আমার দেশের ফুলের সৌন্দর্য আমাকে মুগ্ধ করে, সে ফুলের গন্ধে আমি বিমোহিত। আরো কাছ থেকে দেখতে চাই এদেশের গাছ, ফুল, প্রকৃতিকে। সেদিন বলধা গার্ডেনে গিয়েছিলাম হংসফুল এর খোঁজে। সময়ের হিসেবে একটু গন্ডগোল হয়ে গিয়েছিল বুঝতে পারিনি আগে। Aristolochia জেনাস এর দুধরনের গাছ আমাদের দেশে আছে।
এদের ফুল দেখতে হাসের ফুলের মত বলে হংশফুল নামে ডাকা হয়। একটি প্রজাতি গ্রামে এখনো পাওয়া যায়। আরেকটি সচরাচর যায়না। সেটার খোজেই গিয়েছিলাম। এটি যে আরো আগে ফোটে মনে ছিলনা।
তারপর আরো মন খারাপ হয়ে গেল যখন পৌছানোর পর জানতে পারলাম বলধা গার্ডেনে সাইকি বিভাগে প্রবেশ করা যাবেনা। কারণ - অনুমতি লাগবে, যিনি অনুমতি দেবেন তিনি এই মুহুর্তে নেই। কাল আবার আসতে হবে। যাক, শেষ পর্যন্ত বলধা গার্ডেনের সাধারন অংশে ঢুকে দু:খ কমাতে চাইলাম। কিন্তু, শীতকাল হওয়ায় তেমন কোন ফুলের দেখা নেই! অল্প কিছু হলুদ অশোক ফুটে আছে, একে বারে ডান পাশ দিয়ে আরো এগিয়ে যেতেই চোখে পড়লো গোলাপজামের ফুল, দেখতে অনেকটাই জামরুল ফুলের মতো।
গোল্ডেন শাওয়ার গাছে এখনো ফুলের দেখা নেই, নেই নীলমণি লতার ফুলের বার্তা। বলধা গার্ডেনে ডুকডুকি নামের একটি গাছ আছে যাতে অদ্ভুতদর্শন ফুল ফোটে। বের হয়ে আসার সময় চোখে পড়লো গাছটি। একেবারেই ঢোকার সময় ভূজপত্র গাছ পেড়িয়েই ডান পাশে একটি গাছ আছে, দেখতে গেলাম সেটা। দেখলাম এ গাছে বেশ কটি ফুল আছে! আগেই দেখেছি এ ফুল।
এর নাম নেপোলিয়ানস হ্যাট, বাংলায় ডাকা হয় রাণীমুকুট নামে। সর্বসাকুল্যে এই!
টিকিট কাউন্টারের লোকের সাথে কি মনে করে কথা বলতেই উপায় মিলে গেল সাইকি বিভাগে ঢোকার! সর্বত্রই জানা অজানা অনেক গাছ আর কিছু ফুল। ঢুকতেই পেলাম শাপলা আর নীলপদ্ম। পেলাম নাম না জানা অনেক ফুলের গাছ। পেলাম ফুটন্ত গোল্ডেন শাওয়ার এর এক ঝাড়! আরেকটু ঘুরতেই পেয়ে গেলাম ভুতবেরাভি-র ফুল! আরো সামনে গিয়ে চোখ আটকে গেল একটু গাছের মধ্যে, দেখতে পাবো বলে আশা করিনি! লতা চালতা! সামনা সামনি কখনো দেখা হয়নি।
চিকন লতা মত কোন চালতা গাছ হয় এটা না দেখলে কেউ বুঝতে পারবেনা। ঘন্টা দেড়েকের মত মন্ত্রমুগ্ধের মত ঘুরে বের হয়ে আসলাম ইট-কাঠ-পাথরের শহরে। আবার আসবো সাইকি বিভাগে। হংসফুল যে আমাকে দেখতেই হবে! দেখতে আসবো জংলিবাদাম, সাদা চাম্পা, স্বর্ণচাপা, উদয়পদ্ম, রাজঅশোক, বনজাম, ঝুমকোলতা .. আরো কতো ফুল! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।