একটা সময় নিজেকে পরী ভাবতাম যে ডানা মেলে উড়ে বেড়াত পারে আর এখন নিজেকে পুতুল মনে হয় যা শুধু শোকেসে শোভা পায় নীল
বলতো আমি কে ? চিনতে পারছো না! জানতে ইচ্ছা করছে?আমি হচ্ছি পানি রঙা। হুম..পানি রঙা। ভুলে গেছো এক সময় তুমিই তো বলতে,পানির রঙে রঙ যার তাকে বলে পানি রঙা। মনে পড়েছে কিছু । তোমার কাছ থেকে একটু নীল রঙ নিয়ে নিলাভো হতে চেয়েছিলাম কিন্তু পারিনি।
কেন জানতে ইচ্ছা করছে?উত্তরটা তো তোমার জানা। তবুও না জানার ভান করছো কেন?সব সময় না জানার ভান ধরাটা কি জরুরী। যে জেগে ঘুমায় তাকে কি কখন জাগানো যায়?
নীল
তুমি কে, মনে পরেছে কি? তুমি শুধু নীল । নীল আকাশের চেয়েও নীল। নীল সাগরের চেয়েও নীল।
তুমি শুধু নীল নীল। তুমি শুধু তার নীল। তুমি তার কপালের নীল টিপ। তুমি তার চোখের নীল কাজল। তুমি তার পরনের নীল শাড়ী।
তুমি শুধু তার.... তুমি শুধু তার নীল।
নীল
তুমি এটা কি করলে? তুমি তোমার জীবনের সব রঙে তাকে রাঙাতে কিন্তু নীল রঙটা তাকে দিলে কেন? ঐ একটা রঙ কি আমার হতে পারতো না। শুধু নীল রঙটাই তো চেয়েছিলাম। আমার চাওয়াটা কি খুব বেশি ছিল?কেন সেদিন বলনি, তুমি শুধু তার। কেন? কেন..? কেন......?প্রতিবাদ করনি সেদিন?কেন আমায় নীল স্বপ্নের হাতছানিতে কাছে ডেকেছিলে!!!!তোমার নীল আকাশে ডানা মেলে উড়তে দিয়েছিল।
তোমার নীল সাগরে ডুবতে দিয়েছিলে। কেন সেদিন শাসন করনি? চোখ রাঙ্গিয়ে বারন করনি?কেন সেদিন বলনি, কেন?জানি এই সব উত্তর তোমার জানা। তবুও না জানার ভান করছো ।
নীল
কেন সেদিন মুগ্ধতার নীল সাগরে ডুবতে দিয়েছিলে। নীল আকাশে উড়তে দিয়েছিলে।
একটু একটু করে মুগ্ধতার বীজ আমার ভূমিতে বুনে দিয়েছিলে। সেদিন আমার হাত ধরে ভাললাগা আর ভালবাসার পথে হেটেছিলে। জানো সেদিন গুলোর সেই মুগ্ধতার বীজ ভাললাগা আর ভালবাসার দীর্ঘ পথ পারি দিয়ে আজ এক বিশাল বটবৃক্ষ হয়ে মাথা উচু করে দাড়িয়ে আছে আমার ভূমিতে। যার শিকড় আজ আমার হৃদয় ভেদ করে চলেগেছে অনেক অনেক গভীরে। তার কি হবে নীল?আমি অভিযোগ করছি না।
কোনদিন করিনি আর করব ও না। সেই সাধ্য আমার কোথায়? যেমন সাধ্য নেই ঐ বটবৃক্ষকে আমার ভূমি থেকে উপরে ফেলার। তেমনি সাধ্য নেই নীলকে তার প্রেয়সীর কাছ থেকে ছিনিয়ে নেবার। আজ শুধুই ........
নীল
আমি জানি তুমি অনেক ভাল ছাত্র। আর তাই তো জীবনের সরল অংকটা সহজেই মিলিয়ে ফেলেছো ।
বইয়ের পাতা উল্টে আনন্দিত মনে সুখী জীবনের সরল পথ ধরে হাটছো। আর আমি জীবনের প্রতিটি পাতায় অংক কষেই চলেছি , কিছুতেই ফল মেলাতে পারছি না। জীবনের প্রতিটি পাতায় সরল নামক জটিল অংকের প্যচে ঘুরপাক খাচ্ছি । কাটাকাটিতে ভরে ফেলেছি প্রতিটি পাতা তবুও উত্তর মিলছে না। গোলক ধাধায় বার বার একই জায়গায় আটকে যাই।
সরল অংক আজ আমার কাছে জটিল ধাধায় পরিনত হয়েছে। কেন এমন হল নীল?
নীল
আজকাল আমার শরীরটাও আমার উপর বড্ড বিরক্ত। সে হয়ত সরল নামক জটিল অংক কষতে কষতে ক্লান্ত। মাথার ভিতর ট্রাফিক জ্যাম লেগেছে। দুর্বল পানি রঙা শরীরটা মুক্তি চায়।
ওর আর দোষ কি বল? আত্মাহীন শরীরটা ও আর কতদিন বয়ে বেড়াবে। তাই তো বিদ্রোহী হয়ে উঠেছে, বেশ কয়েক বার হুমকি দিয়েছে আমাকে ছেড়ে যাবার। তুমিই বল, আমি কি করব? আত্মা আমি কোথায় পাবো? আত্মাটাতো বহুদিন আগেই বিসর্জন দিয়েছি নীল সাগরে। আমিও শরীরকে বলে দিয়েছি , আত্মা ছাড়াই থাকতে হবে । ভালোবাসার শাস্তিতো তার ও প্রাপ্য।
কি ঠিক বলিনি? আমিতো না ফেরার দেশের টিকিট কেটে বসে আছি প্লাটফর্মে । গাড়ী আসার সময় আমার জানা নেই। এখন শুধু গাড়ীর প্রতীক্ষায় পথ চেয়ে থাকা।
নীল
জানো আজ আর নীল টিপ,নীল শাড়ী,নীল চুড়ি, নীল কাজল কিছুই চাই না। তবে একটা চাওয়া আছে তোমার কাছে।
জানতে চাও, না কি ভয় হচ্ছে? ভয় নাই, সরল অংকের উত্তর মেলাতে বলব না। আমাকে বিদায় জানাতে আসতেও বলব না। শুধু ছোট্ট একটা অনুরোধ করব। আমার শেষ অনুরোধ তোমার কাছে, কি রাখবে তো?
রংধনুর্ ছয়টি রং তুমি্ রেখে দাও তোমার আর্ তার জন্য । এই ছয় রঙে আরো অনেক রঙ তৈরী হবে ।
সেই সব রঙগুলোতেই রাঙিয়ে নিও তোমাদের জীবন। আমাকে শুধু নীল রঙটি দাও। আমার যে শুধু ঐ রঙটি প্রয়োজন। ঐ একটি রঙেই আমি রাঙ্গাবো নিজেকে। তারপর উঠে পড়বো ঐ না ফেরার দেশের গাড়ীতে।
যেখান থেকে আর কখনই ফিরে আসা যায় না। আর কখন তোমায় বিরক্ত করব না ।
নীল
কোন এক সন্ধ্যায় যখন তুমি তার হাত ধরে নরম ঘাসে হাটবে অথবা তার কোলে মাথা রেখে ঐ দূর আকাশে তাকাবে দেখবে এক উজ্বল নীল তারা । ঐ নীল তারার আলোয় তোমাদের চারপাশ আলোকিত হবে শুধু নীল আলোয়। আমি জানি সেদিন তুমি মুগ্ধ হবে ঐ নীল তারার ভালবাসায়।
সেদিন কি তোমার আমায় মনে পড়বে??????? ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।