পুরান ঢাকার ওয়ারীতে অবস্থিত
বলধা গার্ডেনকে অভিহিত করা হয় ফুল ও
উদ্ভিদের জাদুঘর হিসেবে। এক সময়
দেশী বিদেশী প্রকৃতি প্রেমীরা এখানে ভীড়
করতেন নির্মল হাওয়ায় নির্জনে একটু
প্রাকৃতিক সূধা পান করতে। কিন্তু এই
উদ্ভিদ জাদুঘর এখন পরিণত হয়েছে এক
প্রেমকাননে। মনুষ্যপ্রেমীদের
দাপটে নির্বাসিত বৃক্ষপ্রেমীরা।
ঘটনাটা খুলেই বলা যাক।
প্রাকৃতিক
নৈস্বর্গের এই অপরূপ লীলাভূমিতে ঢুকেই
যে কারও চোখে পড়বে ‘এখানে এমন
কিছু করবেন, যাতে কেউ বিব্রত হয়’
লেখা সাইনবোর্ড।
লেখাটা পড়ে অনেকেরই একটু
খটকা লাগতে পারে। খটকা লাগারই
কথা। কিছু দুষ্ট প্রকৃতির মানুষ ‘না’
শব্দটি তুলে ফেলায়ই
ধাক্কাটা খেতে হল আপনাকে।
তবে সাইনবোর্ডের শব্দগুলোর মর্ম উদ্ধার
করতে হয়ত দু’শ গজও হাটতে হবে না।
হয়ত
পাশের ফ্লাটের স্কুল
পড়ুয়া মেয়েটিকেই
পেয়ে যেতে পারেন কোন ছেলের
সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায়।
রাজধানীর অন্যতম ঐতিহ্যবাহী উদ্ভিদ
পার্কটি পরিণত হয়েছে অশ্লীলতা,
নোংরামি আর মাদকসেবীদের আখড়ায়।
এখন আর কোন ভদ্র, রুচিশীল মানুষ
পরিবার-পরিজন নিয়ে এখানে আসার
সাহস করেন না। পার্কটিতে প্রবেশ
করলে যে কাউকেই পড়তে হবে বিব্রতকর
অবস্থায়। এমন দৃশ্য চোখে পড়বে যা হয়ত
বাইরে প্রকাশ করতেও কুণ্ঠাবোধ করবেন
অনেকে।
গার্ডেনের ভেতর যেখানে একসময় সব
বয়সি মানুষের ভীড় লেগে থাকত, ভোর
হলেই শরীরচর্চার জন্য ছুটে আসত শিশু
থেকে পৌঢ়রা, সেখানে এখন শুধু তরুন-
তরুনীদের আড্ডা। সবার বয়স পনের
থেকে তিরিশের মধ্যে। গাছের
ফাঁকে ফাঁকে দেখা মিলবে স্কুল
ড্রেসপরা ছাত্রীদের।
চোখে পড়বে হাতে হাত ধরে যুবক-
যুবতীদের চুম্বন দৃশ্য
বা এরচেয়ে বেশি কিছু! পদ্মদিঘীর
পাড়, শতায়ূ উদ্ভিদের আড়াল, গোলাপ
বাগান, আঙুর বাগান বা বাঁশ ঝাড়ের
আড়ালে জোড়া জোড়া তরুণ-
তরুণীকে নিজ সংস্কৃতি, সামাজিক ও
ধর্মীয় মূল্যবোধ
অকাতরে বিলিয়ে দিতে দেখা যাবে।
আপত্তিকর অবস্থায় চোখের
সামনে পড়ে যেতে পারে নিজের
একান্তই ঘনিষ্ঠ কেউ।
রাজধানীর এক সময়ের অন্যতম
বিনোদনকেন্দ্র এই পার্কটির চরিত্র
হননের (!) পেছনে পার্ক কর্তৃপক্ষের
অবহেলাকেই দায়ী করছেন সবাই।
দিনের পর দিন চোখের সামনে এসব
অসামাজিক কর্মকাণ্ড চলে আসলেও
কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে নিরব দর্শকের
ভূমিকা পালন করছে। আইন-
শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও নিশ্চুপ।
উল্টো পার্কে আসা যুবক-যুবতীদের
থেকে টাকা নিয়ে তাদের
অসামাজিক কার্যকলাপের সুযোগ
করে দেওয়ার অভিযোগও
রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এখনই এ
ব্যাপারে ব্যবস্থা না নিলে অচিরেই
হয়ত নিজের সন্তানটিকেই
দেখা যাবে নৈতিক অবক্ষয়ের শেষ
সীমায় দাঁড়িয়ে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।