হা হা হা পায় যে হাসি!!! [এই পোস্ট সবার উদ্দেশ্যে লেখছি না। অধ্যাপক গোলাম আযমের গেলমান বা গেলমানের সন্তান না হলে এটা হজম করার সামর্থ থাকার কথা না। তবে অনেক গেলমান বা গেলমানের সন্তান ভদ্রসমাজে গেলমানগিরির ব্যাপারটা সরাসরি স্বীকার নাও করতে পারেন, তাই কাউকে বিব্রত না করার কথা বিবেচনা কাউকেই ট্যাগ করলাম না। যারা ট্যাগিত হতে চান, জানালে করব। ]
আমি অধ্যাপক গোলাম আযমকে আমি সমীহশ্রদ্ধা করি।
ভালোবাসি। আমি তার প্রেমে আকুল।
এর প্রথম কারণ বাবার প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল। বাবা জামায়াতে ইসলামী করতেন। মফস্বলের পরিশ্রমী ও ত্যাগী নেতা ছিলেন।
তিনি তার প্রিয় নেতা অধ্যাপক গোলাম আযমের ফুলটাইম গেলমান ছিলেন, তার সাথে নিরিবিলি সময় কাটাতে অনেক পছন্দ করতেন। এই পছন্দের মূল্য দিতে আমার বাবা অধ্যাপক গোলাম আযমের একটি সন্তানধারনের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু বাবা পুরুষ বিধায় সরাসরি সেটি করা সম্ভব হল না। বাবাকে যেতে হল ঘুর পথে অর্থাৎ পেছনে ঘুরে বাবা অধ্যাপক গোলাম আযমের রহমত নিজের মধ্যে নিলেন, পরদিন সোজা পথে বাবা সেই রহমত ট্রান্সফার করালে আমার মায়ের মধ্যে। নাস্তিক এবং বাকশালি পাঠক এর মধ্যে বিজ্ঞান খুঁজতে যাবে, কিন্তু আমি বলব সবই আল্লাহর কুদরত, খোমেনীর মা-বাবার পেটে অধ্যাপক গোলাম আযমের রহমত।
যাই হোক, এভাবেই বাবা অধ্যাপক গোলাম আযমের সন্তানের মাতা বা পিতা বা কিছু একটা হলেন এবং আমার নাম রাখেন গোলাম আযম। বাবা যাকে শ্রদ্ধা করেন তাকে আমিও শ্রদ্ধা করি। যাকে ভালোবাসেন তাকে আমিও ভালবাসি। যাকে সমীহ করেন তাকে আমিও সমীহ করি। বাবা যার গেলমান আমিও তার গেলমান।
দ্বিতীয় কারণ হল ব্যক্তিগতভাবে অধ্যাপক গোলাম আযমকে আমার ভাল লেগেছে। ১৯৯৮ সালের দিকে তার সাথে আমার দেখা হয়েছিল। তখন আমি মাত্র কিশোর বয়সে পদার্পন করেছি। বাবা চাইলেন আমিও যেন তার মত ছোটবেলা থেকেই অধ্যাপক গোলাম আযমের একজন প্রানপ্রিয় গেলমান হতে পারি। আব্দুশ শহীদ নাসিম আঙ্কেলের সাথে মগবাজার থেকে এটিএম আজহার চাচার গাড়িতে চড়ে গেলমান হবার জন্য গিয়েছিলাম কাজী অফিস লেনের মসজিদে।
সেখানে জোহর নামাজের শেষে অধ্যাপক গোলাম আযমের সাথে দেখা হল। আমি সালাম দিলাম। তিনি হাত বাড়িয়ে আমার হস্তমর্দন করতে থাকলেন। হাসিমুখে জানতে চাইলেন, ‘গেলমান হতে এসেছ?’ আমি বললাম, ‘জ্বী’। শুনেই তিনি হেসে ফেলেন।
মুচকি হাসি। বললেন, ‘তুমি তো খুব ছোট এখনও। আমার গেলমান হওয়া কিন্তু অনেক কঠিন কাজ। অনেক শক্তির প্রয়োজন। তুমি পারবে তো?’ আসলেই আমি তখনও প্রায় শিশু।
জবাবে বলেছিলাম, ‘আমিও আরেকটা গোলাম আযম। আপনার শক্তির কিছু অংশ আমার মধ্যেও বিদ্যমান। ’ নাসিম আঙ্কেল, আজহার চাচাসহ উপস্থিত সবাই আমার কথা শুনে হেসে ওঠেন। তখনো আমার হাত ধরে আছেন অধ্যাপক গোলাম আযম। আরেকটু হৃষ্টপুষ্ট হয়ে আবার যেন তার কাছে যাই বললেন।
তারপর আমরা চলে এসেছি। সেই হাত ধরে থাকা সময়ে ওই যে আমার হস্তমর্দন করছিলেন, সেটুকুনই আমার কিশোর মনকে জয় করে ফেলেছিল। তার সুন্দর হাসি, সাদা দাড়ি আর সুতি টুপি আমাকে চিরস্থায়ীভাবে পাগল করে তুলেছিল। তার ব্যক্তিত্ব আমার ভাল লেগেছে। তার শক্ত হাতের স্পর্শ আমার ভাল লেগেছে।
আরো কয়েকবার দেখা হয়েছে। কথা হয়নি। তিনি বক্তৃতা দিয়েছেন আমি তন্ময় হয়ে শুনেছি। এতটুকুনই। তাতেই বারেবারে মনে হয়েছে একটি কথা লোকটি সবল।
তৃতীয় কারণটি হলো অধ্যাপক গোলাম আযমের অবসর জীবনের কর্মকান্ড। তিনি দলের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন দলটির সহযোগী দুটি গণসংঠন ইসলামী ছাত্র শিবির ও ইসলামী ছাত্রী সংস্থার নেতাকর্মীদের গেলমানিক মান উন্নীত করার কাজে। দলের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বেশ কিছু চটি সাইজের বইও লেখেন এই সময়। যার বেশির ভাগই গেলমান সংক্রান্ত যেমনঃ কিভাবে হবে একজন সফল গেলমান, কিভাবে হবে একসাথে একাধিক ব্যক্তির গেলমান, গেলমানগিরি ফর নির্বোধ, গেলমানগিরির সময় শরীর সুস্থ রাখার ১০১টি উপায় ইত্যাদি। ভবিষ্যতে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের গেলমানির প্রশ্নটিই যে রাজনীতি ছাপিয়ে বড় বিষয় হয়ে দাড়াবে এমন উপলব্ধি থেকে তিনি এসব কাজ করেন।
তার এই উপলব্ধি আমার ভালো লেগেছে। গেলমানবাদী রাজনীতিকদের মধ্যে এমন উপলব্ধি থাকা জরুরি ও দরকারি।
চতুর্থ কারণ হল তার নিজের গেলমানি জীবনের অভিজ্ঞতা সামনে রেখে সারা দুনিয়ার বর্তমান গেলমানগিরির বিভিন্ন কায়দাকানুন সম্পর্কে ওয়াকেবহাল থাকার শর্ত। নিজেদের নেতাদের ছাড়াও আমাদের কাছে মাঝেমাঝেই সৌদি আরব, কুয়েত, লিবিয়া, ইরান এবং মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশ থেকে মেহমান আসেন। তাই তাদেরকে পরিপূর্নভাবে সন্তুষ্ট করতে হলে সেসব দেশের মানুষের চাহিদা, নতুন নতুন স্টাইল জানা অত্যাবশ্যক।
সেজন্য ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা থেকে আমার শেখার একটি বড় জায়গা হলেন অধ্যাপক গোলাম আযম। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মেহমানদের চরিত্রগত বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ওয়াকেবহাল হওয়ার সুযোগটাও আমি পেয়েছি অধ্যাপক গোলাম আযমের কাছ থেকে।
এখন আমি আল্লাহর লাখো শুকরিয়া আদায় করি যে, অধ্যাপক গোলাম আযমকে বুঝতে পারার জন্য আমি বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক দলের গেলমান হবার ফুরসত পেয়েছি। তাকে বুঝতে গিয়েই আমি বাংলাদেশই শুধু নয়, পৃথিবীর বহু দেশের সব ইসলামি রাজনীতিকের ভালবাসা নেয়ার ফুরসত পেয়েছি। যে কারণে গেলমান কার্যসম্পাদনকালীন সময়কার তীব্র ব্যাথা আমাকে কখনো তাড়া করেনি।
বরং ঐতিহাসিক করণকর্তব্য সম্পাদনের ভালো লাগা আমাকে প্রাণিত করেছে।
-------------------------------------------------------------------------
রাইসুল জুহালার কথাঃ লোকের গালাগালির কারনে হোক বা যেকোন কারনেই হোক, খোমেনি মূল নোটের শুরুর প্রারম্ভিক সতর্কবার্তায় কিছু পরিবর্তন এনেছে এবং সেই সাথে অরিজিনাল নোটটা মুছে ফেলেছে। নতুন নোটের লিঙ্ক - Click This Link
এছাড়া অরিজিনাল নোটটা ব্লগেও পাওয়া যাবে এই লিঙ্কে ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।