আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একুশের পদক

একুশের পদক



একুশের চেতনা চিরঞ্জীব। একুশের চেতনায় উচ্চকিত হয়ে বাঙালি জাতি গর্বিত। বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিকাশে একুশের ভূমিকা অপরিসীম। একুশের জন্যেই আজ আমরা একটি স্বাধীন জাতিসত্তায় পরিণত হয়েছি। সর্বস্তরে বাংলা ভাষা চর্চার মাধ্যমে উন্নত জাতি হিসেবে নিজেদের দাঁড় করাতে পারলে, ভাষা শহীদদের প্রতি যথার্থ সম্মান জানানো হবে।



একুশের পদক বাংলাদেশের একটি জাতীয় পুরুষ্কার। বাংলাদেশের বিশিষ্ট সাহিত্যিক, সাংবাদিক, অর্থনীতিবিদ, দারিদ্র বিমোচনে অবদানকারী সামাজিক ব্যক্তিত্ব ও প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় পর্যায়ে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি প্রদানের উদ্দেশ্যে ১৯৭৬ সাল থেকে একুশে পদক দেয়া হচ্ছে। ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে ১৯৭৬ সালে এই পদকের প্রচলন করা হয়। ২০১৪ পর্যন্ত ৪৫১ জন গুণী ব্যক্তি ও ২টি প্রতিষ্ঠানকে একুশে পদক প্রদান করা হয়েছে। একুশে পদকে ১লক্ষ টাকা, ১৮ ক্যারেট স্বর্ণের মেডেল এবং একটি সনদ দেয়া হয়।

পদকটির ডিজাইন করেছেন নিতুন কুন্ড্ ুপ্রত্যেক পদকপ্রাপ্তকে একটি স্বর্ণপদক, সম্মাননা সনদ এবং পুরুষ্কারের অর্থমূল্য দেয়া হয়ে থাকে। পুরুষ্কারের অর্থমূল্য বর্তমানে একলক্ষ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে।

সমাজে সব মানুষেরই কিছু না কিছু কাজ করতে হয় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকার প্রয়োজনে, জীবন-জীবিকার তাগিদে। এর মধ্যে কিছু মানুষ নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেও সৃষ্টিশীল কিছু কাজে আত্মনিয়োগ করে থাকেন।

সাহিত্য ও কাব্যচর্চা, শিল্পকলা, অভিনয় ও সঙ্গীতা ললিতকলার আরও কিছু ক্ষেত্রে কিছু করতে সচেষ্ট হন।

যে কোন ভালো কাজের স্বীকৃতি পাওয়া মানুষের ন্যুনতম প্রত্যাশা। আর তা পূরণ হলে তাদের আনন্দের সীমা থাকে না। সে স্বীকৃতি যদি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে হয়, তবে তা অনাবিল স্বর্গীয় সুখে তাঁদের মন ভরে দেয়। ১৯৭৬ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ৩৯ বছরে মোট ৪৫১ জন ব্যক্তি ও দুটি প্রতিষ্ঠানকে একুশে পদকে ভূষিত করা হয়। এর মধ্যে সাহিত্যে ৮৬টি, সঙ্গীতে ৬৫টি এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ পদক ৬০ জনকে শিক্ষাক্ষেত্রে পদক প্রদান করা হয়।

সাংবাদিকতায় এ পর্যন্ত মোট ৫২ জন এ বিরল সম্মান অর্জন করেন। নাট্যশিল্পে ২০ জন ও চারুশিল্পে ১৮ জন। অপ্রিয় হলেও সত্যি যে, ভাষা আন্দোলনে যারা অকাতরে জীবন বিলিয়ে দিলেন সেই আবুল বরকত, আব্দুল জব্বার, আব্দুস সালাম, রফিক উদ্দিন আহমদ এবং শফিউর রহমান একুশে পদক পান ২০০০ সালে। ভাষা আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী এ্যাডভোকেট মোঃ গাজীউল হকও ২০০০ সালে একুশে পদক পান। মহান একুশের কালজয়ী গানটির রচয়িতা বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য দিকপাল সাংবাদিক আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীকে একুশে পদক দেয়া হয় ১৯৮৩ সালে।

একুশে ফ্রেব্র“য়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণার অন্যন্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ‘দ্য মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ লাভারস অব দ্য ওয়ার্ড’ কে একুশে পদক দেয়া হয় ২০০১ সালে।

২০১৪ সালে অর্থাৎ বর্তমান বছরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য দেশের ১৫ জন বিশিষ্ট নাগরিককে একুশে পদকের জন্য নির্বাচন করা হয়। ২০ ফেব্র“য়ারি প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে পদক প্রদান করেন।

এবারে যারা পদক পাচ্ছেন:
ভাষা আন্দোলন : শামসুল হুদা
,, : মরহুম বদরুল আলম (মরনোত্তর)
শিল্পকলা : সমরজিৎ রায় চৌধুরী
,, : রামকানাই দাশ
,, : এস এম সোলায়মান (মরনোত্তর)
,, : কেরামত মওলা
সাংবাদিকতা : গোলাম সরওয়ার
গবেষণা : এনামুল হক
শিক্ষা : অনুপম সেন
ভাষা ও সাহিত্য : জামিল চৌধুরী
,, : বেলাল চৌধুরী
,, : রশীদ হায়দার
,, : বিপ্রদাশ বড়–য়া
,, : মরহুম আব্দুস শাকুর (মরনোত্তর)
সমাজসেবা : অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

পদক মানুষকে উৎসাহিত করে, প্রাণিত করে। একুশে পদক রাষ্ট্র কর্তৃক প্রদত্ত হওয়ায় এর গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি।

কারণ একুশ আমাদের জাতীয় জীবনে এক গৌরবময় ও ঐতিহ্যবাহী দিন ও অধ্যায়।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।