২১ লাখ টাকার বিনিময়ে তিন আসামিকে ক্ষমা করতে রাজি হয়েছে কুয়েতে খুন হওয়া বাংলাদেশী নাগরিক মহিদুলের পরিবার। আসামিদের সবাই প্রবাসী বাংলাদেশী। শ্রম ও জনশক্তি কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে একটি অনুরোধপত্র আসার পরই তিন বাংলাদেশীকে ক্ষমা করার সিদ্ধান্ত হয়। বৃহস্পতিবার মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে মহিদুলের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের পরিবারের বৈঠকে এই সমঝোতা হয়েছে। মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক গোলাম সারোয়ার, মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নিজাম উদ্দিন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান হান্নানসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুরাইয়া পারভিন মানবজমিনকে জানান, মন্ত্রণালয়ের চিঠি গত ২২শে জানুয়ারি আমাদের হাতে আসে। তার প্রেক্ষিতেই ভিকটিমের পরিবারকে রাজি করার চেষ্টা চলে। মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও কুমিল্লার জেলা প্রশাসকদের জানিয়েই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। উল্লেখ্য, সিঙ্গাইরের তাহের আলীর ছেলে মহিদুল (৪৫) গত বছর কুয়েতে খুন হন। তার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম কুয়েতে মামলা করলে সেখানকার আদালত তিন প্রবাসী বাংলাদেশীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।
উচ্চ আদালতও এই রায় বহাল রাখে। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বাগবাড়ি বিবন্ধী গ্রামের ইকবাল ঢালী (২৫), তার ভাই হৃদয় ঢালী (২৩) এবং কুমিল্লার হোমনার রবিউলের ছেলে রমজান। রায়ের পর থেকেই রমজান ও ঢালী ভাইদের পরিবারের পক্ষ থেকে মৃত্যুদণ্ড মওকুফের চেষ্টা শুরু হয়। কিন্তু কুয়েতের আইন অনুযায়ী কেবল নিহতের পরিবার ক্ষমা করলেই সেখানকার সরকার দণ্ড মওকুফ বা লাঘব করতে পারে। এই প্রেক্ষিতে মহিদুলের মেয়ে ও ভাই-বোনের কাছে ইকবাল, হৃদয় ও রমজানের প্রাণভিক্ষা চাওয়া হয় পরিবারের পক্ষ থেকে।
বৃহস্পতিবার সিঙ্গাইর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যস্ততায় দুই পক্ষের বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে রাতে গোলাম সারোয়ার বলেন, নিহতের পরিবার ৬০ লাখ টাকা দাবি করেছিল। তবে আলোচনার পর তারা ২১ লাখ টাকার বিনিময়ে ক্ষমা করতে রাজি হয়েছে। এ বিষয়ে নিহত মহিদুলের ছোট ভাই হাবিব মানবজমিনকে বলেন, হত্যার পর খুনিরা আমার ভাইয়ের শরীরে পেট্রল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় লাশ যাতে চেনা না যায়। এরপর সে দেশের আদালতে আমরা মামলা করি খুনিদের বিচার চেয়ে।
কুয়েত সরকার রায়ে ফাঁসি দেয়। কিন্তু এরপর থেকে আমাদের কাছে খুনির পরিবার বারবার প্রাণভিক্ষা চেয়ে আসছে। শ্রম ও জনশক্তি মন্ত্রণালয় থেকেও আমাদের বোঝানোর চেষ্টা করা হয়। আমরা এতেও রাজি ছিলাম না। পরে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সিঙ্গাইর উপজেলার প্রশাসনের অনুরোধে ঘটনাটি মীমাংসায় গড়ায়।
মানবজমিন থেকে শেয়ার করা হয়েছে।
লিনক.
Click This Link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।