আমি যমুনা; সুপ্রমত্তা, সুপ্রবহমানা, যমুনা!
সুবিস্তৃত জলরাশি বুকে আমি সতত সঞ্চরণশীলা।
যৌবনমদে মদমত্তা, রস-ভারাক্রান্তা রমনীর লীলা
রাধিকায় হার মানে, কৃঞ্চ যে মানে পরাভব
জানেনা সে দুর্দম, দুরন্ত, দুর্নিবার-রমনীর স্বভাব।
শাসনে বাঁধিতে চাও ফুঁসে ওঠে নারী,
বিনা দোষে দন্ডিতা সহিতে না পারি
করে বিদ্রোহ থেকে থেকে, দিকে দিকে, অবশেষে
হার মানে তোমাদের ক্ষমাহীন কৌশলের কাছে;
হয়ে পরে নিরুত্তাপ, নিরুদ্যম, নিস্তেজ অসাড়,
অকাল যৌবনহীনা, ছলা-কলা-লীলাহীন অসার।
তনু-মন ছেয়ে যায় ক্লন্তি, হতাশা, বেদনার কালিমায়
ব্যর্থ ক্ষুব্ধ রমনীর সুতন্বী দেহ হয় অতিকায়।
একদা ক্ষীণকটির মধ্যপ্রদেশ
যেমন স্থুল হয় গতিহীনতায়
যেমন সে মৃতবৎ হাস্য-লাস্যহীন
তোমরা কি দেখতে চাও আমাকেও তাই?
কেন করিছ তোমরা আমায় শাসন?
কেন এত অবিশ্বাস? শুনতে কি পাওনা
মোর ব্যাথাদীর্ণ বক্ষ হতে প্রবাহিত দীর্ঘশ্বাস?
শাসনে, বাধঁনে থেকে নিদারুণ যন্ত্রণায়
ভুলে গেছি বংশী, গীত, শ্যাম , রাধিকায়।
তাজমহলের ছায়া এই বুকে পড়ে,
আরশীমম বক্ষ মোর প্রেমের প্রতিবিম্ব ধরে।
ঊষার রবি আর গোধুলীর সুরুজ সহস্রধা
রাতে শশী কুটি কুটি, তারার মিটিমিটি বাঁধা
পড়ে রামধনুর সপ্তবর্নে বর্ণিল জলরাশি
সাগরে মিলাতে চায় কলকল-খলখল হাসি।
বাঁধা পেয়ে ফুলতে থাকে জমতে থাকে চর
বক্ষ মোর বিদীর্ণ হয়, গজিয়ে ওঠে বালুময় দ্বীপ-- ঊষর।
আমাকে বাঁচতে দাও তোমাদেরই তরে,
আমার আপন পথে স্বনিয়মে চলতে দাও মোরে।
করিওনা অবরোধ, ঘটিওনা সেই পরিণতি-
করতোয়া, নবগঙ্গা, মধুমতিদের জীবনের ইতি
যেভাবে ঘটিয়াছে অলক্ষে, প্রত্যক্ষে, নিরবে;
তেমনি না হোক মোর– এই মিনতি সবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।