আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভার্চুয়াল লাইফের তিনটি বছর; এলোমেলো কিছু কথা

আনাড়ী রন্ধন শিল্পীর ব্লগ B-)। ব্লগের বাজে-মানহীন লেখাগুলোর মাস্টার পিস দেখতে চাইলে এই ব্লগারের পোষ্ট গুলো পড়ে দেখতে পারেন। কথা দিচ্ছি, নিরাশ হবেন না। B-) এইত সে দিন; ভাইয়া ব্লগ পড়তো, আমি একবার এক পোষ্ট দেখে খুব কমেন্ট করতে মন চাইলে ভাইয়া বললো এখানে একাউন্ট খুলতে হয় কমেন্ট করতে চাইলে। পরে ও-ই খুলে দিলো, নিকটাও ওর পছন্দের-ই।

ফেসবুকটা মনে হয় নিজেই খুলেছিলাম, একই সময়ে। প্রথম দিকে কিচ্ছু বুঝতামনা (এখনও যে ভাল বুঝি তা না), পরে আস্তে আস্তে কিছুটা বঝেছি। ফেসবুকের প্রথম ফ্রেন্ড যে কে ঠিক মনে পরছে না, দুজনের মাঝে দ্বন্দ লেগে গেছে স্মৃতিতে। আস্তে আস্তে ফ্রেন্ড বাড়তে লাগল। তখন কোন বাছ বিচার না করেই সবাইকে অ্যাড করতাম, তবে আমি রিকোয়েস্ট পাঠাতাম খুব কম।

কেউ রিকোয়েস্ট পাঠালে খুব অবাক হতাম সে কিভাবে আমাকে চিনলো বা আমার আইডি কোথায় পেলো এই ভেবে। এইটুকু বোঝার বুদ্ধি ছিলোনা যে ফেসবুকে এটা কোন ব্যাপার-ই না। এটা বুঝতে আমার অনেক সময় লেগেছিলো! সামুতে অনেকের সাতদিন শেষ হতে অনেক সময় লেগ যায়, কারো বছর পেরিয়ে যায়। কিন্তু আমার সাতদিন সাতদিনেই শেষ হয়েছিলো। প্রত্যেকদিন দেখতাম একদিন একদিন করে কমছে।

ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করতাম আর কতদিন....একদিন ঠিকই ছাড়া পেয়ে গেলাম। পুরোদমে লিখে যেতে থাকলাম। আমার একসময়ে খুব ইচ্ছে ছিলো পত্রিকায় লেখালেখির। ম্যাগাজিনে লিখবো, সবাই পড়বে! কি আনন্দের ব্যাপার। কিন্তু সে আনন্দের ব্যাপার আমার ঘটেছে খুব কম-ই।

কারন লেখা খুব একটা ছাপা হতো না। সামুতে এসে আমার সেই শখটা কিছুটা হলেও পূরন হয়েছে। যা-ই লিখিনা কেনো প্রকাশ হবেই। ভাল খারাপ যাই হোক পাবলিক পড়বেই (তবে এটার একটা খারাপ দিকও রয়েছে)! লিখতে লিখতে অনেকের সাথেই পরিচয় হলো। চেনা-জানা নেই, দেখা নেই অথচ কত কাছের মানুষ তারা! ফেসবুক-সামু সব সমান তালেই ছিলো।

একটা সময় চ্যাট করতে কি যে ভাল লাগত বোঝাতে পারবো না! এমনও সময় গিয়েছে এক সাথে ৪/৫ জনের সাথেও করেছি। ২জনের সাথে ত ছিলো মামুলী ব্যাপার। তবে আমি কাউকে নক করতাম খুব কম। মাঝে মাঝে কেউ নক করলে বিরক্তও লাগত, তখন অফ লাইনে যাওয়ার অপশনটা জানা ছিলো না। একজন-দুজন করে ব্লগের মানুষকে যখন ফেসবুকে দেখা পেতাম কিযে আনন্দ লাগত বলে বোঝানো যাবে না।

কেউ কেউ বড় ভাইয়া আপুর মত গাইড দিতেন। সব সময় বলে যেতেন ভা্চুয়াল লাইফে কিভাবে সময় কাটাবো (এখনও বলেন)। ভার্চুয়াল লাইফে ভার্চুয়াল থাকার পরামর্শ সব সময় দিয়ে এসেছেন, যদিও আমি পুরোপুরি পারিনি। সেটা আমার বুদ্ধির ভূলেই ছিলো, কখনও কখনও এর ফলে এমন ভুলও করে ফেলেছি যার মাশুল আর হয়ত সম্ভব না। তার পরেও এত ভাল ভাল কিছু মানুষের সাথে পরিচয় হয়েছে যে ভাবলে খুব ভাল লাগে।

তবে এমনও মানুষ রয়েছেন যাদের ব্যবহারে এতটাই কষ্ট পেয়েছি, এতটাই অবাক হয়েছি যে ফেসবুক ছাড়তে বাধ্য হয়েছি। ব্লগের নেশাটাও হয়ত কমে যাচ্ছে (যা চাইনি এত তাড়াতাড়ি)। ব্লগে যখন কিছুদিন না আসি কোন কোন ব্লগার জিজ্ঞেস করেন পিচ্চি কি অবস্থা! কেন অনুপস্থিত ছিলাম জিজ্ঞেস করেন। ফেসবুকে ডিঅ্যাক্টিভ থাকলে যখন ফোন করে জিজ্ঞেস করেন কোন সমস্যা কিনা; সত্যি বলছি তখন কি যে ভাল লাগে আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না! আমার প্রতি ভালবাসার প্রমান হিসেবেই এটাকে ধরে নিই। কিন্তু বিশ্বাস করেন, আমার মনে হয় এতটা ভালবাসা পাওয়ার যোগ্য আমি না, যতটা পেয়ে আসছি।

যত বাজে লেখাই লেখি না কেন সবাই আদর-আশকারা দিয়ে এসেছেন বলেই এই পর্যন্ত আসতে পেরেছি। এই জন্যেই না নীল-দর্পন থেকে আজকে আমি নীলু । একদম মন থেকেই বলছি আমার আসল নামের চেয়ে আদর মাখা নীলু নামটা আমার কোন অংশে কম পছন্দের না। বরং নীলু'র প্রতি-ই একটু বেশী টান মনে হয়। এ সব কিছুই আমার তিনটি বছরের বেশী সময়ের পাওয়া।

সব সময়ই বলি যতটা পেয়েছি ততটার যোগ্য আমি নাই। কিছু কিছু ব্যক্তি রয়েছেন যাদের নাম উল্লেখ করতে চেয়েছিলাম কিন্তু পরে সিদ্ধান্ত বদলালাম। যারা আমাকে এই পর্যন্ত আদর-ভালবাসা-শাসন দিয়ে ঋণী করেছেন তাদের কাছে আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ। কিছুদিন যাবত কেন যেন কথাগুলো খুব মনে হচ্ছিলো। কখনই গুছিয়ে কিছু লিখতে পারিনি, মনের কথা প্রকাশ করতে পারিনি।

আজও পারলাম না। তাই এলোমেলো কথামালা এলোমেলোভাবেই প্রকাশ! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.