আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একুশের চেতনা ও ঢাকা কেন্দ্রিক ভাষা চর্চা

অন্তহীন আমাদের পথচলা,জীবনের বাঁকে-বাঁকে গতির পরিবর্তন। আর চাওয়া - পাওয়ার অসম সমীকরণ। এই নিয়েই আমাদের জীবন শুরু হয়েছে ভাষার মাস ফেব্রুয়ারী। ভাষার জন্য বাঙ্গালী জাতির সূর্যসন্তান রফিক,শফিক,জব্বার,শফিউরের মহান আত্মত্যাগের গৌরবময় বীরত্বগাথা লেখা এই মাসে। এই মাস তাদের রক্তস্নাত মাস,যেমন রক্তস্নাত আমাদের ভাষার প্রিয় বর্ণমালা ও আমাদের মুখের বুলি।

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের প্রধান উদ্দেশ্যে ছিল প্রিয় মায়ের ভাষার মর্যাদা রক্ষা । বাংলা “মা” ডাকটিকে প্রতিষ্ঠা করা। অপমান হতে মাতৃভাষাকে রক্ষা করা। দ্বিতীয় উদ্দেশ্য ছিল জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে বাংলা ভাষার বহুল ব্যবহার। বাংলা ভাষাকে সারা বাংলায় এবং বিশ্বের সব বাংলা ভাষাভাষীদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার ব্রতও ছিল ভাষা আন্দোলনের অন্যতম একটি চেতনা।

কিন্তু সারা দেশে বা সর্বস্তরে বাংলা ভাষা ছড়িয়ে দেয়ার যে ব্রত ছিল তা মনে হয় সফল হয়নি। ভাষা চেতনার এই ৫১ তম বর্ষে এসেও বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম ভাষা বাংলা মাথা কুটে মরে। ভাষার যে আন্দোলনে তা মূলত হয়েছিল ঢাকায়,আরো সঠিক করে বললে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাই সেখানে এই ভাষা চর্চার নেতৃত্ব থাকবে এটা স্বাভাবিক,তবে একটা জায়গায় তার কেদ্রীভূত হয়ে থাকা কখনোই মনে হয় সঠিক কোন অবস্থা। বাংলা একাডেমীর প্রতিষ্ঠা হয়েছিল বাংলা ভাষাকে ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষেই।

কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানটি তার দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলা একাডেমী বর্ধমানতলার বটগাছের বাইরে আর যেতে পারেনি। সরকারী পূর্ণ পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়ার পরেও ব্যর্থ বাংলা একাডেমী। অন্তত দেশের বড় শহরগুলোতে তো বাংলা একাডেমীর একটি করে শাখা থাকতে পারতো? বাংলা বইয়ের প্রকাশনা ও বাজারজাতকরণটাও ঢাকায়ই কেন্দ্রীভূত। বাংলাবাজার কেন্দ্রীক বইয়ের প্রকাশনা এর জন্য দায়ী।

এটাও কি একটু ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে পারতো না? বইমেলার কথা যদি বলি তাও ঢাকায়,অন্য শহরে যা হয় তা যৎসামান্য,অনেকটাই ব্যক্তিগত উদ্যোগের ফলে। সরকারী প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগে কি বইমেলা অন্য কোথাও করা সম্ভব না? উপরে বর্ণিত বাধাগুলো দূর হোক,একুশ ও ভাষার চেতনা ছড়িয়ে যাক সবখানে,সবার মাঝে। জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে বাংলা প্রতিষ্ঠিত হোক। এই কামনায়। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।