্থী রয়েছে। দু-একটি কক্ষের প্রশ্নপত্র বিতরণের সময় ভুলে নতুন পরীক্ষার্থীদের মধ্যে পুরনোদের প্রশ্নপত্র বিতরণ হয়ে যায়।

পাঁচ মিনিটের মতো পরীক্ষা চলার পর সে ভুল ধরা পড়ে এবং সঙ্গে সঙ্গে তা সংশোধন করা হয়। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেগম আলেয়া খাতুনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'নিউজ হওয়ার মতো কিছু হয়নি। দুই সালের পরীক্ষার্থীই কেন্দ্রে ছিল। সে রকম কিছু হয়নি। ' কুড়িগ্রামেও গত বছরের সিলেবাসের প্রশ্ন : শিক্ষকদের খামখেয়ালিপনায় কুড়িগ্রামেও ২০১২ সালের প্রশ্নের পরিবর্তে ২০১১ সালের সিলেবাসের প্রশ্নপত্র বিলি করা হয়।

প্রশ্নপত্র পেয়ে পরীক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। এর প্রতিবাদ জানালে শিক্ষকরা পরে ২০১২ সালের প্রশ্ন দিয়ে নতুন করে পরীক্ষা নেন। সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয় অতিরিক্ত ৪০ মিনিট। কুড়িগ্রাম সরকারি বালিক উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩ নম্বর কক্ষে ৫২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ভুল প্রশ্ন বিতরণ করা হয়। শিক্ষকরা তাঁদের ভুল বুঝতে পেরে এক ঘণ্টা পর সঠিক প্রশ্নপত্র দিয়ে অতিরিক্ত ৪০ মিনিট সময় বাড়িয়ে পরীক্ষা নেন।

কুড়িগ্রাম সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্রসচিব রুখসানা পারভীন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, 'অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের জন্য ২০১১ সালের সিলেবাসের প্রশ্নপত্র ভুলে নিয়মিত (২০১২ সালের সিলেবাসের পরীক্ষার্থী) শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেওয়া হলে এমন ঘটনা ঘটে। তবে পরে অতিরিক্ত সময় দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। মৌলভীবাজারের চিত্র : মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার দুইটি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিয়ে বিভ্রান্তির মধ্যে রয়েছে। পরীক্ষার্থীদের প্রশ্ন ও উত্তরপত্র ওলটপালট করে দেওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কুলাউড়া নবীন চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় এসএসসি উত্তরপত্রের স্থলে জেএসসি উত্তরপত্রে পরীক্ষা দিয়েছে কয়েকজন পরীক্ষার্থী।

এই কেন্দ্রের ১৮, ১৯ ও ২৫ নম্বর কক্ষে পুরনো সিলেবাসের পরীক্ষার্থীদের নতুন সিলেবাসের প্রশ্নপত্র (২০১২ সালের সিলেবাসের) দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়। পরীক্ষা শুরুর প্রায় ২০ মিনিট পর বিষয়টি পরীক্ষার্থীরা শিক্ষকদের জানালে ১৮ ও ১৯ নম্বর কক্ষের পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্র বদল করে ২০১১ সালের সিলেবাসের প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়। কিন্তু ২৫ নম্বর কক্ষের পরীক্ষার্থীদের প্রশ্ন পরিবর্তন না করে ২০১২ সালের সিলেবাসের প্রশ্নপত্রেই পরীক্ষা নেওয়া হয়। অনুরূপ অভিযোগ পাওয়া গেছে কুলাউড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঁচটি কক্ষের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেও। তারা জানায়, সিলেবাসের তারতম্যের কারণে তাদের পক্ষে সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সম্ভব হয়নি।

কেন্দ্রসচিব আমির হোসেন এই বিভ্রাটের কথা স্বীকার করে জানান, বিষয়টি শিক্ষা বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে। বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গৌরা ঘোষ বলেন, পরীক্ষার শুরুর পর প্রশ্ন নিয়ে কিছুটা বিভ্রাট হয়েছিল, পরে তা ঠিক করা হয়েছে। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল মজিদ কালের কণ্ঠকে জানান, কুলাউড়ায় জেএসসির একটি উত্তরপত্র বিলি হয়ে গিয়েছিল। ধরা পড়ার পরপরই সেটা বদল করা হয়েছে। আর যে পরীক্ষার্থীদের যে সিলেবাসের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার কথা, সেটায় যে বিভ্রান্তি হয়েছে সে বিষয়ে কেন্দ্রসচিবকে সিলেট শিক্ষা বোর্ড নির্দেশনা দিয়ে খাতাগুলো আলাদা রাখার পরামর্শ দিয়েছে।

শ্রীমঙ্গলেও একই রকম ভুল : উপজেলার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৬৭ জন পরীক্ষার্থীকে ২০১১ সালের পুরনো সিলেবাসের প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়। তারা পরীক্ষা দিয়ে বাসায় চলে যায়। বাসায় যাওয়ার পর শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছে বিষয়টি ধরা পড়ে। এ নিয়ে অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এ অবস্থায় প্রশাসন দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়।

জানতে চাইলে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল হক চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, ভুল প্রশ্নপত্র বিতরণের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ওই বিদ্যালয়ের সহকারী কেন্দ্রসচিব বিমান বর্ধনকে তাঁর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পাথরঘাটা (বরগুনা) : একই ঘটনা ঘটেছে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কেএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়কেন্দ্রে। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো. মোস্তাফিজুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, কেন্দ্রটির ৭২৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৯৬ জন অনিয়মিত। তাদের প্রশ্নপত্র ২০১১ সালের সিলেবাসে দেওয়ার কথা।

কিন্তু দেওয়া হয়েছে ২০১২ সালের প্রশ্নপত্র। তিনি বলেছেন, এ ঘটনার কারণে শিক্ষার্থীদের ওএমআর শিট আলাদাভাবে পাঠানো হবে। ফলে তাদের সমস্যা হবে না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সোহরাব হোসেন বলেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বোর্ডওয়ারি পরীক্ষার্থীদের অনুপস্থিতি ও বহিষ্কার : পরীক্ষা উপলক্ষে গঠন করা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানানো হয়, ঢাকা বোর্ডে এক হাজার ৪০ জন অনুপস্থিত ও একজন বহিষ্কার। কুমিল্লা বোর্ডে ৪২৩ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত। এ বোর্ডে বহিষ্কার নেই। যশোর বোর্ডে ৪৯৭ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত। এ বোর্ডে একজন পরীক্ষার্থী বহিষ্কার হয়েছে।

রাজশাহী বোর্ডে ৫৬০ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত। এ বোর্ডে একজন পরীক্ষার্থী বহিষ্কার হয়েছে। চট্টগ্রাম বোর্ডে ২২৫ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত। এ বোর্ডে দুজন পরীক্ষার্থী বহিষ্কার হয়েছে। সিলেট বোর্ডে ১০৮ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত।

এ বোর্ডে বহিষ্কার নেই। বরিশাল বোর্ডে ১৩৭ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত। এ বোর্ডেও বহিষ্কার নেই। দিনাজপুর বোর্ডে ৩৩৭ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত। এ বোর্ডে একজন পরীক্ষার্থী বহিষ্কার হয়েছে।

মাদ্রাসা বোর্ডে তিন হাজার ৩৯০ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত। এ বোর্ডে ২৫ জন পরীক্ষার্থী ও দুইজন শিক্ষক বহিষ্কার হয়েছে। কারিগরি বোর্ডে ৬২৮ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত এবং সাতজন পরীক্ষার্র্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি তৈরিতে তথ্য পাঠিয়েছেন_অরণ্য ইমতিয়াজ, টাঙ্গাইল; আবদুল খালেক ফারুক, কুড়িগ্রাম; বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, শ্রীমঙ্গল ও মির্জা শহিদুল ইসলাম খালেদ, বরগুনা। সূত্রঃ কালের কণ্ঠ ।

লিঙ্কঃ Click This Link বিডিনিউজ২৪ এর খবরঃ এসএসসি পরীক্ষা শুরুর দিনে চারটি জেলায় ভুল প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে হবিগঞ্জে এক ঘণ্টা পর সঠিক প্রশ্নপত্র দেওয়া হলেও রংপুর, বরগুনা ও ভোলায় তিনটি কেন্দ্রে ভুল প্রশ্নপত্রেই পরীক্ষা দিয়েছে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী। বুধবার সারাদেশে একযোগে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। ২ হাজার ৪৬৪টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ১৪ লাখ ২০ হাজার ৫৭ জন। এবার পুরনো (২০০৯-’১০ শিক্ষাবর্ষ) ও নতুন সিলেবাসে দু’ধরনের শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে।

তাই পরীক্ষার হলে দু’ধরনের প্রশ্নপত্রই সরবরাহ করা হয়। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এর রংপুর প্রতিনিধি জানান, দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে রংপুর জিলা স্কুল কেন্দ্রে পরীক্ষা দেয় পুলিশ লাইন স্কুলের শিক্ষার্থীরা। প্রশ্নপত্র পাওয়ার পরপরই প্রায় ৫০ জন ছাত্র-ছাত্রী জানায়, তাদের দেওয়া হয়েছে ২০১১ সালের প্রশ্নপত্র। এ সময় তারা ২০১২ সালের প্রশ্নপত্র দিতে বললেও কর্তব্যরত শিক্ষকরা তা দেননি বলে অভিযোগ পরীক্ষার্থীদের। ফলে পুরনো প্রশ্নপত্রেই তারা পরীক্ষা দেয়।

পরীক্ষা শেষে বিষয়টি সবাই জানলে হৈ চৈ শুরু হয়। রংপুর পুলিশ লাইন স্কুল কেন্দ্রে পরীক্ষা দেওয়া (পুরনো প্রশ্নে) মোখলেসুর রহমান, আলী আহসান ও অমিত বণিক সাংবাদিকদের জানায়, তারা প্রশ্নপত্র পাওয়ার পরপরই কর্তব্যরত শিক্ষককে বার বার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তারা কান দেননি। সাংবাদিকদের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়ে শিক্ষার্থীরা। পুলিশ লাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ জালাল উদ্দিন আকবর এ ঘটনাকে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন নষ্টের চক্রান্ত বলে দাবি করেন। এর প্রতিকারও চেয়েছেন তিনি।

সালাম মিয়া নামের এক অভিভাবক বলেন, “আমার ছেলের ভবিষ্যত কী হবে? তারা নাকি পাস মার্ক পাইয়ে দেবে। এতে কম নম্বরের কারণে কোথাও ভর্তি হতে পারবে না ছেলেটা। ” রংপুর জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবু রায়হান মো. মিজানুর রহমান ঘটনার বলেন, মাত্র দুটি কক্ষে এ ঘটনা ঘটেছে। যারা দায়িত্বে ছিলেন তাদের গাফিলতির কারণে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে জানানো হয়েছে বলে তিনি জানান।

তবে এ বিষয়ে কী করা হবে, তা তিনি জানাতে পারেননি। এদিকে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা রংপুর জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টদের বিচার দাবি করে নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। হবিগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, লাখাই উপজেলায় বামই উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রথমে প্রশ্নপত্র দেওয়া হয় ২০১১ সালের। ৪৫ মিনিট পর শিক্ষার্থীরা হৈ চৈ শুরু করলে নতুন প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়া হয়। জটিলতার জন্য অতিরিক্ত ৪৫ মিনিট সময়ও দেওয়া হয় পরীক্ষার্থীদের।

লাখাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, তিনি বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে সিলেট বোর্ডের চেয়ারম্যান ও জেলা প্রশাসক মাহমুদ হাসানকে জানান। “শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানের নির্দেশে ৪৫ মিনিট পরীক্ষা বাতিল করে নতুন করে পরীক্ষা নেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ৪৫ মিনিট সময়ও দেওয়া হয়। ” বরগুনা প্রতিনিধি জানান, পাথরঘাটা উপজেলার কে এম মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৯৬ জন ক্যাজুয়াল (২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষ) পরীক্ষার্থীর ২০১১ সালের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দেওয়ার কথা থাকলেও তাদের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে ২০১২ সালের প্রশ্নপত্রে। কেন্দ্র সচিব কে এম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর বলেন, ভুলবশত ২০১২ সালের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।

বিষয়টি বরিশাল শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। যে সব পরীক্ষার্থী ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিয়েছে, তাদের আরএমও শিট আলাদা করে রাখা হয়েছে বলে তিনি জানান। পাথরঘাটা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, ২০১১ সালের প্রশ্নের কোনো ঘাটতি ছিল না। কেন্দ্র সচিবের ভুলেই এ ঘটনা ঘটেছে। ভোলা প্রতিনিধি জানান, ভোলা সরকারি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে একটি কক্ষে বুধবার ৬৪ জন শিক্ষার্থী দুই ধরনের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিয়েছে।

পরীক্ষার্থী ইউসুফ হোসেন, সাব্বির ও ইব্রাহিম জানায়, তারা ২০১২ সালের সিলেবাস অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা দিতে আসেন। কিন্তু তাদের কক্ষে (১৬ নম্বর) ২০১১ সালের সিলেবাসের প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়। বিষয়টি তারা সঙ্গে সঙ্গে হলের দায়িত্বরত শিক্ষকদের জানালেও কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে পরীক্ষা দিতে বলেন। আরেক ছাত্র কাফি বলেন, “২০১১ সালের সিলেবাস অনুযায়ী পরীক্ষা দিতে এসে দেখি আমাকে ২০১২ সালের প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়েছে। তাই আমাদের মতো অনেকেই সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি।

” এ ব্যপারে কেন্দ্রের দায়িত্বরত শিক্ষক ও ইলিয়াস মিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. হারুন বলেন, “পরীক্ষা চলাকালে ছাত্ররা আমাদের জানায়নি। আমরাও বিষয়টি লক্ষ করিনি। ” সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব জাকিরুল হক বলেন, “শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের কাছে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে জানানো হয়েছে। “তারা বলেছেন- সিলেবাস অনুযায়ী খাতা মূল্যায়ন করা হবে।

এতে কোনো সমস্যা নেই। ” এ ব্যপারে বোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুণ কুমার গুহের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শাহ আলমগীরের ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। সর্বশেষ খবরঃ এসএসসিতে ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দেওয়া শিক্ষার্থীদের নতুন করে পরীক্ষা দিতে হবে না বলে জানিয়েছেন আন্তঃবোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি। সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন বলেছেন, দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বুধবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “যারা ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়েছে তাদের নতুন করে আর পরীক্ষা নেওয়া হবে না। ওই পরীক্ষাই বহাল রাখা হবে। ” ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা হওয়া, কোনো কোনো কেন্দ্রে ওই প্রশ্নে পরীক্ষার্থীদের কম সময় পাওয়া ইত্যাদি বিষয়ে ফল প্রকাশের আগে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। “পরীক্ষার্থীরা কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্থ হবে না। তাদের ঘাবড়ানোরও কিছু নেই।

” বুধবার এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিন বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষায় হবিগঞ্জ, রংপুর ও বরগুনায় কয়েকটি কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের মাঝে ভুল প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে হবিগঞ্জে এক ঘণ্টা পর সঠিক প্রশ্নপত্র দেওয়া হলেও রংপুর ও বরগুনায় দুটি কেন্দ্রে ভুল প্রশ্নপত্রেই পরীক্ষা দিয়েছে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী। তিন ধরনের প্রশ্নে পরীক্ষায় নেওয়ায় এ জটিলতার সৃষ্টি হয় মন্তব্য করে ফাহিমা বলেন, “২০১২ সালের নিয়মিত শিক্ষার্থী, সৃজনশীল পদ্ধতি প্রচলনের আগের শিক্ষার্থী এবং ২০০৯ সালে নিবন্ধন করা অনিয়মিত শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিচ্ছে। অনেক শিক্ষক বিষয়টি বুঝতে পারেননি। ” তিনি বলেন, “স্পষ্ট নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও যেসব শিক্ষক ভুল করেছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

” ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১২ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.