আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তিস্তার পানি চুক্তিঃ বাংলাদেশ পাচ্ছে মাত্র ১৫% পানি, দালালদের সাফাই গাওয়া - দেশ চূড়ান্ত মরুকরনের পথে

উন্মাদ আমি আমার লিখা পড়বার প্রয়োজন আছে কি তিস্তার পানি চুক্তিঃ বাংলাদেশ পাচ্ছে মাত্র ১৫% পানি, দালালদের সাফাই গাওয়া - দেশ চূড়ান্ত মরুকরনের পথে by লাগবো না তোর ডিজিটাল বাংলাদেশ,ফেরত দে আমার এনালগ বাংলাদেশ **দুঃখিত লেখাটা একটু বড় হয়ে গেছে। আশা করি সম্পূর্ণ পড়বেন। গুরুত্বপূর্ণ অংশ মোটা করে দিচ্ছি। শেয়ার করুন ব্লগ বা ফেসবুকে। জানুক সবাই সত্য** একটি পদ্ধতি অনুসরণ করে তিস্তা নদীর পানি প্রায় সমান সমান (খবরে প্রকাশ ভারত ৫২ শতাংশ আর বাংলাদেশ ৪৮ শতাংশ) ভাগাভাগি করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও ভারত একমত হয়েছে।

দিল্লি থেকে কিছুদিন আগে দেশে ফিরে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছিলেন। তিনি ও গওহর রিজভী তিন দিনের দিল্লি সফর শেষে গত মাসে দেশে ফিরে আসেন। লিঙ্কঃ http://www.bdtodaynews.com/?p=35611#more-35611 আবার গতকাল ভারতের পশ্চিম বঙ্গের কংগ্রেস দলীয় সংসদ সদস্য আবু হাশেম খান চৌধুরী জানিয়েছেন, তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তিতে বাংলাদেশ শতকরা ২৫ ভাগ পানি পাবে আর ভারত পাবে শতকরা ৭৫ ভাগ পানি। আবু হাশেম বলেন, এক বৈঠকে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিব শঙ্কর মেনন তাকে এ তথ্য জানিয়েছেন। বর্তমানে তারা মাত্র ৩৯ শতাংশ পানি পাচ্ছেন বলে দাবী করেছেন।

চুক্তি হবে একটি। পক্ষ দুটি। দুই পক্ষ থেকে দুই রকম কথা। কিন্তু তার মাঝেও রয়েছে আরও অনেক বড় ঘাপলা। নদীর পানি নিয়ে টানাটানি আজ নতুন নয়।

সেই ৭২ থেকে চলছে। অনেক আলোচনা-বৈঠক। ফলাফল শুন্য। তাই বুঝি এর রেশ টানতে চায় এবার দুই পক্ষ। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অভিন্ন নদী ৫৪টি হলেও এ নদীগুলোর উপর আমাদের আরও শত শত নদী নির্ভর করে।

তবে এখন পর্যন্ত অভিন্ন নদী গঙ্গা (বাংলাদেশ অংশে নাম ‘পদ্মা’) নদীর পানি বণ্টন চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। তত্কালীন আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ১৯৯৬ সালের ১৯ ডিসেম্বর ৩০ বছর মেয়াদি এ চুক্তি সম্পাদিত হয়। এরপর?? দাদারা আমাদের সাথে করে গেছেন প্রতিনিয়ত বেঈমানি। চুক্তি অনুযায়ী পাইনি পানি,বরঞ্চ বন্যার সময়ে বাঁধ খুলে দিয়ে অতিরিক্ত পানিতে আমাদের ডুবিয়েছে। পদ্মাতে ফারাক্কা পয়েন্টে গত দু’মাসে বাংলাদেশ ৬৮ হাজার ৭০০ কিউসেক পানি কম পেয়ছি ।

মোট ছয়টি কিস্তিতে ভারত চুক্তি লঙ্ঘন করে এই পরিমাণ পানি কম দিয়েছে। বাংলাদেশ ওই দু’মাসের প্রতি কিস্তিতে গড়ে সাড়ে ১০ হাজার কিউসেক পানি কম পেয়েছে। ফারাক্কার সার্বিক প্রভাবে নদীর পর নদী মরে যাচ্ছে। এখন গঙ্গা নিয়ে আমরা না পারছি কিছু বলতে না পারছি সইতে। শুধু দাবী জানাতে পারি আমাদের ন্যায্য হিস্যা অনুযায়ী পানি দিতে।

কিন্তু দাদারা তখন বলে আমরা চুক্তির অনুযায়ী পানি দেই, কিন্তু পানি কম থাকায় তোমরা কম পানি পাও। আন্তর্জাতিক আদালতেও যাওয়া যাচ্ছে না ভয়ে,আনুগত্যের কারণে , জাতিসংঘের নদীর পানি চুক্তি আইনে ভারতের সাক্ষর না করা আর চুক্তির বিভিন্ন ফাক ফোকরের কারনে। এবার দাদারা নজর দিয়েছেন তিস্তা, ফেনি,ইছামতির দিকে। বিগত সরকার বা তার ও আগে বাংলাদেশের নীতি ছিল তিস্তার পানি বণ্টনের চুক্তির পর ফেনি ও ইছামতির পানি বণ্টন চুক্তিতে হাত দেওয়া হবে। যেহেতু ওগুলো আমাদের নিয়ন্ত্রনে।

তিস্তার ন্যায্য পানি না পেলে ওগুলো আমরা দেবো না। কিন্তু গত ভারত সফরে আমাদের প্রধানমন্ত্রী ওগুলোর পানি বণ্টনের একটা ফয়সালা করে এসেছেন। একতরফা ভাবে ভারতকে ছাড় দিয়ে এসেছেন। তাই বাদ থাকলো তিস্তা। তিস্তার ওপরে ভারতে নির্মিত হয়েছে একটি ব্যারাজ, দুইটি জলবিদ্যুৎ বাঁধ আর বাংলাদেশে নির্মিত হয়েছে তিস্তা ব্যারাজ।

জলডোবায় সেচ প্রকল্প ভারতে তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত শেষ প্রকল্প; অর্থাৎ এর ভাটিতে ভারতে তিস্তা নদীর পানি ব্যবহারের কোনো অবকাশ নেই। এই সেচ প্রকল্পে গ্রীষ্ম মৌসুমে ভারত একতরফা ভাবে অমানবিক ভাবে পানি প্রত্যাহার করলে বাংলাদেশের বিশাল একটি অংশ পরিণত হয় মরুভুমিতে। অন্যদিকে বাংলাদেশে তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্প তিস্তা নদী বাংলাদেশে প্রবেশের পর পরই অবস্থিত এবং এর ভাটিতে তিস্তার পানির আরো প্রয়োজনীয়তা ও বহুবিধ ব্যবহার রয়েছে। অন্যদিকে একই সময়ে ভারত ও বাংলাদেশ ব্যারেজ প্রকল্পে হাত দিলেও ভারত ৮৪ তে আর বাংলাদেশ ৯০এ এই প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন করে। ফলে এই তিস্তা ব্যারেজ থেকে আমরা পর্যাপ্ত সাফল্য পাই নি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রমতে, সেচ প্রকল্পের পানিসহ তিস্তাকে বাঁচিয়ে রাখতে ন্যূনতম ২০ হাজার কিউসেক পানি প্রয়োজন। সেখানে নিলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদীর অববাহিকায় গত এপ্রিলে ১৫ দিনের ব্যবধানে ৫ হাজার কিউসেক থেকে কমে পানি নেমে এসেছে ৯শ’ কিউসেকে। গত ৫ বছরে কখনও এত কম পানি পায়নি বাংলাদেশ। পানিস্বল্পতার কারণে তিস্তা প্রকল্পও মুখ থুবড়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে। মূলত ৩১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ও খরস্রোতা তিস্তা নদী ভারতের সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং-জলপাইগুড়ি হয়ে বাংলাদেশের লালমনিরহাট দিয়ে কুড়িগ্রামের চিলমারীতে প্রবেশ করে ব্রহ্মপুত্রে মিলিত হয়েছে।

বাংলাদেশে এর দৈর্ঘ্য ১শ’ ১২ কিলোমিটার। ফলে এটি শুধু স্বাধীন একটি নদীমাত্র নয়, তিস্তা বাংলাদেশেরও নদী এবং তা ব্রহ্মপুত্রের পানি প্রবাহেরও অন্যতম উত্স। তিস্তার প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়া মানেই ভাটিতে বাংলাদেশের তিস্তার অপমৃত্যু এবং সেইসঙ্গে ব্রহ্মপুত্র তথা যমুনার প্রবাহ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া মানেই ভাটিতে বাংলাদেশের তিস্তার অপমৃত্যু এবং সেইসঙ্গে ব্রহ্মপুত্র তথা যমুনার প্রবাহ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কিন্তু দাদা বাবুদের অতশত ভাবার সময় কোথায়?? আর দাদা বাবুদের সমর্থনে মাঠে নেমেছে এক শ্রেণীর বুদ্ধিজীবী দালাল। এরা অনেক আগ থেকেই সক্রিয়।

গত ২১ সেপ্টেম্বার,২০১০ এ আবেদ খান কালের কণ্ঠে এক লেখায় উল্লেখ করেন, তিস্তার পানি পশ্চিমবঙ্গ সরকার ৮৩ শতাংশ রেখে বাংলাদেশের জন্য ১৭ শতাংশ ছাড় দেওয়ার জন্য তিস্তা পানি বণ্টন নিয়ে এক খসড়া পশ্চিমবঙ্গ সরকার তৈরি করেছে। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় বিষয় তিনি লিখেছিলেন, - “তবে দুই দেশের ‘বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের’ ইতিহাস টেনে রাজ্য সরকারের সেচ দফতরের মন্ত্রী সুভাশ নস্কর ওই খসড়া নোটে লিখেছেন, যেহেতু বাংলাদেশ ঘনিষ্ঠ বন্ধু দেশ, তাই শুকনো মৌসুমে তিস্তার পানির ২৫ শতাংশ বাংলাদেশকে দিলে রাজ্যের কোন ক্ষতি হবে না ” আহারে বন্ধু!!! বন্ধুত্তের চমৎকার উদাহরন। আমরা কি তাদের কাছে ভিক্ষা চাচ্ছি?? আমরা আমাদের পাওনা চাচ্ছি। কিন্তু কে শুনে কার কথা?? এই দালালগুলো বন্ধু ডাক শুনেই বোগল বাজাতে শুরু করে। কিন্তু দাদারা এর মাঝেও রেখে দিয়েছে অনেক ফাক ফোকর।

বাংলাদেশ তিস্তার স্বাভাবিক প্রবাহের জন্য ২০% পানি ছেড়ে দেওয়ার দাবী জানালেও ভারতীয়রা এতে কর্ণপাত করেনি। অবস্থা এমন করে রেখেছে, আরে তুই ছিল্লা রুম তো সাউন্ড প্রুফ। শেষে দাদারা ১০% পানি ছাড়তে রাজি হলেও আবার বলে দেয় ভাটির দেশ হিসাবে পানিটা কিন্তু তোমরাই পাচ্ছো। কোন জিনিস দিয়ে আবার খোটা দেওয়ার নোয়াখাইল্লা অভ্যাস (আমার গ্রামের বাড়ি) ক্যামনে জানি দাদারাও পাইয়া গেছে। কিন্তু সমস্যা হলো এই ১০% পানি তারা যে কখন কোনদিকে রাখে তা আল্লাহই ভালো জানে।

তবে এটা ভাবার কোন কারন নাই, দাদারা আমাদের ছাড় দিবে আর মমতা আফাও এত কম জলের মাছ খায় না। তিস্তা চুক্তির কথা শুনেই গোস্বা করে কেন্দ্রে মনমোহনের কাছে কড়া ভাষায় চিঠি দিয়ে দিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ পানি কম পেলে তা মানবে না। এরই প্রেক্ষিতে ভারতের পশ্চিম বঙ্গের কংগ্রেস দলীয় সংসদ সদস্য আবু হাশেম খান চৌধুরী এর সাথে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিব শঙ্কর মেনন এর গতকাল বৈঠক হয়। এবং জানা যায় ঐতিহাসিক(!!) ২৫% এর কথা। এবার মমতা আফা খুব খুশি।

আগের থেকেও বেশী পানি পাবেন তিনি। আর বাংলাদেশিরাও কিছু বলতে পারবে না। চুক্তি তো হয়েই গেছে। পদ্মার মতো এবার তোদের তিস্তাও মারমু। এটা ভেবে হয়তো আফামনি এখন খুশিতে বাকবাকুম।

তিনি খুশি কারন আগে চুক্তি ছাড়া ৭৫% রাখলেও এখন চুক্তি করে ৭৫% এর বেশী রাখা যাবে। আর নদীর স্বাভাবিক প্রবাহের জন্য ১০% তো বাংলাদেশের অংশে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাহলে বাংলাদেশ পাচ্ছে মূলত ১৫% পানি। তাহলে ভারত বাংলাদেশ পানির পরিমান হবে ৭৫:১৫ বা ৮৩:১৭(পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার অনুযায়ী, এখানে ৮৩% এ স্বাভাবিক প্রবাহের ১০% সহ)। কিন্তু এটা এক রকম ৯৬ এর গঙ্গা চুক্তি লঙ্ঘনের শামিল।

অবাক হলেন!!? গঙ্গা চুক্তির অনুচ্ছেদ ৯ অনুযায়ী,”পক্ষপাতবিহীন ও সাম্যতাপ্রসুত এবং কোন পক্ষেরই ক্ষতি না করে দুই সরকারই ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বহমান অনন্য আন্তসীমান্ত নদীসমুহের চুক্তির ব্যাপারে একক সিদ্ধান্তে উপনিত হওয়ার ব্যাপারে একমত”। এই অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কি ভারতের ৭৫% বা ৮৩% কি যুক্তিযুক্ত?? আশা করি সুশীল সমাজ ও সমাজের বিজ্ঞ ব্যাক্তিরাও এ ব্যাপারে ভেবে দেখবেন। বাংলাদেশের পক্ষে থেকে যে প্রস্তাবগুলো ছিল সেগুলো হলোঃ প্রস্তাব ১ : ভারতের গজলডোবায় লব্ধ পানির শতকরা ২০ ভাগ নদীখাত সংরক্ষণের জন্য বরাদ্দ থাকবে, আর বাকি শতকরা ৮০ ভাগ পানি বাংলাদেশ ও ভারত সমভাবে ভাগ করে নেবে। প্রস্তাব ২ : ভারতের গজলডোবায় লব্ধ পানির শতকরা ২০ ভাগ নদীখাত সংরক্ষণের জন্য বরাদ্দ থাকবে, আর বাকি শতকরা ৮০ ভাগ পানি ১৯৮৩ সালে প্রস্তাবিত এডহক চুক্তি অনুযায়ী ৩৬:৩৯ অনুপাতে বাংলাদেশ ও ভারত ভাগ করে নেবে। অর্থাৎ বাংলাদেশ পাবে ৩৮ শতাংশ আর ভারত পাবে ৪২ শতাংশ।

প্রস্তাব ৩ : ভারতের গজলডোবায় লব্ধ পানির শতকরা ১০ ভাগ নদীখাত সংরক্ষণের জন্য বরাদ্দ থাকবে, আর বাকি শতকরা ৯০ ভাগ পানি ১৯৮৩ সালের এডহক চুক্তি অনুযায়ী ৩৬:৩৯ অনুপাতে বাংলাদেশ ও ভারত ভাগ করে নেবে। অর্থাৎ বাংলাদেশ পাবে ৪৩ শতংাশ আর ভারত পাবে ৮৭ শতাংশ। উপরোক্ত তিনটি প্রস্তাবের মধ্যে প্রথমটি ছিল বাংলাদেশের মূল প্রস্তাব আর বাকি দুটি ছিল বিকল্প। এর বিপরীতে ভারতের প্রস্তাব ছিল অতিমাত্রায় একপেশে; যাতে উল্লেখ করা হয়, শতকরা ১০ ভাগ পানি নদীর জন্য রেখে ভারতের গজলডোবা ও বাংলাদেশের দোয়ানীতে সেচ প্রকল্পের কমান্ড এরিয়ার অনুপাতে পানি বণ্টন করা হবে। গজলডোবায় সেচ প্রকল্পের কমান্ড এরিয়া ৫.৪৬ লাখ হেক্টর আর দোয়ানীতে ১.১১ লাখ হেক্টর_সেই বিচারে ১০ শতাংশ পানি নদীর জন্য রেখে বাকি ৯০ শতাংশ পানি ৫:১ অনুপাতে বণ্টন করার প্রস্তাব করে ভারত, যাতে বাংলাদশের ভাগে জুটবে মাত্র ১৫ শতাংশ আর ভারতের ভাগে ৭৫ শতাংশ।

অবশেষে মনে হয় দাদা বাবুরা আমাদের প্রস্তাবের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সরকারকে বিভিন্ন কাছ কলা আর ভবিষ্যতে ক্ষমতায় আনার লোভ দেখিয়ে বা ক্ষমতায় আনার কৃতজ্ঞতা স্বরূপ ভারতঃ বাংলাদেশ -৭৫:২৫(আসলে ৭৫ :১৫) শতাংশে এই সরকারকে দিয়ে ১৫ বছরের জন্য চুক্তি করিয়ে নিচ্ছে। আমাদের কথাঃ দাদাবাবুরা বলেছেন, তিস্তা নদীর উপর নির্ভরশীল জমি ও জনসংখ্যার ভিত্তিতে দু’দেশের মধ্যে পানি ভাগাভাগি করা হয়েছে। সে হিসাবেও আমরা কোন ভাবেই ১৫ শতাংশ পাই না। আমাদের দেশে নদীর ১/৩ ভাগ অংশ রয়েছে তাছাড়া আমাদের জনসংখ্যার ঘনত্ব অনেক বেশী। সে হিসাবে আমরা কম করে হলেও নদীর স্বাভাবিক প্রবাহের জন্য ১০% ছাড়াই আরও ৩০% পানি পাবো।

দাদাবাবুরা আমাদের বন্ধু দেশ ভাবলে এই ছাড় দিতেই পারে। আর বন্ধু দেশ না ভাবলেও আমরা কমপক্ষে ২৫% পানি পাবো(ওই ১০% ছাড়াই)। তাহলে চুক্তিতে অবশ্যই এর ব্যাপারে স্পষ্ট উল্লেখ থাকতে হবে, নদীর স্বাভাবিক প্রবাহের জন্য ১০% পানি ছেড়ে দিয়ে বাকি পানি ভারত ৭৫ শতাংশ আর বাংলাদেশ ২৫ শতাংশ পাবে। এর হেড় ফের হলে বাংলাদেশকে চরম কঠিন পরিনতি মেনে নিতে হবে। আর এর জন্য এ দেশের মানুষ কখনো আ লীগ কে ক্ষমা করতে পারবে না।

এক গঙ্গা চুক্তির রেশ এখনো দগদগে ক্ষত হয়ে রয়েছে আমাদের হৃদয়ে। তার মাঝে আবার অন্যায্য তিস্তা চুক্তি “আমাদের মরার উপর খাড়ার ঘা” হয়ে যেন না আসে। আবার দেখুন পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস দলীয় সংসদ সদস্য আবু হাশেম খান চৌধুরী আর আমাদের প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাদের কথার মধ্যে অনেক তফাৎ। কার কথা সত্য বলে ধরে নেবো?? এবার আসি কেন ভারতের কথার প্রতিবাদ আমরা করতে পারি না?? আ.লীগ নেতা ওবায়দুল কাদের গতকাল সাংবাদিকদের বলেন,”মনমোহন সিং যদি লস্কর-ই-তাইয়েবার সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারেন, তাহলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী দলের নেতা খালেদা জিয়ার একসঙ্গে বসতে অসুবিধা কোথায়?” আমাদেরও প্রশ্ন অসুবিধা কোথায়? ইউরোপ আমেরিকা বা ইন্ডিয়াতেও যে কোন জাতিয় ইস্যুতে সরকারি দল- বিরোধীদল এক সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু খালেদা ক্ষমতায় থাকার সময় যেমন এর নজির দেখি নাই, এখন আবার হাসিনা যখন ক্ষমতায় নিচ্ছেন ট্রানজিট, নদী নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর দীর্ঘমেয়াদি সব সিদ্ধান্ত তখনো দেখছিনা দুই দলের সম্মিলিত কোন সিদ্ধান্ত।

মূলত রাজনৈতিক অনৈক্যকেই দাদাবাবুরা ব্যবহার করছেন। আর বিএনপি যেন বিরধিতার জন্যই বিরোধীতা করছে। জনগণকে কোন তথ্য-উপাত্ত দিয়ে বুঝাচ্ছেনা। তার উপর মনমোহনের এই সফরকে স্বাগত জানিয়েছে। তাহলে কি বিএনপি জাতিয় সার্থ থেকে পিছিয়ে এসেছে।

আচ্ছা বাদ দিলাম বড় দুই রাজনৈতিক দলের কথা। তারা না হয় স্বার্থের পিছনে ছুটেন কিন্তু যে সব সুশীল সমাজের লোকজন নদী বাচাও, পরিবেশ বাচাও, দেশ বাচাও আন্দোলন করে তারা আজ কোথায়?তারা আজ বয়লারের মুরগির মতো ঝিমায় কেন? বাম দল গুলো নাকি কায়েমি স্বার্থের বিরুদ্ধে রাজনীতি করে। কই দেখছি নাতো মেনন সাহেবদের কোন প্রতিবাদ। নাকি নৌকা মার্কায় এমপি হয়ে আদর্শটাকেও বিকিয়ে দিয়েছেন? আসলে বুঝলেন ভাই, একটা কথা আছে না, “প্রত্যেকে প্রত্যেকের হাতে সাড়ে ৩হাত”। সবাই নিজেদের বাঁচাতেই রাজনীতি করে।

নিজেদের জন্যই করে। আমার আপনার বা দেশের কথা যারা ভাবে তারা রাজনীতি করতে পারে না। সোহেল তাজ তার বাস্তব উদাহরন। অন্য আর সবার মতো আমরাও চাই আমাদের সরকার দেশের স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রেখে সকল চুক্তি সাইন করবে। আমরাও আশা রাখি তারা পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করতে পারবে।

নতুবা কোন প্রয়োজন নাই এই চুক্তির, এ চুক্তির ফলে আমরা এখন যে পরিমান পানি পাচ্ছি হয়তো ভবিষ্যতে তাও পাবো না। আমরা কারো বিপক্ষে না, আমরা জনগণের পক্ষে। জনগন ও সরকারকে একটু সচেতন করার একটু ব্যার্থ প্রয়াস মাত্র। বিরোধীদের বলছিঃ অনেকে বলবে ভারত তো আগে পানি দিতই না। এখন তো তাও দিতে রাজি হইছে।

না দিলে আমরা কি করতাম?? আপনার কথা অনেক যুক্তিযুক্ত। কিন্তু একবার ভেবে দেখুন এ কথার মাধ্যমে কি আপনার হীনমন্যতা ফুটে উঠলো না?? পরোক্ষ ভাবে কি ভারতের দাবিকেই সমর্থন করলেন না?? ভারতের অন্যায় দাবীর প্রতি সমর্থন দিলেন না?? কেন দিতে রাজি হবে না?? আমাদের হাতে কি অস্ত্র কম আছে?? অনুপ চেটিয়া হাতে আছে, হাতে আছে ভারতের বিশাল বাজার। আরবরা দেশের স্বার্থের দিকে তাকিয়ে তাদের তেলকে অস্ত্র হিসাবে ব্যাবহার করে আমেরিকার কাছ থেকে অনেক কিছু বাগিয়ে নিয়েছে। তাহলে আমরা কেন আমাদের বাজারকে অস্ত্র বানাতে পারবো না?? আর এখনকার এই ১৫% পানি যে আপনি চুক্তি হলেই দিবে তারই বা নিশ্চয়তা কি?? গঙ্গা চুক্তি কি আমাদের কোন শিক্ষাই দেয় নাই? শুরু করেছিলাম প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান ও গহর রিজভির কথা দিয়ে। শেষ ও করছি তাদের কথা দিয়েই।

ভারত থেকে ফিরে ড. রহমান বলেন যে তিস্তা নদীর পানি ভাগাভাগির ফর্মূলাটি বাংলাদেশের জন্যে লাভজনক হবে বলেই তাঁরা এতে রাজী হয়েছেন এবং এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্বাক্ষরিত গঙ্গা নদীর পানি বন্টন চুক্তির বিষয়টি মাথায় রাখা হয়েছে। “মানুষের কল্যাণের বিষয়টি দেখতে হবে। কতটুকু দিলে কত মানুষের কল্যাণ হয়, তাও দেখতে হবে। “ আপনারা দাদাদের কল্যাণ দেখার জন্যই কি তাহলে দেশের মানুষের টাকা খরচ করে দিল্লি গেছিলেন?? নাকি দাদাদের কল্যাণের পাশাপাশি নিজেদেরও কিছু কল্যাণ সাধন করতে পারলেন?? তিস্তা এখন। সামনে গড়াগড়ি করার জন্য প্রস্তুত হোন ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.