সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ জানিয়েছে, ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিনের উপর হামলা ও হত্যা চেষ্টায় জড়িত সাদ আল নাহিন (২৪), কাওসার (২৬), কামাল (২৩) ও কামালকে (২৮) মিরপুর, যাত্রাবাড়ি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে হামলায় ব্যবহৃত ১টি ছোরা, ১টি বাই-সাইকেল ও জিহাদী বই সহ অন্যান্য আলামত উদ্ধার করা হয়। গত ১৪ জানুয়ারি উত্তরা এলাকায় রাত সাড়ে দশটার দিকে অফিসে যাওয়ার সময় ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীনের উপর কতিপয় সন্ত্রাসী হামলা করে এবং এই হামলায় গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়ে আসিফ মহিউদ্দিন মৃত্যুর হাত থেকে প্রাণে বেঁচে যান। ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীনের উপর উক্ত হামলা একটি পরিকল্পিত হামলা এবং তার জীবননাশের জন্যই এই হামলা সংঘটিত হয়। একটি ধর্মান্ধ ও উগ্রবাদী দল আঃ করিম ওরফে জাবের নামের এক জনের পরিকল্পনায় ও তার নেতৃত্বে এ ঘটনা সংঘটিত করে।
জাবের, আব্দুল্লাহ, মানিক, ফাহিম, কামাল, কাওসার, নবীর হোসেন ওরফে নবীন, কামাল, সাদ আল নাহিন, ফিরোজ সহ ১৪/১৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল আসিফ মহিউদ্দিনকে হত্যার পরিকল্পনা করে এবং মূল হত্যাকান্ড সংঘটিত করার জন্য তারা আলোচনা করে নাহিন, নবীন ও আঃ করিম ওরফে জাবেরকে দায়িত্ব দেয়। এই আঃ করিম হচ্ছে ব্লগার রাজিব হায়দার হত্যাকান্ডের পরিকল্পনাকারী ও নেতৃত্বদানকারী রানার লোক এবং রানা এ ক্ষেত্রেও পিছন থেকে মূল ভূমিকায় ছিল। এই হত্যাকান্ডের জন্য নাহিন ছদ্ম নাম মোঃ মাসলামা, নবীন ছদ্ম নাম আবু নায়লা ও আঃ করিম ছদ্ম নাম জাবের ধারণ করে। ঘটনার দিন আসিফ মহিউদ্দিনের উপর হামলা করার জন্য নাহিন ও নবীন আগেই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং আঃ করিম জাবের দেরীতে পৌঁছায়। জাবেরের পৌঁছাতে দেরী হওয়ায় নাহিন ও নবীন ঘটনা সংঘটিত করে দ্রুত পালিয়ে যায়।
গ্রেফতারকৃত নাহিন জানায়, সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইভিনিং এম.বি.এ (মার্কেটিং) প্রথম সেমিস্টারের ছাত্র। মিরপুর-১০ নম্বর এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করা কালে গতবছরের মে মাসে মিরপুর -১০ নম্বর এলাকার দোকানদার নবীন (২৪), মানিক (২৫), ফাহিম (২২), কামাল (২৩), কাওছার (২৬), কামাল (২৮) দের সহিত মিরপুর -১০ নম্বর গোলচত্বর মসজিদে নামায পড়ার সময় তার পরিচয় হয়। তারা প্রায়ই একই সাথে নামায আদায় করতো। মাঝে মধ্যেই ওই মসজিদে নামায শেষে ইসলামিক বিষয়ে তারা আলাপ আলোচনা করতো। ওই সময় নবীনের মাধ্যমে আব্দুল করিমের সাথে তাদের পরিচয় হয়।
তারা জানতে পারে আব্দুল করিম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিষয়ে পড়াশোনা করেন। তিনি ইসলামিক ধর্মীয় বিষয়ে বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে তাদের উদ্বুদ্ধ করতো। ২০১২ সালের জুলাই মাসের প্রথম শুক্রবারে আব্দুল করিমের সাথে তারা সবাই মোহাম্মদপুরের বছিলা রোডের একটি মসজিদের খতিব এক শায়েখ এর সঙ্গে দেখা করে। সেখানে তারা তার ফতোয়া শুনে। তারপর হতে তার নিকট হতে বিভিন্ন ধর্মীয় ও জিহাদী বই এনে ফাহিম,নবীন, মানিক, কাওছার মিলে মিরপুর -১০ নম্বর মসজিদ এলাকায় বইগুলি বিক্রি করে প্রকৃত ইসলাম প্রচারে উদ্বুদ্ধ হয়।
এরপর থেকে প্রায় প্রতি শুক্রবারে আমরা তার খুতবা শুনতে ঐ মসজিদে যেতো। খুতবায় তিনি সকলকে ব্যাপকভাবে জিহাদে অংশগ্রহণের জন্য উদ্বুদ্ধ করতেন। কোরআন ও হাদীসের কথা শুনে তারা তার প্রতি অনুরক্ত হয় এবং তার মতাদর্শ অনুসরণ করা শুরু করে। এরই সূত্র ধরে গত গত বছরের নভেম্বর মাসে আব্দুল করিমের মাধ্যমে বসুন্ধারায় রানার সাথে তাদের পরিচয় ঘটে। ধর্মীয় আলাপ আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারে, আব্দুল করিম রানার লোক।
নাহিন পুলিশকে আরও জানায়, ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসের ২/৩ তারিখে আব্দুল করিম তাদের এই দলটিকে জানায় যে, আসিফ মহিউদ্দীন নামে একজন ব্লগার ব্লগে ধর্ম সম্পর্কে অবমাননাকর বক্তব্য দেয়। তাই তাকে উচিৎ শিক্ষা দেওয়া দরকার। তখন তারা আলোচনা করে পরিকল্পনা তৈরী করে। আব্দুল করিম ৩ জানুয়ারি উত্তরা ১১ নং সেক্টরে নাহিন ও নবীনকে আসিফ মহিউদ্দীনের চেহারা, তার অফিস ও বাসা চিনিয়ে দেয়। আব্দুল করিম ছুরি কিনার জন্য তাদেরকে ১৫শ টাকা দেয়।
তারা বায়তুল মোকাররম মসজিদ সংলগ্ন ফুটপাত হতে ৩টি ছুরি কিনে। নাহিন, আব্দুল করিম ও নবীন প্রত্যেকে ১টি করে ছুরি নেয়। রানা আব্দুল করিমের মাধ্যমে দু’টি সাইকেল কেনার জন্য ১৫হাজার টাকা দেয়। নাহিন ২ হাজার টাকা মিলিয়ে নবীনকে সাথে নিয়ে বংশাল হতে দু’টি রেসিং সাইকেল কিনে একটি নবীনকে দেয় ও একটি নাহিন নিজে রাখে। পরিকল্পনা মোতাবেক এই সাইকেল নিয়ে মিরপুর থেকে উত্তরায় গিয়ে সকালে আসিফ মহিউদ্দীনকে আব্দুল করিম কর্তৃক সরবরাহকৃত চাপাতি দিয়ে হত্যা করবে।
প্রসঙ্গত আসিফ মহিউদ্দীন রাত ৯টা ১০ টায় উত্তরার অফিসে যায় এবং সারারাত কাজ করে সকাল ৬-৭ টায় কাজ শেষে সাধারনত বাসযোগে উত্তরা হতে তার ইস্কাটনের বাসায় যায়। নাহিন জানায় পরিকল্পনা মোতাবেক গত ৪ জানুয়ারি সে ও নবীন সাইকেল যোগে সকাল ৭টায় উত্তরা ১১নং সেক্টরে আসিফ মহিউদ্দীননের অফিসের সামনে যায়। একটু পরে আসিফ মহিউদ্দীন অফিস থেকে নেমে চলে যায়। ঐ দিন চাপাতির ব্যাগ নিয়ে ১০-১৫ মিনিট পরে আব্দুল করিম তাদের নিকট পৌছার কারনে এবং ততক্ষনে আসিফ মহিউদ্দীন চলে যাওয়ায় তাকে মারা সম্ভব হয়নি। পরবর্তী শুক্রবার ১১ জানুয়ারি আব্দুল করিম ঠিকসময় পৌছলেও নাহিন ও নবীন দেরিতে পৌছায় আসিফ মহিউদ্দীন চলে যাওয়াতে ওইদিনও তাকে মারা সম্ভব হয়নি।
এবিষয়ে রানা ক্ষুদ্ধ হয়ে আব্দুল করিমকে গালাগালি করে। আব্দুল করিম বলে সকালের বদলে রাতে মহিউদ্দীনকে মারা যায় কিনা। একপর্যায়ে গত ১৪ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নাহিনের কাস ছিল। নাহিন জানায়, সে বাসা থেকে বের হয়ে বনানী এসে দেখে তার কাসের সময় শেষ হয়ে গেছে। তখন সে মন খারাপ করে নবীনকে ফোনে একটা ছোট মিষ্টি (অর্থাৎ পূর্বে সেই চুরির একটি) নিয়ে বনানী আসতে বলে।
নবীন সাইকেল ছাড়াই বনানীতে আসে। তখন তারা দু’জন আসিফ মহিউদ্দীনকে মারার জন্য উত্তরা যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। নাহিনের ব্যাগে পূর্বের কিনা একটি ছুরি ছিল। তারা ফোনে আব্দুল করিমকে তাদের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেয়। আব্দুল করিমও সেখানে আসবে বলে তাদের জানায়।
নাহিন ও নবীন বাস যোগে উত্তরা জসিমউদ্দিন রোডে গিয়ে নামে। সেখান থেকে রিকশা নিয়ে উত্তরা ১১ নং সেক্টরে মসজিদে গিয়ে এশার নামায পড়ে। নাহিন নামায শেষে নবীনকে পালানোর রাস্তা চিনিয়ে দেয়। নাহিন মাস্ক, কানটুপি ও গ্লাভস পরা ছিল এবং নবীন মানকি ক্যাপ পরা ছিল। তারা দু’জন আনুমানিক রাত ৯ টার সময় আসিফ মহিউদ্দীনের অফিসের সামনে একটি ইলেট্রিক পোলের সামনে দাড়িয়ে আব্দুল করিমের পৌঁছা ও আসিফ মহিউদ্দীনের অফিসে আসার অপেক্ষায় থাকে।
রাত অনুমান ৯.৩০ মিনিটের সময় একটি রিকশাযোগে আসিফ মহিউদ্দীন তার অফিসের সামনে এসে নেমে মানিব্যাগ বের করে রিকশা ভাড়া দিচ্ছেন দেখতে পায়। তখনো আব্দুল করিম চাপাতির ব্যাগ নিয়ে পৌছেনি। নাহিন আর নবীন তৎক্ষনাৎ আব্দুল করিমের চাপাতির জন্য অপেক্ষা না করে সিদ্ধান্ত নেয় যে, তাদের নিকট থাকা ছুরি দ্বারাই আসিফ মহিউদ্দীনকে আঘাত করবে। নাহিন তখনই নবীনকে নিয়ে ছুরি দ্বারা আসিফ মহিউদ্দীনকে আঘাত করতে থাকে। নাহিন প্রথমে ঘাড়ে একটি আঘাত করে।
তখন আসিফ মহিউদ্দীন তার কোমড় জাপটে ধরে । তখন নাহিন তার মাথা ঘুরিয়ে দিয়ে তার পিঠে ছুরি দ্বারা আঘাত করে। আসিফের গায়ে শীতের মোটা কাপড় চোপড় থাকায় তার ছুরিটি বেকে যায়। এর ফাঁকে নবীনও ৩-৪ টি ছুরিকাঘাত করে। আসিফ মহিউদ্দীন মাটিতে পড়ে গিয়ে চিৎকার করতে থাকে।
তারা ভয় পেয়ে নাহিনের হাতের ছুরিটি সেখানে ফেলে দৌড়ে পালাতে থাকে। কিছুদূর গিয়ে রিকশা নিয়ে তারা উত্তরা আব্দুল্লাহ্পুর বাসস্ট্যান্ডে যায়। সেখান থেকে কনক বাসে উঠে মিরপুরে পৌছে তারা যে যার বাসায় চলে যায়। পরদিন সকালে ফোন করে ঘটনাটি কৌশলে রানাকে ও জাবেরকে জানায়। বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে আব্দুল করিমের সহিত নাহিন আর নবীন দেখা করে।
তারা কাছে জানতে পারে, আঃ করিমও ঘটনা ঘটার ১০-১৫ মিনিট পরে ঘটনাস্থলে চাপাতির ব্যাগসহ পৌঁছেছিল। পরবর্তী সময়ে একুশে টিভিতে আসিফ মহিউদ্দীন গুরুতর আহত হয়েছে এই সংবাদ পায় এবং তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন জানতে পারে। এক সপ্তাহ পরে রানা, আব্দুল করিম এবং নবীন এর সহিত মিরপুর-১০ নং সেক্টর গোলচত্বর মসজিদে দেখা হয়। সেখান থেকে নাহিনকে নিয়ে তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যায়। তাদের মধ্যে একজন কৌশলে আসিফ মহিউদ্দিনকে হাসপাতালে গিয়ে তার ভক্ত হিসেবে তার সহিত কুশলাদী বিনীময় করে ওয়ার্ড ও বেড নম্বর সনাক্ত করে আসে।
তাদের মধ্যে সিদ্ধান্ত হয় হাসপাতালের ভিতরে ডাক্তার সেজে ঢুকে হার্টবিড অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি করার ইনজেকসন দিয়ে আসিফ মহিউদ্দীনকে হাসপাতালে মারা হবে। সবাই মিলে আমাকে ডাক্তার সেজে ইনজেকশন দিয়ে আসিফ মহিউদ্দীনকে মারার জন্য তাকে অনুরোধ জানায় এবং তাকে ডাক্তারি এপ্রোন জোগার করতে বলে। তখন রানা ও আব্দুল করিম ইনজেকশন ম্যানেজ করে। নাহিন প্রথমে তাদের কথায় রাজি হয়েও কৌশলে পরবর্তীতে রানা ও আব্দুল করিমের সহিত যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। অতঃপর গত ২ মার্চ ব্লগার রাজীব হত্যার ঘটনা প্রকাশ এবং দ্বীপ ভাইসহ গ্রেপ্তারকৃত অন্যদের টিভিতে দেখালে তা দেখে নাহিন ভয় পেয়ে প্রথমে আব্দুল করিমকে ফোন করে।
আঃ করিম তাকে বাইতুল মোকাররম মসজিদের পিছনে দেখা করতে বলেন। নাহিন আর নবীন ঐদিন বায়তুল মোকাররম মসজিদের পিছনে আব্দুল করিমের সাথে দেখা করে। সেখানে আব্দুল করিমের বন্ধু আব্দুল্লাহ-এর সহিত পরিচয় হয়। সে-ও আব্দুল করিমের মতাদর্শে বিশ্বাসী। সেখান থেকে তারা তাদের মতাদর্শে দীক্ষিত কামালেল যাত্রাবাড়ির ভাড়া বাসায় যায়।
সেখানে আব্দুল্লাহ্ ও আব্দুল করিম সিদ্ধান্ত নেয় যে, তাকে ও নবীনকে ঢাকার বাইরে থাকতে হবে। তাদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ঐ রাতেই আব্দুল্লাহ্ তাকে আর নবীনকে নিয়ে ফরিদপুরে তার বোনের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়। রাত অনুমান ১১.৩০ এর দিকে তারা সেখানে পৌঁছে। সেখানে ২দিন আত্মগোপনে থাকার পর আব্দুল করিমের ফোন পেয়ে আব্দুল্লাহ্ তাদের নিয়ে কক্সবাজার যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানায়। সেদিন রাতেই তারা ঢাকার যাত্রাবাড়ি হয়ে কুমিল্লা যায়।
কুমিল্লা থেকে ট্রেনে আব্দুল্লাহ্ তাকে ও নবীনকে নিয়ে চট্রগ্রাম যায়। চট্রগ্রাম ১দিন হোটেলে অবস্থান করে রাত ২.৩০ এ তারা বাসযোগে কক্সবাজার রওনা হয়। ভোর আনুমানিক ৪.৩০ মিনিটের সময় কক্সবাজার নেমে তারা মসজিদে ঢুকে। মসজিদে ঢুকে তারা আব্দুল করিম ভাই ও তার এক বন্ধুকে দেখতে পায়। সেখানে তারা ৪-৫ দিন অবস্থান করে।
সেখান থেকে আব্দুল করিমের পরামর্শে তারা সবাই ঢাকা হয়ে আব্দুল করিমের ফুপুর বাড়ি সিরাজগঞ্জে যায়। সিরাজগঞ্জে ফুপুর বাড়িতে ৭-৮ দিন অবস্থানের পর তারা পরিস্থিতি বুঝে একে একে সবাই বাসায় ফিরে যাওয়া শুরু করে। নাহিন বিশ্ববিদ্যালয়ে কাস করা শুরু করে। গ্রেফতারকৃত নাহিন জিজ্ঞাসাবাদে জানায় সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ’তে একাউন্টিং নিয়ে ভর্তি হয়েছিল এবং শুরু থেকেই এমএলএম ব্যবসায় জড়িত হয়ে বেশী সময় দেয়ার কারণে এক সময় তার ছাত্রত্ব বাতিল হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হতে বিবিএর সার্টিফিকেট ৫০ হাজার টাকায় কিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইভেনিং এমবিএ’তে ভর্তি হয়।
পরবর্তী সময়ে জিহাদী কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ হয়ে এ ঘটনা ঘটায়। গ্রেফতারকৃত কাওসার একজন হকার এবং সে ফুটপাতে মানি ব্যাগ বিক্রি করে। গ্রেফতারকৃত কামাল একজন কাঠমিস্ত্রি এবং অন্য কামাল একটি ব্যাংকে সিকিউরিটি গার্ডের কাজ করে। তারা জানায়, জিহাদী কার্যক্রম পরিচালনা করার উদ্দেশ্যে শরীর ও স্বাস্থ্য ফিট রাখার জন্য তারা মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়ামে টাকা দিয়ে মার্শাল আর্ট শিখতো। তারা এরকমভাবে আরও একাধিক ব্লগার ও কিছু নাম করা লোককে হত্যার পরিকল্পনা করছিল।
এমনকি তারা ভারতে গিয়ে তসলিমা নাসরিনকে হত্যার পরিকল্পনাও করেছিল। তারা জানায়, মোহাম্মদপুরের সেই শায়েখ সাহেবের বই পাঠ করতো এবং তার বয়ানের সিডি শুনতো। তারা ইন্টারনেট থেকে বিভিন্ন জিহাদী বক্তব্য ডাউনলোড করে শুনতো ও পরস্পর শেয়ার করতো। তারা আরও জানায় তাদের দলের কোন নাম নেই এবং নাম থাকলেও তারা বলতে পারবে না, তাদের যারা নেতৃত্ব ও পরিচালনার মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করে জিহাদী কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ করেছিল তারা বলতে পারবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।