কিচ কিচ কুচ কুচ কাচ কাচ কোচ কোচ!!! ভার্সিটিতে উঠেই কেন যেন অনেক ছেলেই প্রেমে পড়ে যায়। শুধু এক না, একাধিক মেয়ের প্রেমেও পড়ে যায় কেউ কেউ। কিন্তু তাদের প্রেমের পরিণতি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সুখের হয় না।
বিশেষ করে প্রেমিক ছেলেটি অথবা প্রেমিকা মেয়েটি যখন বাবা মায়ের সামনে কাঁচুমাচু হয়ে দাঁড়িয়ে বলে যে আমি ওকেই বিয়ে করব, তখন দুনিয়ার প্রায় সব বাবা মা-ই খেপে ওঠেন। ছেলেমেয়েদের পছন্দের বিপরীতে সবসময়ই তাদের কোন না কোন যুক্তি প্রস্তুত করা থাকে।
কি একটা অজ্ঞাত কারণে প্রথম চান্সেই তারা ছেলেমেয়েদের পছন্দকে বাতিল করে দেন।
হয়তো প্রেমিক খুবই ভালো একজন মানুষ, হয়তো তার ভবিষ্যতও অনেক উজ্জ্বল, কিন্তু মেয়ে যখন বাবা মায়ের কাছে ভয়ে ভয়ে তাকে উপস্থাপন করে, তখন প্রথমবারেই কেন যেন বাবা মা মানতে চান না। তাদের মধ্যে হয়তো এরকম কিছু মেন্টালিটি কাজ করে, যেমন, “মেয়ের সাহস তো কম না, প্রেম করে! এত বড় সাহস!!” বা “মেয়ের প্রস্তাব মেনে নিলে মানসম্মান সব ধুলায় মিশে যাবে! স্ট্যাটাস হয়ে যাবে পাঙ্কচার!!” ইত্যাদি ইত্যাদি।
তো আমি আজ প্রেম টেমের পরিণতি নিয়ে গবেষণা করতে আসি নি, আমি সচরাচর যা করি আজও তাই করব। হ্যাঁ আপনারা ঠিক ধরেছেন, আমি আজ আরেকটি (হয়তো বোরিং) গল্প বলব।
আমি কিন্তু আগে থেকে বলে রাখছি, আমার গল্পের একটা হ্যাপি এন্ডিং আছে। সুতরাং, গল্পটা শেষ করে আপনার মন বিষণ্ণতায় ভরে থাকবে না, চোখে জমবে না শ্রাবণের জল, নায়িকা বা নায়কের পরিণতিতে অশ্রুসিক্ত হবে না আপনার লোচন, বরং আপনি হাসবেন, এক আশ্চর্য ভালোলাগায় ভরে থাকবে আপনার মন। অবশ্য যা লিখতে চাচ্ছি তা যদি লিখতে পারি আর কি।
আমার গল্পের নায়কের নাম সাজেদ। নায়িকার নাম দিলাম না।
আচ্ছা, একটা আনকমন নাম দেয়া যাক। ধরি, তার নাম ক।
সাজেদ আর আমি একই মেডিকেল কলেজে পড়তাম। আমরা বেশ ভালো বন্ধু ছিলাম।
প্রথম দুই বছরে আমরা একাধিক মেয়ের প্রেমে পড়লাম।
আবার ভুলেও গেলাম। কিন্তু সাজেদ এক জায়গায় গিয়ে ধরা খেয়ে গেল। ওর প্রস্তাবে এক মেয়ে সাড়া দিয়ে বসল। আগেই বলেছি, তার নাম ক।
ওরা বেশ সফলভাবেই কাপল হিসেবে মেডিকেলের বাকি তিন বছর পার করে দিল।
তখনও কেউই বাসায় তাদের সম্পর্কের ব্যাপারে জানায় নি।
এরপর যা হয়, ক এর বাবা মা ক এর জন্য পাত্র দেখা শুরু করলেন। তাদের বড় মেয়ে, দেশের শীর্ষস্থানীয় মেডিকেল থেকে পাশ করা, তাকে কি আর যেন তেন হাতে সমর্পণ করা মানায়? তাদের ডিম্যান্ড, হ্যাঁ, পাত্র অনেক অ-নেক বড় ডাক্তার হতে হবে, বাড়ি গাড়ি কমপক্ষে এক দুইটা তো থাকতেই হবে, শ্বশুরকেও হতে হবে সেরকম মালদার আর স্ট্যাটাসধারী। (ফেসবুক স্ট্যাটাস এ হবে না, আসল স্ট্যাটাস লাগবে। )
এই খবর ক জানাল সাজেদকে।
সচরাচর যা হয়, এ খবর শুনে সাজেদ মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ল।
“অ-নেক বড় ডাক্তার? বাড়ি গাড়ি? মালদার বাপ? আমার তো কিছুই নাই। এফ সি পি এস করতেই তো আরও চার পাঁচ বছর লেগে যাবে। তারপর না হয় টাকা হাতে আসা শুরু করবে...”
ক তাকে সান্ত্বনা দিল, সমস্যা নেই। আমি তোমার কথা বাসায় বলছি, দাঁড়াও।
সুতরাং, সাজেদকেও তার বাসায় জানাতে হবে যে সে একজনকে বিয়ে করতে চায়। শুধু তাই বললে হবে না, বলতে হবে যে সে এখনই বিয়ে করতে চায়। শুধু বললেও আবার হবে না, সবাইকে রাজিও করাতে হবে।
তো আসুন, প্রিয় পাঠক, আমরা দেখি সাজেদ কি করে তার বাসাকে ম্যানেজ করল।
***
সাজেদ একদিনের জন্য খাওয়াদাওয়া ছেড়ে দিল।
সেদিন সে ব্রেকফাস্ট আর লাঞ্চ করল না।
তার মা ব্যাপারটা লক্ষ্য করে বললেন, কি হয়েছে তোর?
সাজেদ কিছুই বলল না। মা কিছু কিছু আঁচ করলেন ঘটনা।
সাজেদকে সেদিন কিছুতেই খাওয়ানো গেল না। সে আবার কোন কথাও বলছে না।
সাজেদের মহা রাগী বাবা, যিনি আবার ঘোষণা দিয়েছিলেন যে ছেলে প্রেম করলে ঠ্যাং ভেঙ্গে বাসা থেকে বের করে দেবেন, তিনি রাতে বাসায় এসে ঘটনা শুনলেন। তারপর সোজা ছেলের ঘাড় ধরে জিজ্ঞেস করলেন, কি হয়েছে তোর? ঢং করছিস কেন?
সাজেদ বলল, আব্বা আমি একটা মেয়েকে পছন্দ করি। আমি ওকে বিয়ে করব।
কি বললি হারামজাদা?
আমি ওকে বিয়ে করব।
ব্যস, সাজেদের বাবা তো মহা খেপে গেলেন।
কি, এত বড় সাহস? তার ছেলে হয়ে কোথাকার কার সাথে কি না কি করে এসে এখন বলছে বিয়ে করবে! সাহস তো কম না!!
সাজেদের বাবা বললেন, মেয়েটা কে?
সাজেদ বলল, আমার হবু বউ।
সাজেদের বাবার চেহারা দেখে মনে হল ছেলেকে তিনি এখনই সালাদ বানিয়ে কচকচ করে খেয়ে ফেলবেন।
তা তো বুঝলাম, কিন্তু পড়ে কোথায়? নাকি পড়াশোনা করে না?
নর্থ সাউথে পড়ে। থার্ড ইয়ার।
সাজেদের বাবা ভয়ানক খেপে গেলেন।
প্রাইভেট ভার্সিটির মেয়েদের তিনি সবসময়ই খারাপ দৃষ্টিতে দেখে এসেছেন।
তিনি বলে দিলেন, তুই যদি আমার ছেলে হোস তাহলে ঐ মেয়ের নাম আর কোনদিন মুখে আনবি না। আর না হলে এখনই বাসা থেকে দূর হ।
সাজেদ বলল, আমি ঐ মেয়েকেই বিয়ে করব।
সাজেদের বাবা তাকে একটা কষে থাপ্পড় দিলেন।
***
মায়েদের মন আল্লাহ কি দিয়ে গড়েছেন তিনিই জানেন। নাহলে মায়েরা এত স্যাক্রিফাইস কিভাবে করেন? এত দিক কিভাবে সামলান? পরিবারের এত লোককে কিভাবে সন্তুষ্ট রাখেন?
সাজেদের মা সাজেদকে চুপি চুপি বললেন, মেয়েটার ছবি দেখা।
সাজেদ ইন্টারনেট থেকে পাওয়া একটা অসুন্দর মেয়ের ছবি মায়ের হাতে দিয়ে দিল। ছবিতে একটা দাঁত উঁচু মেয়ে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে দাঁড়িয়ে আছে।
সাজেদের মা মনে খুবই কষ্ট পেলেন।
ছি ছি, এত ভালো ছেলেটা শেষ পর্যন্ত এরই পাল্লায় পড়ল?
সাজেদের মা আকারে ইঙ্গিতে তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তাদের মধ্যে কিছু হয়ে গেছে কি না।
সাজেদ মাথা নাড়াল। মানে, হ্যাঁ হয়ে গেছে।
সাজেদের মা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। ছেলে তো কাজ করে ফেলেছে।
এখন তো বিয়ে না করেও উপায় নেই।
ওদিকে সাজেদের বাবা সাজেদকে চব্বিশতম বারের মত বাসা থেকে বেরিয়ে যেতে বললেন। সাজেদ সেটা ডাইরিতে নোট করে রাখল। পঁচিশ বার বললে বাসা থেকে বের হতে বলার সিলভার জুবিলি পূর্ণ হবে।
একদিন সাজেদ বলল, মা আমি ওকে বাসায় নিয়ে আসতে চাই।
মা বললেন, বাবা তুমি যখন ঘটনা ঘটিয়েই ফেলেছ তখন তো আমাদের আর কিছু করার নেই। যাও নিয়ে এস।
তো একদিন ক কে হাসিমুখে সাজেদদের গেস্টরুমে বসে থাকতে দেখা গেল। সাজেদ মা কে বলল, মা, এটা হচ্ছে আমার হবু বউয়ের পরিচিত বড় আপু। আমাদের মেডিকেল থেকে পাশ করেছে।
এখন আমাদের সাথে ইন্টার্নি করছে।
সাজেদের মা মেয়ের ভয়ঙ্কর সুন্দর চেহারা দেখে বড় একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। তার ছেলের কি মাথা খারাপ? নিজের মেডিকেলে এত ভালো ভালো মেয়ে থাকতে তাকে বাইরের কারও সাথে কিছু করতে হল কেন?
সাজেদকে ভিতরে ডেকে নিয়ে তিনি বললেন, তোর যে কি মতিভ্রম হয়েছে আমি জানি না বাপু। তুই কি একটা ডাক্তার মেয়েকে পছন্দ করতে পারতি না? তোর জুনিয়র না হোক, ক্লাসেও তো অনেক ফ্রেন্ড থাকে।
সাজেদ বলল, ফ্রেন্ড? ফ্রেন্ডকে বিয়ে করব? কেন তোমরাই তো বলতে কোন ক্লাসমেটের দিকে নজর দেয়া যাবে না, প্রেম করলে ঠ্যাং ভেঙ্গে দেয়া হবে...বলতে না? এইজন্যই তো জুনিয়র মেয়ে পছন্দ করলাম।
সাজেদের মা আরেকটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন। তা তো বলতাম...কিন্তু তুই এই কাহিনী করবি জানলে...আরেকটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন তিনি।
গেস্টরুমে গিয়ে তিনি ক কে প্রশ্ন করলেন, তোমার কি বিয়ে হয়েছে, মা?
ক হেসে বলল, না আন্টি। আমি আমার এক ডাক্তার ক্লাসমেটকে পছন্দ করি বুঝলেন, কিন্তু ওর ফ্যামিলি মেনে নিতে চাচ্ছে না।
সাজেদের মা বললেন, কেন?
ক বলল, আমার নাকি চেহারা খারাপ।
ওনাদের ছেলেকে পছন্দ করে নাকি আমি খারাপ করে দিয়েছি।
সাজেদের মা বিস্ময়ে ও সমবেদনায় চুকচুক জাতীয় একটা শব্দ করলেন। মনে মনে বললেন, মা তুমি এত সুন্দর অথচ তোমার চেহারা বলেছে খারাপ?...হায় হায়, তাহলে ভালো চেহারার মেয়ে দুনিয়ায় আর কোথায় আছে?
ক বলল, আন্টি আপনি একটু ওর বাবা মাকে বলে দেখুন না যদি কিছু হয়। বলুন আন্টি আমি কি দেখতে এতই খারাপ? আমি কি এমন খারাপ কাজ করেছি আমার ক্লাসের একজনকে পছন্দ করে?
সাজেদের মা বললেন, তুমি কোন ভুল কর নি, মা। ভুল করছেন ওরা।
তোমার মত লক্ষ্মী মেয়ে আর কোথায় পাবে...আবার একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলেন তিনি।
আপনার ছেলেকে ব্যাচের একটা মেয়ে পছন্দ করত...হঠাৎ করেই বলা শুরু করে ক, কিন্তু নর্থ সাউথের মেয়েটার সাথে ততদিনে আপনার ছেলের সম্পর্ক হয়ে গেছে...আমি ওদের রিলেশনটা সাপোর্ট করতাম না...ডাক্তারের সাথে কি ডাক্তার না হলে মানায় বলুন?...আপনাদের ছেলে অনেক ব্রিলিয়ান্ট, ও অনেক ভালো মেয়ে পেতে পারত...ও যে কেন এমন করল...
এবার সুযোগ পেয়ে যান সাজেদের মা। প্রকাশ করতে থাকেন মনে জমে থাকে ক্ষোভ। হ্যাঁ মা, আমিও বুঝলাম না আমার এত ভালো ছেলেটার এমন মতিভ্রম কেন হল। ও তো তোমাদের মেডিকেল থেকেই কাউকে পছন্দ করতে পারত...কোন বান্ধবীকেও...নাহ, আমি ওকে পেটে ধরেছি মানুষ করেছি, আমার বিশ্বাস হচ্ছে না ও এ কাজ করেছে...
তখনই ঘরে প্রবেশ করেন সাজেদের বাবা।
উনি তো কিছুই জানেন না। উনি ভাবলেন হয়তো এটাই তার ছেলের পছন্দের মেয়ে।
মেয়ের চেহারা ও পোশাক আশাক দেখে তার সব রাগ ঝরে পড়ে গেল। তিনি নরম স্বরে জিজ্ঞেস করলেন, মা তুমি কোথায় পড়?
ক উত্তর দিল, আঙ্কেল আমি আপনার ছেলের সাথেই পড়াশোনা করেছি। এখন ওদের সাথে ইন্টার্নি করছি।
সাজেদের বাবার কেন যেন মনেই পড়ল না যে ছেলে বলেছিল সে প্রাইভেটের একটা মেয়েকে পছন্দ করে। সাজেদের বাবা ভেবে বসলেন এটাই তার ছেলের হবু বউ। তিনি সেভাবেই মেয়ের সাথে কথা বলতে লাগলেন, তাদের বাসায় কে কে আছে...কয় ভাই বোন...বাবা মা কি করেন...ইত্যাদি ইত্যাদি।
সাজেদের মা ব্যাপারটা বুঝতে পেরে তাকে ডেকে বাইরে নিয়ে গেলেন। বললেন, এইসব কি করেন? এই পরীটা তো আপনার ছেলের পছন্দ না, তার পছন্দ পরীর কালা বান্ধবীকে।
সাজেদের বাবা আফসোস করেন, ইস, এমন একটা মেয়েকে যদি পুত্রবধূ হিসেবে পাওয়া যেত...নাহ, ছেলেটার মনে প্রথম থেকেই প্রেম বিষয়ে ভয় দেবার ফলে এই সমস্যা হয়েছে...ক্লাসমেটের দিকেও নজর না দেবার জন্য তিনি একাধিকবার ছেলেকে ধমক দিয়েছেন...হারামজাদা তোকে তো ঠ্যাং ভাঙ্গার কথা এমনি এমনি বলেছিলাম...
সাজেদের মা-ও আফসোস করেন। ইস, কি সুন্দর হুরের মতন চেহারা, কি মিষ্টি করে হাসে, দেখলে প্রাণটা জুড়িয়ে যায়। এত ভদ্র, এত সুন্দর করে কথা বলে...ইস, আমার ছেলেটা কি করল রে...ইস এই মেয়েটাকে যদি ছেলের বউ হিসাবে পাইতাম...
তখন দৃশ্যপটে প্রবেশ করল সাজেদ। সাজেদের বাবা তার দিকে না তাকিয়েই বললেন, এই হারামজাদা...এই হারামজাদা আমার পোলা আমার বিশ্বাসই হচ্ছে না...
সাজেদ মা কে বলল, মা, ও এসেছে।
তার বাবা বললেন, কারে ধরে এনেছে হারামজাদা আল্লাহই জানে।
সাজেদের মা বললেন, আহ থামেন তো।
সাজেদ বলল, আব্বা আপনি আসবেন না?
সাজেদের বাবা হাল ছেড়ে দেবার একটা ভঙ্গি করলেন। কি আর করার? ছেলে বড় হয়েছে, ডাক্তার হয়ে গেছে প্রায়, এখন তো আর তাকে কোন কাজে বাঁধা দেয়া মানায় না। ছেলের যদি পরী পছন্দ না হয়ে কোন কালা ভুতকে পছন্দ হয় তাহলে আর কিইবা করার আছে?
তারা তিনজন গেস্টরুমে ঢুকলেন। কিন্তু ওখানে বসে ছিল শুধু ক।
তোর হবু বউ কোথায়? সাজেদের বাবা প্রশ্ন করলেন।
ঐ মেয়েটা একটু আগে আমাকে ফোন করে বলেছে সে আর আপনার ছেলেকে পছন্দ করে না...ঢং করে বলতে লাগল ক, আর বলেছে আমি যেন তাকে বিয়ে করে ফেলি...আমাকে কি আপনার পুত্রবধূ করে নেবেন?
সাজেদের মার উত্তেজনায় দম আটকে গেল। ওরই মধ্যে উনি কেমন করে যেন বললেন, তুমি না তোমার কোন ডাক্তার বন্ধুকে পছন্দ কর?...
ক সাজেদের দিকে তাকিয়ে বলল, করি তো। ঐ তো, ঐ যে ভ্যাবলাকান্তের মত দাঁড়িয়ে আছে, ওকে করি।
সাজেদের মা সাজেদের দিকে তাকালেন।
সাজেদ ক র দিকে তাকিয়ে নিঃশব্দে বলল, তোমার অভিনয় দারুণ হয়েছে। এ জন্যেই তো তোমাকে এত ভালবাসি।
সাজেদের মা আনন্দের আতিশয্যে সোজা দৌড়ে এসে ক কে জড়িয়ে ধরলেন।
সাজেদের বাবাও আনন্দের আতিশয্যে কি করবেন বুঝতে না পেরে ছেলেকে জড়িয়ে ধরলেন।
সাজেদ তখন ভাবল, নাহ, জীবনে প্রথম আমার কোন কাজে বাবা খুশি হলেন।
নাহ, বাবা লোকটা আসলে ভালোই। সে-ও বাবাকে জড়িয়ে ধরল।
দুঃখময় ক্লেদাক্ত পৃথিবীতে আরও একটি স্বর্গ রচিত হল।
***
আমার গল্প শেষ।
এখন যদি অতি উৎসাহী কোন পাঠক প্রশ্ন করেন যে ক এর বাসা কিভাবে ম্যানেজ হয়েছিল, সেটার উত্তর কিন্তু আমি দিতে পারব না।
সেটা নিয়ে আমার ও সাজেদের কোন কমন বান্ধবী হয়তো কিছু লিখতে পারবেন। যেহেতু মেয়েদের সাইকোলজি উনারা নিজেরাই ভালো বোঝেন।
আমি খালি এটুকুই বলতে পারি, এই পদ্ধতিতে বাসা ম্যানেজ করতে গিয়ে কেউ যদি ব্যর্থ হন, তাহলে তার দোষ মোটেও আমার না। কিন্তু যদি কারও বাসা ম্যানেজ হয়ে যায়, এবং বিয়েটাও হয়ে যায়, তাহলে কিন্তু আমাকে অবশ্যই তাদের বিয়েতে দাওয়াত করতে হবে।
দাওয়াত পাবার প্রত্যাশায়, শুভ নববর্ষ।
HAPPY NEW YEAR।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।