আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ডিজিটাল তামশাঃ পারসোনায় নিষিদ্ধ স্থানে থাকে কিন্তু ঢাবির ক্যাফেটরিয়ায় ক্যামেরা নেই!

আমি চাই শক্তিশালী স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ বাংলায় একটা কথা আছে খায়া দায়া কাম নাই, আকামের গোসাই! উন্নত বিশ্বতো বটেই উন্নয়শীল দেশগুলোতেও সিসিটিভি ক্যামেরা আর কোন র্দূলভ বিষয় নয়। এয়ারপোর্ট হতে ব্যাংক, শপিংমল, হাসপাতাল, মিল, ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান-অফিস, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে ছোটখাট মুদি দোকান গুলোতেও একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো থাকে। ফলে অনেকেই গভীর রাত পর্যন্ত তাদের দোকান খুলে রাখতে পারে। ফলে ঐ সমস্ত স্থানে ডাকাতি, চুরি ও ছিনতাই বহুলাংশে কমে গেছে। আমাদের দেশেও সিসিটিভি খুব নতুন কিছু নয়।

বিগত ১০-১৫ বছর ধরেই অনেক জায়গাতেই ব্যাবহার হয়ে আসছে। আর বিগত ৪-৫ বছরে ক্যামেরা প্রযুক্তিগত ভাবে শক্তিশালী ও আকারে ছোট হয়ে আসছে। ফলে ক্যামেরা উচুস্থান বা সুবিধাজনক স্থানে স্থাপন করা সহজ হচ্ছে। এমনকি ভিডিও ডাটা বিনা তারে তথা ওয়্যারলেসের মাধ্যমেও রেকর্ডার কিংবা ডিজিটাল রেকর্ডারে পৌছানো সম্ভব! http://www.youtube.com/watch?v=jSASDG9bRbA আরও মজার কথা হল ইন্টারনেটে যদি আপনার ফিক্সড আইপি থাকে তাহলে এই সিষ্টেমে আপনি পৃথিবীর যেখানেই যান আপনার বাসা, ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানকে কাজের সময় চেক করতে পারেন সব কিছু ঠিক আছে কিনা! http://www.youtube.com/watch?v=9y1BY6vE4Vs তাই বলি বর্তমান যূগে পৃথিবী প্রযুক্তিগত ভাবে কত এগিয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের দেশে অন্য সব কিছুর মতই প্রযুক্তির মাধ্যমে কিভাবে নোংরামী করা যায় তাতে অনেকেই সিদ্ধ হস্ত! এই বছর ২০১১ সালে পারসোনার ঘটনা নিয়ে যে কেলেংকারী হল তা জাতি হিসেবে আমাদের জন্য অত্যন্ত র্দূভাগ্যজনক।

পারসোনার স্বত্বাধিকারী কানিজ আলমাস এত বিত্তশালী ও সমাজে মর্যদাশীল ভিআইপি বলেই আমরা জানতাম। কিন্তু কথায় বলে শকুন যতই আকাশের উপর দিকে উড়াল দিক, তার নজর সব সময় মাটির মরা প্রাণীর উপর থাকে! তারই প্রতিষ্ঠানে মহিলারা যেখানে তাদের বস্ত্র বদলান সেখানেই কিনা গোপন ক্যামেরা! কা. আলমাস এতই প্রভাবশালী তার বিরুদ্ধে মামলা করাতো দূর পুলিশ এখন পর্যন্ত তদন্তই করতে পারে নি! Click This Link এটা দ্বারা আসলে বোঝা যায় আমাদের মধ্যে অনেকেরই কোন ভাল কিছু করার চেয়ে অসততা কিভাবে করবে সেই শয়তানি চিন্তায় মশগুল থাকে। ঠিক সেই রকমই ঘটল এই ডিসেম্বর মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটরিয়াতে। যেখানে আমন্ত্রণ পেয়ে জাপানের একজন বাংলা ভাষা প্রেমী অধ্যাপক তার ল্যাপটপ, ২ হাজার মার্কিন ডলার সহ আরো কিছু মূল্যবান জিনিস হারান। জাপানী ভদ্রলোক ভাবতেও পারেন নি যে কয়েক মিনিটের জন্য প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাবির ক্যাফেটরিয়ার টেবিলে তার জিনিসপত্র রেখে খাওয়া আনতে গেলে এ রকম র্দূভোগের শিকার হবেন।

সে শুধু আকুতি যে আমার অর্থ, ল্যাপটপ কিছুই চাই না স্রেফ তার হার্ডডিক্সটা ফিরত চাই। তো যাই হৌক এ নিয়ে দেশের জাতীয় দৈনিক গুলো সহ বিভিন্ন সাংবাদিক কলামিষ্ট ও সুশীল শোরগোল তুললেন যদিও পারসোনা ইস্যুতে তারা নিশ্চুপ ছিলেন। আর সরকারের কে যেন বলল যে ঐ জাপানী অধ্যাপক কেন তার মূল্যবান জিনিস রেখে খাওয়া আনতে গেলেন! মানে সব দোষ এখন ঐ জাপানী ভদ্রলোকের। এরই নাম একেতো চুরি তার উপর শিনাজুড়ি! তো ঢাবিতো আর সদরঘাট, গুলিস্তানের প্রকাশ্য জায়গা নয় যেখানে এ ধরণের চুরি, পকেটমার হবে। গোটা ঢাবিরই একটা নিরাপত্তা বলয় থাকা উচিত।

যেখানে সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ বলে গলাবাজি ও শ্লোগান দিচ্ছে সেখানে ঢাবির একাডেমিক, ক্যাফেটরিয়া সহ বিশেষ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে কেন সিসিটিভি ক্যামেরা থাকবে না? কি ছাত্র কি বহিরাগত-অতিথি যাই হৌক এখানে সবার গতিবিধি ও কর্মতৎপড়তার রেকর্ড কাম্য। এ রকম বাংলাদেশের বহু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও অন্যান্য ক্ষেত্র আছে যেখানে সিসিটিভি স্থাপন জরুরী। তাতে সাধারণ মানুষ চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই সহ দূর্ভোগ হতে রেহাই পাবে। কিন্তু এই ঘটনার পরও কি সরকার ও তথাকথিত সুশীল সমাজ কেউ বলছে না যে বিভিন্ন স্থানে সিসিটিভি সহ প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হৌক। শুধু জাপানী ভদ্রলোক বলে কথা নয় রাষ্ট্রের সকল সাধারণ মানুষের জন্য নিরাপত্তা হল সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার।

কিন্তু বর্তমান সরকারের এই বিষয়ে কোন গুরুত্ব নেই। উদাহরণ স্বরুপ ২০১০ চীনের গুয়াংঝু এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশের একজন এক চীনার ল্যাপটপ চুরি করেছিল। পরে সে সিসিটিভিতেই সনাক্ত হয়। জানা যায় ঐ ব্যাক্তি এক সময় ছাত্রলীগ করতো। সরকারের বিশেষ সুবিধায় সে চীন এশিয়ানগামী বাংলাদেশ দলে অন্তর্ভূক্ত হয়।

সে ঐ ঘটনায় ল্যাপটপ ফিরত দিয়ে পার পায় কিন্তু এখনও সে সরকারের বিশেষ সুবিধাতে রাষ্ট্রীয় কর্মকান্ডে সক্রিয়! তারমানে দাড়াল বিদেশে চুরি করেও যারা শাস্তির বদলে বহাল তবিয়তে থাকে তারা কোন দুঃখে দেশে কোন বিদেশীর মূল্যবান জিনিস খোয়া গেলে উদ্ধারতো দূর সান্তনা দিবে? আর বাংলাদেশী সাধারণ হলেতো কথাই নেই! আনিসুল হক অথবা অন্য কোন সুশীলতো দূর পিত্রকাতেও ভিক্টিমের খবর আসবে না। চোর ও অপরাধী সব দেশেই কম বেশী আছে তাই বলে কি সতর্ক হওয়া, প্রযুক্তি ব্যাবহার ও প্রতিরোধ কি হচ্ছে না? বাংলাদেশে বর্তমানে কি সরকার কি সুশীল সমাজ ডিজিটাল সিষ্টেমে বিভিন্ন সমস্যার যথাযথ বা পূর্ণ সমাধানের পরিবর্তে কিভাবে ব্লেম গেম ও বয়ান-বিবৃতি দিবে সেটাতেই অনেক বেশী আগ্রহী। তার মানে সমস্যা জিইয়ে থাকুক এবং ডিজিটাল তামশা চলুক!  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.