পানি নিয়ে বাণিজ্য নয়, প্রস্তাবিত পানি আইনে জনগণ ও প্রকৃতির অধিকার নিশ্চিত করুন
অবস্থান কর্মসূচীতে বক্তাদের অভিমত
শুধু মানুষ নয়, পানি সকল প্রাণ ও প্রকৃতির অধিকার। পানি ছাড়া কোন প্রাণীই বাঁচতে পারে না। পানি প্রকৃতির দান। তাই পানিকে কোনভাবেই বানিজ্যিক পণ্য হিসেবে বিবেচনা করা উচিত নয়। প্রস্তাবিত পানি বিষয়ক আইন ও নীতিমালা প্রণয়নের েেত্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ নয়, প্রাণ ও প্রকৃতির স্বার্থ-অধিকারকে প্রাধান্য দিতে হবে।
প্রাকৃতিক পানি নিয়ে বাণিজ্য ও সাধারণ মানুষকে পানিবঞ্চিত করার প্রচেষ্ঠার প্রতিবাদে আজ ২ জুলাই সকল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনষ্টিটিউটের সামনে বক্তারা এ দাবী জানায়।
বক্তারা বলেন, প্রস্তাবিত খসড়া পানি আইনে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের প্রস্তাবের আড়ালে পানি ও পানির উৎসসমূহগুলোকে বাণিজ্যিকখাতে দেয়ার কথা বলা হয়েছে। পানিকে বাণিজ্যিক পণ্য এবং রাজস্ব আয়ের উপকরণ হিসেবে না দেখে জননিরাপত্তা ও জনস্বার্থে ব্যবহারে প্রয়োজনীয় সম্পদ হিসেবে আইনে স্বীকৃতি দেওয়া প্রয়োজন।
পানি আইন ও নীতির মাধ্যমে পানির উপর মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য সরকারের দৃঢ় পদপে দরকার। ব্যবসায়িক খাতের নিয়ন্ত্রণাধীন পন্যগুলোর বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারকে হিমসিম খেতে হচ্ছে।
পানির মতো একটি মৌলিক প্রয়োজনীয় পন্যের বানিজ্যকরণ সরকারের মতাকে সংকুচিত করবে এবং জনগনের অধিকারকে ুন্ন করবে।
বক্তারা আরও বলেন, পৃথিবীর কয়েকটি দেশে বিভিন্ন শহরে পানি ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব বাণিজ্যিক খাতে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। রকেটের গতিতে পানির দাম বৃদ্ধির ফলে অনেক দেশে মানুষ রাজপথে নামতে বাধ্য হয়েছে। বিশ্বব্যাংক, এডিবি, আইএমএফ বিভিন্ন দেশে ঋণ সহায়তা, উন্নয়ন সহায়তার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় পানি সেবা ব্যবস্থাপনাকে বাণিজ্যিক খাতে ছেড়ে দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। জনগনের পানি অধিকার রার বিষয়টি তাই আইনের নিশ্চিত করতে হবে।
বাপার সহ-সাধারন সম্পাদক ও বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলন এর সমন্বয়ক মিহির বিশ্বাস বলেন, খাল-বিল-জলাশয়-নদী পানির আধার। আজ এসব জলাশয়গুলো দখল-দূষণে জর্জরিত। এসব জলাশয় দখল-দূষণমুক্ত করতে হবে। এসব জলাশয়ের পানিকে ব্যবহার উপযোগী করে তুলতে হবে। তাহলে ভূ-গর্ভস্থ পানির উপর চাপ কমবে।
পবার সম্পাদক ড. হালিম দাদ খান বলেন, পানি সকল প্রাণের অধিকার। সে অধিকার থেকে কোন প্রাণকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্র রুখতে হবে। দরিদ্র মানুষকে যেন নদীর পানি না কিনতে হয়, দরিদ্র জেলেকে যেন মাছ ধরার জন্য ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর কাছ থেকে অর্থের বিনিময়ে সনদ নিতে না হয়Ñসেজন্য জোরালো সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সবার প্রতি আহবান জানান।
পরিবেশবিদ সিরাজুল ইসলাম মোল্লা বলেন, নীতি প্রণেতাদের নির্বাচন করেন জনগণ। তাই জনগণের স্বার্থ রা করা নীতি প্রণেতাদের নৈতিক দায়িত্ব।
পানি আইনেও জনস্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মহিদুল হক খান বলেন, পানিকে দেশি-বিদেশী ব্যবসায়ীদের হাতে ছেড়ে দেয়ার যে প্রস্তাব করা হয়েছে তা আগামী দিনে সঙ্কট সৃষ্টি করবে। তাই এখনই প্রস্তাবিত পানি আইনের নেতিবাচক ধারাগুলো বাদ দিতে হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন, নারীপ, উবিনীগ, নাগরিক উদ্যোগ, নাটাব, প্রত্যাশা, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, গ্রীণ মাইন্ড, মানবিক, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টসহ পরিবেশবাদী সংগঠনের উদ্যোগে আজকের অবস্থান কর্মসূচীতে সভাপতিত্ব করেন বাপা’র নির্বাহী সদস্য মহিদুল হক খান। এতে আরও বক্তব্য রাখেন প্রত্যাশা’র সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ, নাগরিক উদ্যোগ এর সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার অমিত রঞ্জন দে, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর কর্মসূচী পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুল আলম, এনডিএফ এর চেয়ারম্যান ইবনুল সাইদ রানা, গ্রীণ মাইন্ড এর চেয়ারম্যান আমির হাসান, নাটাব এর জাবেদ আহমেদ, জালালাবাদ ফাউন্ডেশন এর এনাম আহমেদ প্রমুখ।
কর্মসূচী পরিচালনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর প্রকল্প সমন্বয়কারী আমিনুল ইসলাম সুজন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।